একটা সময় মনে হচ্ছিল জিতে যাবে বাংলাদেশ। এমনটা হয়তো মনে হয়েছিল ক্রিকেটারদেরও। দ্রুতই জয়টা করায়াত্ত করতে চেয়েছিলেন তারা। এটাই কাল হলো তাদের। তাড়াহুড়া করতে গিয়েই ম্যাচটি হাতছাড়া করলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচ শেষে অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কান কোচ চাম্পিকা গামাগে। অধিনায়ক সালমা খাতুনও মনে করেন, যে টার্গেট ছিল তাতে ঠাণ্ডা মাথায় খেললে জয়টা অসম্ভব ছিল না।
পাকিস্তানের মেয়েরা যেখানে স্বর্ণ জয়ের উৎসব করেছেন সেখানে চোখের জলে মাঠ ছেড়েছেন শুকতারারা। ম্যাচ জয়ের পর পাকিস্তানি মেয়েদের ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলে চিৎকারও সালমাদের কাছে বিশেষ কিছু মনে হচ্ছিল। কিন্তু প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করার উপায় ছিল না। উপায় তো তারা মাঠেই খুইয়ে এসেছেন। বৃষ্টির কারণে ৭ ওভারে ৪৩ রানের টার্গেট ছিল সালমাদের সামনে। এ লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ৯ উইকেট ৩৮ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। এর দায় অনেকটাই পড়েছে অধিনায়ক সালমা খাতুনের ওপর। অধিনায়ক হিসেবে সালমা খাতুন এশিয়ান গেমসে ভাল করতে পারেননি। কোয়ার্টারে নেপালের বিপক্ষে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৭ আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেমিফাইনালে করেছেন ১৪ রান। গতকাল ফাইনালেও তিনি সুবিধা করতে পারেননি। প্রয়োজনের মুহূর্তে সবাই যখন তার দিকে চেয়ে, তখন করলেন মাত্র এক রান। বলের ফ্ল্যাইডট না দেখে ডিফেন্স করতে গিয়ে সাদিয়া ইউসুফের বলে বোল্ড হয়েছেন সালমা। বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের শুধুই ক্রিজ আর প্যাভিলিয়নে ছুটোছুটি। অতি তাড়াহুড়োর কারণে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে কথাটি স্বীকার করে নিয়েছেন অধিনায়ক নিজেও। তার কথায়, ‘অনেক আশা ও স্বপ্নের বীজ বুনেছি। তাদের মাত্র ৯৭ রানে আটকে দিয়ে সেই স্বপ্নের একধাপ পূরণও করে ফেলেছিলাম আমরা। যখন বৃষ্টি নামে, তখন স্বর্ণ জয়ের ইচ্ছাটা প্রবল হয়। কারণ, বৃষ্টি বেশি হলে পাঁচ ওভারের খেলা হবে। এটি নিশ্চিত ছিলাম, যে টার্গেট দেবে তা আমরা করতে পারবো। হিসাব অনুযায়ী হয়েছেও তাই। কম রানের টার্গেট পেয়ে আমাদের অতি তাড়াহুড়ো মনোভাবই সবকিছু পাল্টে দিল। সিঙ্গেলসের ওপরই ভরসা করার কথা ছিল। কিন্তু ক্রিজে গিয়ে সবাই এলোমেলো হয়ে গেছে। মাথা ঠাণ্ডা রেখে খেললে এমনটি হতো না।’
বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কান কোচ গামাগি বললেন ‘আমি বারবার ওদের একরান, দু’রান নিয়ে খেলতে বলেছি। কিন্তু ক্রিজে গিয়ে কেউ আমার কথা শোনেনি। ক্রিজে গিয়ে সবাই যার যার মতো খেলেছে। জয় হাতের মুঠোয় ভেবে বাজে শটগুলো খেলেছে, যা কোনভাবেই মানা যায় না। আবার তাদের দোষও দেখছি না। এ রকম পরিস্থিতিতে তারা কখনও পড়েনি। তাই চাপ সামলাতে পারেনি। ফলে যাওয়ার সময় যা বলেছি, ক্রিজে গিয়ে তা ভুলে গেছে। এরকম সুযোগ সহজে কেউ পায় না, যা বাংলাদেশ পেয়েছে।’