মানবজাতির ইতিহাসে জিনগত দিক থেকে বরাবরই নারীরা বৈশ্বিক জনসংখ্যায় পুরুষদের তুলনায় বেশি অবদান রেখেছিলেন। এর কারণ নারীরা দেশ বা স্থান পরিবর্তন করলেও, পুরুষরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একই স্থানে বা দেশে অবস্থান করতেন। এভাবে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো নারীদের জিন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের ডিএনএ পরীক্ষা ও নানা বিশ্লেষণে এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে। মানবজাতির বিবর্তন ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস নতুন করে লেখার অবকাশ আছে বৈকি! বিশ্বের ৫১টি দেশের জনসংখ্যার মধ্য থেকে ৬২৩ জন পুরুষের ডিএনএ নমুনা নিয়েছিলেন গবেষকরা। প্রত্যেক পুরুষের শরীর থেকে সংগৃহীত ডিএনএ নমুনা থেকে পৈত্রিক উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া ওয়াই ক্রোমোজোমের (এনআরওয়াই) সঙ্গে মায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া মাইটোকন্ড্রিয়াজাত ডিএনএ’র (এমটিডিএনএ) তুলনামূলক পর্যালোচনা করেন তারা। ইনভেস্টিগেইটিভ জেনেটিকস সাময়িকীতে এ গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা আইএএনএস। জিনগত বিশ্লেষণে বহুবিবাহের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সুদূর অতীতে একজন পুরুষের বেশ কয়েকজন স্ত্রী থাকতেন। ফলে, বৈশ্বিক জনসংখ্যায় পুরুষদের তুলানয় নারীদের জিনগত অবদানই ছিল বেশি। পুরুষদের তুলনায় নারীরাই এক দেশ বা স্থান থেকে অন্য দেশ বা স্থানে চলে যেতেন। এতে তাদের মাইটোকন্ড্রিয়াজাত ডিএনএ দূর থেকে সুদূরে সর্বত্রই বিস্তার লাভ করে বা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে, একটি জনসংখ্যার সঙ্গে আরেকটি জনসংখ্যার জিনগত ব্যবধান বা পরিবর্তন কমতে থাকে। পুরুষরা একই স্থানে বা দেশে বসবাস করতেন। ফলে, প্রতিটি জনসংখ্যায় তাদের পুত্রদের স্বতন্ত্র জিন থাকতো। এর অর্থ, পিতার চেয়ে মানব ইতিহাসে মায়েরা বরাবরই বেশি সংখ্যক জিন জনসংখ্যার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন। পুরুষরা সেক্ষেত্রে বেশ পিছিয়েই।