রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণ্যিজিক ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতা বা কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর) খাতে ব্যয় করা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আবুল বারকাত মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। একে-অন্যের বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্য ও কড়া বাক্যবিনিময় করে চলেছেন। একই ঘরানার দুুই শক্তিশালী অর্থনীতিবিদ গতকালও একে-অন্যের বিরুদ্ধে বিস্তর বকেছেন। তবে তাদের এ অবস্থানকে কেউ ভাল চোখে দেখছেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাছত আলী মানবজমিনকে জানান, বিষয়টি কোনভাবেই ভাল হচ্ছে না। তাদেরকে থামা দরকার। শীর্ষপর্যায়ের অর্থনীতিবিদদের মতবিরোধ থাকতে পারে। তাই বলে প্রকাশ্যে রূপ নেয়া ভাল নয়। এদিকে এমন তোলপাড়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ৪ ব্যাংকের সিএসআর অর্থের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক কাজী মুতমাইন্না তাহমিদা স্বাক্ষরিত চিঠিটি জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব ব্যাংকের সিএসআর কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য ২০১৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বিতরণকৃত অর্থের তথ্যাদি চেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, উপকারভোগীর আবেদন, অনুমোদনের কপি, সিএসআর প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, অর্থ ছাড়করণের কাগজপত্র ও সিএসআর প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রতিবেদন। এসব তথ্যাদি অবশ্যই ১১ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ব্যাংকের মূলধন পর্যাপ্ততার ওপর বিরূপ প্রভাব ও সার্বিকভাবে ব্যাংকের প্রভিশনিংয়ের ওপর প্রভাব পড়ার অভিযোগে চলতি বছরের ২৮শে আগস্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক সিএসআর’র আওতায় ব্যাপকভাবে অর্থ ব্যয় করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব ব্যাংকের কাছে সিএসআর বিতরণের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠায়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলছেন ভিন্ন কথা। নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান চিঠি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মানবজমিনকে জানান, চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে সেটা ৪ ব্যাংক নয়, সব ব্যাংকে। তিনি বলেন, সিএসআর নিয়ে একটা বই বের করা হবে। সে কারণে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এটার সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্পৃক্ততা নেই বলে জানান তিনি।