এশিয়ান গেমসের ফুটবলে বাংলাদেশের কোনো সম্ভাবনাই দেখেন না শেখ মোহাম্মদ আসলাম। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই স্ট্রাইকার মনে করেন, যে দল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ পর্যায়ে বাধা পেরোতে পারে না, তারা এশিয়াডে বড় বড় শক্তিধর প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আর কী-ইবা করতে পারে!
২৮ বছর আগে এশিয়াড ফুটবলে বাংলাদেশের সর্বশেষ জয়ের নায়ক এই আসলাম। ১৯৮৬ সালে সিউল এশিয়ান গেমসে নেপালের বিপক্ষে সেই ১-০ ব্যবধানের জয়ে গোলটি এসেছিল তাঁর এক দুরন্ত হেড থেকেই। ১৯৭৮ সালের ব্যাংকক এশিয়ান গেমস থেকে ১৯৯০ সালের বেইজিং এশিয়ান গেমস—টানা চারটি এশিয়া গেমসে অংশ নেওয়া আসলাম বিভিন্ন কারণেই আশাবাদী হতে পারছেন না ফুটবল দল নিয়ে, ‘কীভাবে আশাবাদী হই বলুন! এশিয়ান গেমস অনেক বড় প্রতিযোগিতা। অনূর্ধ্ব-২৩ দলের প্রতিযোগিতা হলেও এশিয়ার সেরা দলগুলো এশিয়াড খেলতে আসে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েই। সেই তুলনায় আমাদের অবস্থা দেখুন। এই তো কিছু দিন আগে শুরু হয়েছিল আমাদের প্রস্তুতি। ফুটবল এমন পরিকল্পনাহীনতায় ভুগলে এর ভালো হবে কীভাবে।’
নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই দেখেছেন এশিয়ান গেমসে কখনোই কোনো লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ অংশ নেয়নি। সে জন্য এতে কখনোই ভালো ফল আসেনি। ‘থোর বড়ি খাড়া’টাইপ প্রস্তুতি নিয়ে এশিয়াডে খেলতে যাওয়াকে ‘দুঃসাহস’ হিসেবেই দেখেন তিনি। তাঁর দুঃখ, অতীতের মতো এ ব্যাপারটি থেকে এ দেশের ফুটবল কখনোই বেরিয়ে আসতে পারেনি।
নেপালের বিপক্ষে সর্বশেষ জয়টি নিয়ে কিছু বলতে গিয়ে কিছুটা যেন বিব্রতই হলেন আসলাম, ‘১৯৮৬ সালে সিউলে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচটি আমরা মোটেও ভালো খেলে জিতিনি। আশীষ ভদ্রের একটি ক্রস থেকে আমি অনেক উঁচুতে লাফিয়ে হেড করে সেই গোলটা করেছিলাম। সেই ম্যাচে ভালো স্মৃতি বলতে ওটাই। পুরো খেলায় খেলোয়াড়দের মধ্যে সমন্বয়হীনতা সেদিন আমাদের বেশি গোলে জিততে দেয়নি। অথচ, নেপাল তখন মোটেও আমাদের কাছাকাছি মানের দল ছিল না।’
ইনচনে আরও একটি এশিয়ান গেমসে ফুটবল দলকে নিয়ে খুব একটা আশাবাদী না হলেও তাদের শুভকামনা জানাতে ভোলেননি আসলাম, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি জেতা উচিত। উজবেকিস্তানের সঙ্গে চেষ্টা থাকতে হবে ভালো খেলার। অনেক সময় চেষ্টা ভালো কিছু এনে দিতে পারে। হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়েও একই কথা প্রযোজ্য। এই প্রতিযোগিতা থেকে খেলোয়াড়দের ভালো অভিজ্ঞতা হবে। ভালো জিনিস এটিই। আসলে ফুটবলে ভালো করতে বেশি করে আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নামার বিকল্প কিছু নেই।’