সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের রাডার ক্রয়ে দুর্নীতির মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য ২০ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত। মঙ্গলবার মামলাটি আদালতে উপস্থাপন করা হলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জহুরুল হক এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১১ জুন ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ আবদুর রশিদ মামলার যুক্তিতর্ক শুনতে অনীহা জানিয়ে অন্য আদালতে শুনানির জন্য বদলী করতে বলেন। এর প্রেক্ষিতে মামলাটি ফের ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়। আজ মামলাটি উপস্থাপন করা হলে বিচারক নিজেই যুক্তিকর্ত শুনবেন বলে এ দিন ধার্য করেন।
এদিন মামলার শুনানিতে এরশাদ আদালতে হাজির হননি। তার পক্ষে আইনজীবী হাজিরা দেন। বিমান বাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং সুলতান মাহমুদ আদালতে হাজির ছিলেন। অন্য আসামি একেএম মুসা শুরু থেকেই পলাতক।
এর আগে বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে চলতি বছরের গত ১৫ মে আত্মপক্ষ সমর্থন করে রাডার ক্রয়ে দুর্নীতির কথা অস্বীকার করেন এরশাদ। মামলার অপর দুই আসামি বিমান বাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং সুলতান মাহমুদও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালের ১২ আগষ্ট এরশাদসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মামলার সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিত ছিল। সাক্ষ্যগ্রহণের কোন বাঁধা না থাকলেও ২০০৯ পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলার বাদী আলী হায়দারকে আদালতে হাজির করেনি।
মামলা দায়েরের ১৮ বছর পর ২০১০ সালের ১৯ আগষ্ট বাদীর সাক্ষ্য শুরু হয়। প্রায় ১০টি ধার্য তারিখে বাদীর সাক্ষ্য গ্রহন হয়। ২০১২ সালের ১ মার্চ বাদীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়। বাদীর সাক্ষ্য গ্রহনের পর গত একবছরে তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়া অভিযোগপত্রভুক্ত ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করা হয়েছে। বিচার চলাকালে মোট ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাটি দায়েরের পর ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, তৎকালীন বিমান বাহিনী প্রধান সদর উদ্দিন আহমেদ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে বাহিনীর জন্য যুগোপযোগী রাডার ক্রয়ের আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানির নির্মিত অত্যাধুনিক একটি হাই পাওয়ার রাডার ও দু’টি লো লেভেল রাডার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
কিন্তু এরশাদসহ অপর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আর্থিক সুবিধা নিয়ে ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানির অত্যাধুনিক রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েষ্টিং কোম্পানির রাডার কেনেন।
এতে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।