রোববার সন্ধ্যায় খিলগাঁওয়ের খিদমাহ হাসপাতালের সামনে একটি পাজেরো জিপে তল্লাশি চালিয়ে যন্ত্রের সঙ্গে ৫৫ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেটও পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- আবদুল্লাহ জুবায়ের (২৮), আইয়ুব আলী (৪৫), শামসুল আলম (২৪) ও মোস্তাকিন হোসেন ওরফে সানি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকা থেকে বহনে ঝুঁকি থাকায় রাজধানীতে বসেই তাদের ইয়াবা তৈরির পরিকল্পনা ছিল।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেন, “টেকনাফ থেকে সাদা রংয়ের পাজেরো জিপে ইয়াবা, ইয়াবা তৈরির মেশিন নিয়ে তারা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সায়েদাবাদ হয়ে খিলগাঁওয়ে পৌঁছার পর ধরা পড়ে।”
আবদুল্লাহ জুবায়েরকে মাদক চক্রটির হোতা বলে মনে করছে পুলিশ।
জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “পাজেরো জিপটিও তার। নিকেতনে তার রয়েছে বিলাসবহুল দুটি ফ্ল্যাট। ভারতের দার্জিলিংয়ে এইচএসসি পর্যন্ত পড়েছেন তিনি। এরপর জড়িয়ে পড়েন মাদক ব্যবসায়।”
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে জুবায়ের মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনতে বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করতেন। প্রতি চালানে থাকত অন্তত ৫০ হাজার ইয়াবা। প্রতি মাসে আসত ৪/৫টি চালান।
১০০ থেকে ১৩০ টাকা দরে কেনা প্রতিটি ইয়াবা ট্যাবলেট ঢাকায় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
জাহাঙ্গীর বলেন, “এভাবে ইয়াবা বহনে যে কোনো সময় ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকায় অল্প খরচে আরো বেশি লাভ করতে দেশেই ইয়াবা তৈরি করতে চেয়েছিল জুবায়ের।”
উদ্ধার করা যন্ত্রের দাম ২০ লাখ টাকা হতে পারে বলে জানান তিনি। এই যন্ত্রের মাধ্যমে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরি করা সম্ভব।
জাহাঙ্গীর বলেন, “গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে, সীমান্ত এলাকায় ৭/৮টি চক্র ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তাদের কেউ কেউ মেশিন ও সরঞ্জাম কিনে দেশেই ইয়াবা তৈরির পরিকল্পনা করছে।”
খিলগাঁও থেকে গ্রেপ্তাররা এমনই একটি চক্রের সদস্য দাবি করে তিনি বলেন, তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে।”
এই চারজনকে সোমবার বিকালে ঢাকার আদালতের মাধ্যমে ৭ দিনের হেফাজতে পুলিশ নিয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আদালত প্রতিবেদক জানিয়েছেন।
তাদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এসআই ওয়াহেদুর রহমান আসামিদের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১৫ দিন হেফাজতের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে মহানগর হাকিম স্নিগ্ধা রানী চক্রবর্তী প্রত্যেক আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।