তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, “মুক্তিযোদ্ধা ও কমান্ডাররা এখন মুক্তিযুদ্ধের চর্চা শুরু করে দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশাল একটা হাতির সমান। আমি সেই মুক্তিযুদ্ধে হাতির পিঠে বিচরণকারী পিঁপড়া মুক্তিযোদ্ধা। আমি ছিলাম ১০ হাজার সদস্যের চমৎকার বাহিনীর প্রশিক্ষক, কিন্তু আমি একটা পিঁপড়ার সমান।”
শনিবার দুপুর ২টায় মৌলভীবাজারের পৌর জনমিলন কেন্দ্রে জাসদের সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসানুল হক ইনু বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে রাজনৈতিক যুদ্ধ, সামাজিক যুদ্ধ ও দেশ গড়ার যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে আমার মতো যোদ্ধা বা কমান্ডাররা হলেন ছোট-বড় পিঁপড়ার সমান। আর সেই পিঁপড়ারা আত্মকথা লিখতে পারেন, নিজের যুদ্ধের বীরত্বের কথা লিখতে পারেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসচর্চা করতে পারেন না। যদি কেউ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখতে যান তখনই তিনি ভুল করবেন, কল্পনা মিশাবেন।”
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মূল কথা ছিল পাকিস্তানের পিঠে পেরেক ঠুকে দেওয়া। আর ৮ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের ক্ষমতায়, ইয়াহিয়া নয়।
ইনু আরো বলেন, মিথ্যাচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চলছে। প্রথম মীরজাফরের ঘটনা ঘটে পলাশীর প্রান্তে, দ্বিতীয় মীরজাফরের ঘটনা ঘটে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে। যখন এ দেশের আল-বদর, রাজাকারেরা পাকিস্তানি দোসর হয়েছিল। আর তৃতীয় মীরজাফরের ঘটনা হচ্ছে আমাদেরই সঙ্গে থাকা খন্দকার মুশতাক আহমেদের পেছন থেকে বঙ্গবন্ধুকে ছুরি দিয়ে হত্যা করা। আর চার নম্বর মীরজাফরের ঘটনা হচ্ছে বাংলাদেশের সংবিধান বদল করে জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের সঙ্গে বেঈমানি করা।
জেলা জাসদ সাধারণ সম্পাদক নাজিমউদ্দিন নজরুলের পরিচালনায় ও জেলা সভাপতি আব্দুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নেছার আহমদ, জাসদের যুক্তরাজ্য সভাপতি হারুনুর রশীদ প্রমুখ।
এর আগে মন্ত্রী জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে সুর মিলিয়ে জনমিলন কেন্দ্রের সম্মুখে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলা থেকে দলের জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী সভায় যোগ দেন।