এবার সাংবাদিকদের নিয়ে অশালীন হুমকি দিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী। সম্প্রতি সাংবাদিকদের ‘খবিশ’ ও ‘চরিত্রহীন’ বলে তোপের মুখে পড়ার পর ফের আবারো একই কাজ করলেন তিনি। অশালীন বিবেচনায় তাঁর উক্তি এই প্রতিবেদনে হুবহু উল্লেখ করা হচ্ছে না।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে গতকাল রোববার বেলা আড়াইটার দিকে মৌলভীবাজারে শহরের নতুন কালীবাড়ি প্রাঙ্গণে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি সাংবাদিকদের নিয়ে এমন বিরুপ মন্তব্য করেন।
গত ১০ আগস্ট সিলেটে সাংবাদিকদের নিয়ে মন্ত্রীর অশালিন বক্তব্য ও হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের সংবাদ লেখার প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, “যারা আমার …. … ঢুকাতে চায়, তাদেরকে যেকোনো … … করে দিতে পারি। কিন্তু তা আমি করি না। আমি বলব, আসুন, আমার সাথে বসুন। আপনারা অন্যায় টিপ্পনি কাটবেন আর আমি সহ্য করব, আমি সেই মন্ত্রী নই।”
মন্ত্রীদের কার্যকলাপ নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখার বিষয়েও সাংবাদিকদের সতর্ক করে সৈয়দ মহসিন আলী দেশ ও জাতির উন্নতি নিয়ে লেখার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “সৎ সাংবাদিকতা যারা করেন তাদের প্রতি আমার কোন সমালোচনা নাই। কিছু সংখ্যক সাংবাদিক যারা টাকা নিয়ে সাংবাদিকতা করেন তাদেরকে আমি ঘৃনা করি। সমালোচনার জন্য সমালোচনা না করে দেশের স্বার্থে দেশের উন্নয়নের জন্য সাংবাদিকতা করার আহ্বান জানাই।”
একটি জাতীয় দৈনি পত্রিকায় একটি সংবাদ ছাপার সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, “বিভিন্ন সময় অর্থমন্ত্রীর অনেক বক্তব্যকে সাংবাদিকরা অতিরঞ্জিত করে পত্রপত্রিকায় লিখে অর্থমন্ত্রীকে ইনসাল্ট (অপমান) করেছেন। তাই আমি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সতর্ক করে দিচ্ছি।”
সিলেটের আদিবাসীর অনুষ্ঠানের তাঁর দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, “সব সাংবাদিক মানদণ্ডে সমান নয়। অনেকেই পত্রিকার লাইসেন্স পেয়েছেন, কিন্তু লেখার যে শক্তি প্রয়োজন সেটা তাদের নেই।”
মন্ত্রী মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদকে উদ্দেশ করে বলেন, “অতীতে অনেক কিছু হয়েছে। সে সবে যেতে চাই না। আসুন সকলে মিলে এক সঙ্গে রাজনীতি করি। দূরে থেকে জনগণের জন্য রাজনীতি হবে না।”
দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এ জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে হলে তাদের সকলকে ৩৬, শ্রীমঙ্গল রোডের বাসায় (মন্ত্রীর বাসায়) যেতে হবে।”
সমালোচকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “যারা আমার বিরুদ্ধে কারণে-অকারণে সমালোচনা করেন তাদের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারবাসী মিছিল করলে সেই মিছিলের লাইন সিলেট চলে যাবে। এটা হবে বিপ্লবী মিছিল।”
তিনি আরো বলেন, “আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাই কোথায় গুলি করতে হয় তা জানি।”
এর আগে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সিলেটে আদিবাসীর আয়োজিত এক সংবাদ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের খবিশ ও চরিত্রহীন হিসেবে গালি দিয়েছিলেন।
এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। তিনি এ পেশার প্রতি তার সম্মান রয়েছে।