ভারতের রাজনীতির করিডরে ঝড় তুলে দিয়েছেন ভারতের সাবেক কুটনীতিক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কে নটবর সিং। তিনি তার তার প্রকাশিতব্য আত্মজীবনীতে খোলামেলাভাবে এমন সব তথ্য প্রকাশ করেছেন যে সব তথ্য আগে কেউ জানতে পারেন নি। তেমনই একটি তথ্য হল ইরাকে আমেরিকার আগ্রাসনের প্রতিবাদে বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন সরকার সরাসরি ইরাকে সেনাবাহিনী পাঠাতে চেয়েছিল । যদিও শেষপর্যন্ত কংগ্রেসের প্রবল আপত্তিতে সেনা পাঠানোর মনোভাব ত্যাগ করতে হয়েছিল সরকারকে। নটবর সিং এই প্রসঙ্গে তার আত্মজীবনী ’ওয়ান লাইফ ইজ নট এনাফ’ গ্রন্থে লিখেছেন : ২০০৩ সালে আমেরিকানরা সিকিউরিটি কাউন্সিলকে এড়িয়ে গিয়ে ইরাকে আগ্রাসন চালায়। একটি ধর্মনিরপেক্ষ সমাজতান্ত্রিক জোটনিরপেক্ষ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দেয়। এই আগ্রাসনের অজুহাত হিসেবে বলা হয়েছিল সাদ্দাম হুসেইন গণহত্যাকারী মারণাস্ত্র লুকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু সেই ধরণের কোনও অস্ত্রই পাওয়া যায়নি। এনডিএ সরকার ইরাকে ভারতীয সেনা পাঠানোর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছিল। কংগ্রেস এর তীব্র প্রতিবাদ করেছিল। বলেছিল, রাষ্ট্রসংঘের অধীনে কাজ করতে না পারলে সেনা পাঠানো ঠিক হবে না। শেষপর্যন্ত অবশ্য সেনাবাহিনী পাঠানো হয় নি। ইরাকে আগ্রাসন নিয়ে ভারতের নীতি কি হবে তা নিয়ে ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিতর্ক হয়েছিল। একটি যৌথ বিবৃতি সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়েছিল। যুদ্ধ নিযে সংসদের সমালোচনামূলক মনোভাবই তুলে ধরা হয়েছিল। আমি রাজ্যসভায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের পোকায় খাওয়া জোটের ইরাক আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা করেছিলাম। ……২০০৪ সালের জুনে প্রেসিডেন্ট রিগানের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া অনুষ্ঠানে আমি ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলাম। অন্ত্যেষ্টির পরে মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব কলিন পাওয়েলের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছিল। তার পরেই ছিল যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন। ইরাকে ভারত সেনা পাঠাচ্ছে কিনা সেই সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তওে আমি বলেছিলাম যে, সিকিউরিটি কাউন্সিল বিষয়টি দেখছে। তাই আমাদের তাদের সিদ্ধান্ত জানার পরই ভেবে দেখব। দ্য প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার সাংবাদিক রিপোর্ট পাঠালেন যে, নটবর সিং ঘোষনা করেছেন, ভারত ইরাকে সেনা পাঠাবে। এরপরেই সংসদে সমালোচনার ঝড় ওঠে। যাদেরাামরা সেনা পাঠানো থেকে নিবৃত্তি করেছিলাম নেই এনডিএ থেকেই প্রত্যেকে আমার প্রবল সমালোচনা করেছিল।