১৯৯৮ সালে ফারুক ভুঁইয়া প্রযোজিত ধারাবাহিক নাটক ‘বেলা অবেলা’র মধ্য দিয়ে অভিনেত্রী রিচি সোলায়মানের মিডিয়ায় অভিষেক ঘটে। এরপর ‘নাবিলা চরিত’, ‘জোছনাকাল’, ‘বনলতা সেন’, ‘ময়ূর বাহন’, ‘নিশিথে’ ও ‘ত্যাগ’ নাটকে অভিনয় করে আলোচনার শীর্ষে চলে আসেন তিনি। ক্যারিয়ারের ১৬ বছরের পথচলায় এখনও ছুটছেন রিচি। তবে একটু দেখে, একটু বেছেই কাজ করছেন এখন। যার কারণে আগের তুলনায় এখন অভিনয়ে রিচিকে কিছুটা কম দেখা যাচ্ছে। তবে যেসব নাটকে তিনি অভিনয় করছেন তার অধিকাংশই তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। তার অভিনীত প্রতিটি নাটকেই রিচি প্রমাণ করছেন অভিনয়ের ক্ষেত্রে তিনি জাত শিল্পী। অন্যদিকে পরিচালকরাও আত্মবিশ্বাসের জায়গা থেকে তাকে কাস্ট করছেন। সমপ্রতি রিচি নতুন তিনটি ধারাবাহিক নাটকের কাজ হাতে নিয়েছেন। এগুলো হলো গোলাম সোহরাব দোদুলের ‘আনন্দময় আমোদপুর’, রুলীন রহমানের ‘মায়ার খেলা’ ও আলভী আহমেদের ‘শূন্য থেকে শুরু’। এ প্রসঙ্গে রিচি বলেন, একসঙ্গে তিনটি ধারাবাহিক নাটকের প্রস্তাব পেয়েছি। তাই সিডিউল মেলাতে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছি। প্রতিটি ধারাবাহিকের গল্পই চমৎকার। তাই একটু কষ্ট হলেও যথেষ্ট আন্তরিকতা নিয়ে কাজগুলো করছি। কাজের সুবিধার্থে রাজধানীর উত্তরাতেই থাকছেন রিচি। তিনি বলেন, নাটক আর একমাত্র ছেলে রাইয়ানকে নিয়ে এখন আমার ব্যস্ত সময় কাটছে। স্বামী রাশেক-উর-রহমান মালেক নিউ ইয়র্কে থাকে। তাই ইচ্ছা থাকলেও আমার পক্ষে দেশে স্থায়ী হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে বছরে কয়েক মাস করে দেশে থাকবো। এ সময় নিজের মতো করে নাটকে অভিনয় করে যাবো। সত্যি বলতে কী, দেশ ছেড়ে কোথাও যেতে ভাল লাগে না। তবুও সংসারের টানে যেতে হয়। রাশেক নিজেও আমার মনের অবস্থা জানে। তবে ও পুলিশে চাকরি করে, তাই অনেক কিছু মেনে নিতে হচ্ছে। সংসারের গৃহিণী আর অভিনয়শিল্পী পরিচয়ের পাশাপাশি রিচি এখন নাটকের প্রযোজকও। নিজের প্রতিষ্ঠান ‘নীলাঞ্জনা’য়ও তাকে সময় দিতে হচ্ছে। তাই পর্দায় উপস্থিতি কম থাকলেও তার ব্যস্ততার রেলগাড়িটা চলছেই। ২০০৯ সালে প্রযোজনা শুরু করেন তিনি। শহীদুজ্জামান সেলিম পরিচালিত ‘কম্পকরিম’ খণ্ড নাটকের মধ্য দিয়ে তার প্রযোজক হিসেবে অভিষেক ঘটে। এর কিছুদিন পরই তার বিয়ে হয়ে যায়। তবে সমপ্রতি আবারও প্রযোজনা শুরু করেছেন। তার প্রযোজিত নতুন ধারাবাহিক নাটক শিগগিরই প্রচারে আসছে। এদিকে সর্বশেষ রিচি ‘চৌধুরী ভিলা’ ও ‘ওপাশের বরফডানা’ ধারাবাহিক দুটিতে কাজ করেন। দুটি ধারাবাহিকই বেশ আলোচনায় আসে। আর গেল ঈদে তার অভিনীত প্রচার হওয়া সবক’টি নাটকই বেশ প্রশংসা পেয়েছে। রিচি শুধু অভিনেত্রী কিংবা নাট্য প্রযোজকই নন। একজন নাট্যকার এবং উপস্থাপকও। ২০১১ সালে বাবা দিবসে ‘আলোয় ভুবন ভরা’ নামের একটি খণ্ডনাটক লিখে নাট্যকার বনে যান তিনি। এরপর সর্বশেষ গত মে মাসে রিচি চয়নিকা চৌধুরীর ২৫০তম নাটক ‘ভাঙ্গনকাল’ রচনা করেছেন। ২০১২ সালে ‘সুর আর আনন্দ’ অনুষ্ঠানে প্রথমবার উপস্থাপনায় দেখা গেছে তাকে। সমপ্রতি তিনি আরেকটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন। রান্না বিষয়ক এ অনুষ্ঠানের নাম ‘নর টেস্ট এন্ড টুইস্ট’। অনুষ্ঠানটি একাধিক চ্যানেলে প্রচার হয়ে বেশ প্রশংসিতও হয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায় অভিনেত্রী, মডেল, নাট্যকার, প্রযোজক এবং একজন উপস্থাপক এই ৫টি চরিত্রের মধ্য দিয়ে বেশ ভালভাবেই পথ চলছেন রিচি।