হারিয়েই গেলেন বলা যায় দেশীয় চলচ্চিত্রের একসময়ের দুই সেরা নায়িকা শাবনূর ও পূর্ণিমা। দু’জনেই আজ চলচ্চিত্রের বাইরে। এমনকি মিডিয়ারও। এবারের ঈদে পুরনো দু-একটি ছবি ছাড়া টেলিভিশন চ্যানেলে আর কিছুতেই ছিলেন না তারা।
পূর্ণিমা দেশে থেকেও কোথাও নেই। আর শাবনূর তো বিদেশে। তবে দু’জনেরই এ মিলের সঙ্গে আরেক মিল হচ্ছে মা হওয়া। শাবনূর পুত্রসন্তানের মা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়। আর পূর্ণিমা কন্যাসন্তানের মা হয়েছেন ঢাকায়। দু’জনেই এখন ব্যস্ত সন্তান লালন-পালন নিয়ে। মাঝে-মধ্যে শাবনূরের পক্ষ থেকে তার ঘনিষ্ঠজনরা ফাঁকা আওয়াজ দেন, তিনি দেশে ফিরছেন। কিন্তু পূর্ণিমার কোন আওয়াজ নেই। যোগাযোগও নেই কারো সঙ্গে।
শাবনূর-পূর্ণিমা একটা সময় একজন ছিলেন অন্যজনের প্রতিদ্বন্দ্বী। শুধু পর্দাতেই নয়, ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়েও ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। শেষ পর্যন্ত অনেকটা মিল রেখেই দু’জনে গুডবাই জানালেন চলচ্চিত্র শিল্পকে। এখন ইচ্ছা করলেও ফিরতে কষ্ট হবে দু’জনেরই। তবে মিলটা বিয়ে, সন্তান ছাড়াও রয়েছে কাজের মধ্যে। দু’জনেরই একটি করে ছবি মুক্তির মিছিলে। শাবনূরের ছবির নাম ‘এমনই তো প্রেম হয়’। পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। পূর্ণিমার ছবির নাম ‘ছায়া-ছবি’। পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। দু’জনেরই আটকে আছে একটি করে ছবি। শাবনূরের ‘অবুঝ ভালবাসা’, পূর্ণিমার ‘টু বি কন্টিনিউড’।
শাবনূর-পূর্ণিমা দু’জনেই একবার করে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শাবনূর পেয়েছেন ‘দুই নয়নের আলো’ এবং পূর্ণিমা পেয়েছেন ‘ওরা আমাকে ভাল হতে দিলো না’ ছবির জন্য। অমিল শুধু এক জায়গায়। শাবনূর বিদেশেই মূলত স্থায়ী হলেও পূর্ণিমার দেশত্যাগের কোন ইচ্ছা নেই। ঢাকায় নিজের বাড়ি আর চট্টগ্রামে শ্বশুরবাড়ি নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন এ নায়িকা। দেশে শাবনূরের ফ্ল্যাট বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি- সব থাকলেও ফেরার কিংবা স্থায়ী হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এমনকি পূর্ব আওয়াজ অনুযায়ী শাবনূর ও তার সন্তানকে বরণ করার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকেও কোন তৎপরতা নেই। স্বামী অনিক মাহমুদও অনেকটাই আড়ালে।
সবকিছু মিলিয়ে শাবনূর-পূর্ণিমা দু’জনের হারিয়ে যাওয়াটাই দিনে দিনে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে না ফেরার বিষয়েও কারও কোন দ্বিমত থাকছে না।