রোগীর গায়ে অ্যালকোহল ঢালছেন থেরাপিস্ট। এরপর আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন। এভাবেই মারাত্মক চাপ, বদহজম, বন্ধ্যাত্ব, এমনকি ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হচ্ছে।
ভয়ঙ্কর হলেও সত্য, চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে এভাবেই শত শত বছর ধরে চিকিৎসা করা হচ্ছে। ‘ফায়ার থেরাপি’ নামে পরিচিত ওই পদ্ধতির যথার্থতা প্রচলিত চিকিৎসায় প্রমাণিত নয়। তবে অনেকেই এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করিয়ে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভের কথা জানিয়েছেন।
এ পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া জ্যাং ফেংগাও তো এটাকে মানব ইতিহাসের চতুর্থ বিপ্লব বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া এটা চীনা ও পশ্চিমা চিকিৎসা পদ্ধতিকে ছাড়িয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অস্ত্রোপচার এড়ানো যায় বলেও বেশ গর্বের সঙ্গেই বলেন তিনি।
এভাবে চিকিৎসা করতে ঘণ্টা প্রতি ৩০০ ইউয়ান (৪৮ ডলার) নেন জ্যাং। তিনি জানান, প্রথমে তিনি রোগীর পিঠে ভেষজ পেস্ট লাগান। এরপর ওই অংশ তোয়ালে দিয়ে ঢেকে তাতে পানি ঢালেন। তারপর ৯৫ শতাংশ অ্যালকোহল সমৃদ্ধ তরল ঘষে ঘষে লাগিয়ে দেন। এরপর জ্বালানো হয় আগুন।
জ্যাংয়ের কাছে চিকিৎসা নেওয়া লি’কে প্রথমে শান্তভাবে শোয়ানো হয়। এরপর সিগারেটের লাইটার দিয়ে আগুন জ্বালান জ্যাং। এ সময় লি’র মেরুদণ্ডের উপর দিয়ে কমলা ও নীল রঙের আগুনের শিখা প্রজ্জ্বলিত হতে থাকে।
৪৭ বছর বয়সী লি জানান, এতে কিছুটা গরম অনুভূত হলেও তা বেদনাদায়ক নয়, বরং আরামদায়ক। পাশাপাশি এ পদ্ধতিকে কার্যকর বলেও উল্লেখ করেন সম্প্রতি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে ভূগা লি।
এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা ব্যয় কম হওয়ায় অনেক চীনাই এভাবে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।
সম্প্রতি বিষয়টি চীনা গণমাধ্যমগুলোতে উঠে আসায় দেশটিতে এ নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
রোগীরা চিকিৎসা পদ্ধতিটিকে বেশ নিরাপদ হিসেবে উল্লেখ করলেও প্রচলিত ব্যবস্থার চিকিৎসকরা কিন্তু এটাকে বিপজ্জনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তবে জ্যাং দাবি করেছেন, সঠিকভাবে চিকিৎসা করলে এ পদ্ধতিতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম।