বৃটেনে দুই অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীকে চাকরি দেয়ার অভিযোগে ওয়ালথামের মুম্বই ব্লুজ রেস্তরাঁকে ৪০ হাজার পাউন্ড খেসারত দিতে হতে পারে। গত শুক্রবার বৃটিশ হোম অফিস ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট এক অভিযান চালিয়ে ওই দুই বাংলাদেশীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ তাদের নাম প্রকাশ করেনি। তাদের বয়স যথাক্রমে ৩৮ ও ২৮। দু’জনই বৈধ ভিসা নিয়ে বৃটেনে যান এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তারা আর দেশে ফিরেননি। গ্রিমসবাই টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘ইতিমধ্যে এটা পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, ওই দুই বাংলাদেশী অবৈধভাবে বৃটেনে অবস্থান করছিলেন। ওই মুখপাত্র আরও উল্লেখ করেন যে, “তাদের উভয়কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। পরে শর্তসাপেক্ষে তাদের ছাড়া হয়েছে। তবে যদি এটা প্রমাণিত হয় যে, বৃটেনে থাকার কোন অধিকারই তাদের ছিল না তাহলে দেশ থেকে বহিষ্কারের পদক্ষেপ নেয়া হবে।” ওই রেস্তরাঁটি গ্রিন ফুডস লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। গ্রিন ফুডকে ইতিমধ্যে কারণ দর্শাও নোটিশ জারি করা হয়েছে। ওই নোটিশের উত্তরে তাকে একটি বিষয় পরিষ্কার করতে হবে। সেটি হলো ওই দু’জনকে চাকরি দেয়ার আগে হোম অফিস থেকে চাকরি প্রদানপূর্বক যাচাই সম্পন্ন করা হয়েছিল কিনা। এতে ব্যর্থ হলে ওই কোম্পানিকে অবৈধ শ্রমিক প্রতি ২০ হাজার পাউন্ড করে জরিমানা গুনতে হবে। কারণ আইন অনুযায়ী বিদেশী শ্রমিকদের চাকরি দেয়ার আগে তাদের পাসপোর্ট বা স্বরাষ্ট্র দপ্তরের ডকুমেন্ট পরীক্ষা করে দেখার দায়িত্ব চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের।
মুম্বই ব্লুজ-এর ম্যানেজার মোহাম্মদ হোসেন বলেন, অবৈধ শ্রমিক সংক্রান্ত যে কোন অভিযোগ আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে থাকি। এবং সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান প্রতিপালনে বিশেষভাবে যত্নবান থাকি। আমরা অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করি। চাকরিপ্রার্থীদের সব কাগজপত্র এবং ওয়ার্ক পারমিট পরীক্ষা করে থাকি। জনাব মোহাম্মদ দাবি করেন যে, ওই দুজন হোম অফিসের কাছে স্বীকার করেছেন যে, চাকরির আশায় তারা ভুয়া ডকুমেন্ট দাখিল করেছিলেন।
মি. হোসেন আরও বলেন, অভিবাসন কর্মকর্তারা আমাদের কাছে তাই ব্যাখ্যা করেছেন। তবে আমরা বলেছি, আমরা ব্যবসা করতে বসেছি। কোন কাগজ জাল, আর কোনটি সঠিক তা আমরা শনাক্ত করতে সক্ষম নই। কারণ সে জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের দরকার হয়, যা আমাদের নেই। পুলিশি অভিযানের পর আমরা তাদের বরখাস্ত করেছি। এবং তারা আমাদেরকে যেসব কাগজপত্র সরবরাহ করেছিল, তা আমরা পুলিশকে দিয়েছি। তারা বৈধভাবে এদেশে রয়েছে বলে যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, আমরা সেটাও পুলিশকে দিয়েছি। আমরা ওই অভিযান চালানোর জন্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই।
হোম ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট টিমের সহকারী পরিচালক ফিলিপ্পা রাসেল বলেন, যে সব চাকরিদাতা অবৈধ শ্রমিক ব্যবহার করেন তাদেরকে ধরা হবে। কারণ বেআইনি কর্মসংস্থান করদাতাদের ফাঁকি দেয়। সৎ চাকরিদাতাদের বঞ্চনার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং বৈধ শ্রমিকদের প্রতারিত করে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘সেটা আমরা অবশ্যই চাকরিদাতাদের কাছে পরিষ্কার করতে চাই। কিন্তু যারা আইন ভঙ্গ করেছে, তাদের জানা উচিত যে, জরিমানা তাদের গুনতেই হবে।