টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের বাবুপুর লাউহাটি এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধলেশ্বরীর তীব্র স্রোতে ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ কেটে সেই মাটি দিয়েই চালাচ্ছে বাঁধ রক্ষার কাজ।
সোমবার রাতে ভাঙন শুরু হলে স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে এলাকার মসজিদে মসজিদে মাইকিং করে লোকজন এনে গাছের গুড়ি ও বাঁশ কেটে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালান। কিন্তু এতে কোনো লাভ না হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেন।
খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার ঘটনাস্থলে গিয়ে নামমাত্র কাজ করায় স্থানীয়দের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, “প্রতিবছরই এই বাঁধে ভঙন দেখা দেয়। খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু জিও ব্যাগ ফেলে রেখে চলে যায়। এরপর তাদের আর কোনো খবর থাকে না। এবার ভাঙনের তীব্রতা অনেক বেশি। স্থায়ীভাবে বাঁধ সংস্কার করা না হলে দুই/তিনদিনের মধ্যে এ বাঁধ নদী গর্ভে চলে যাবে। তাতে বিলীন হয়ে যাবে ১৫টি গ্রাম।”
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধের উপর থেকেই মাটি কেটে জিও ব্যাগে ভরে সেই বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে বাঁধ আরো হুমকির মুখে পড়েছে।
ভাঙনের খবর পেয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু সালেহ মো. মহিউদ্দিন খাঁ, টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ বোসসহ আরো অনেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জেলা প্রশাসকের কাছে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রতি বছরের মতো এবারও পানি উন্নয়ন বোর্ড সময়মতো কোনো প্রদক্ষেপ না নেওয়ায় বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে। এভাবে চলতে থাকলে মানচিত্র থেকে পুরো দেলদুয়ার উপজেলা হারিয়ে যাবে।
জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন ও টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে দ্রুত ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা নিতে বলেন।
জেলা প্রশাসক বাঁধের মাটি কেটেই বাঁধ রক্ষার চেষ্টা দেখে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদকে বলেন, “অন্য কোনো স্থান থেকে মাটি না কেটে এখান থেকে কাটছেন কেন। জবাবে জ্যোতি প্রসাদ বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে রাত থেকে বাঁধ রক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে বাঁধের মাটিই জিও ব্যাগে ভরে বাঁধে ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি অন্য স্থান থেকে বালু আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার টুকু মিয়ার নিয়োগকৃত শ্রমিক আফজাল মিয়া, মনু, জয়নাল বলেন, “আমরা রাত থেকে নয় মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে কাজ শুরু করেছি।”