খেলোয়াড়ি জীবনে খুব ভদ্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন না। তাই বলে যে অভব্য ছিলেন এ কথাও বলা যাবে না। ব্রাজিলীয় ফুটবলে যখন ধ্রুপদি মূর্ছনা, তখন কার্লোস দুঙ্গা যেন সেই সুরের বাইরে দ্রোহী ঝংকার! দৃঢ় মানসিকতা আর ছাড় না দেওয়ার প্রবণতার কারণেই ব্রাজিলীয় ফুটবলের সবচেয়ে ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ তকমাটা লেগে আছে তাঁরই শরীরে। প্রতিপক্ষকে সম্মান করা যাবে না—এই ব্রত নিয়ে গোটা খেলোয়াড়ি জীবনটা কাটিয়ে দেওয়া চুরানব্বইয়ের বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিল দলের অধিনায়ক নিজের মনোভাবটা বোধ হয় পাল্টাতে পারেননি জাতীয় দলের কোচ হয়েও। বেইজিংয়ে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে প্রীতিম্যাচেও দুঙ্গার এই স্বভাব বেরিয়ে এল প্রকাশ্যেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতার উত্তেজনাতেই বোধ হয় সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার দর্শকের সামনেই আর্জেন্টিনার এক কর্মকর্তার সঙ্গে জুড়ে দিলেন বচসা। কেবল বচসাতে সীমাবদ্ধ থাকলেও হতো, ক্রোধান্বিত দুঙ্গা হাত দিয়ে নাক চেপে করতে লাগলেন অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি।
বচসা হতেই পারে। কিন্তু নাক চেপে ধরে দুঙ্গা কী বোঝাতে চাইছিলেন? ব্রাজিলীয় মিডিয়ার দাবি, আর্জেন্টাইন কর্মকর্তা জর্জ পাউতাসোকে তিনি বোঝাতে চাইছিলেন, ‘তুমি একদম তোমাদের ম্যারাডোনার মতো এক “মাদকসেবী”।’ দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় নাকের ওপরের অংশে আঙুল বোলানো নাকি ম্যারাডোনার মুদ্রাদোষ। দুঙ্গার এই অভিব্যক্তি ক্ষোভের আগুন জ্বেলে দিয়েছে আর্জেন্টিনার মিডিয়ায়ও।
২০১০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের কোচ ছিলেন দুঙ্গা। সেবার ব্রাজিলের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়ের পর এবারে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর স্কলারির বিদায় হলে দায়িত্বভার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই দুঙ্গাকেই। ব্যাপারটা অনেকের নাক কুঁচকানির কারণ হলেও এবার এক দলের মত একটু অন্য রকমই, ব্রাজিলকে সঠিক পথে ফেরাতে একমাত্র বিকল্প নাকি ওই দুঙ্গাই।
দ্বিতীয় মেয়াদে দুঙ্গার শুরুটা একেবারে মন্দ হয়নি। বিশ্বকাপের পর দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর অধীনে চারটি ম্যাচ খেলে প্রতিটিতেই জিতেছে ব্রাজিল। সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় জয়টা ব্রাজিল তুলে নিল এই সেদিন, আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে। এখন আনন্দের আতিশয্যে দুঙ্গা ম্যাচ শেষে ম্যারাডোনাকে যে বিদ্রূপ করেছেন, সেটা কিন্তু বড় ধরনের অভব্যতাই। সূত্র: এল কমার্সিও, ব্রাজিল
সেদিনের ওই ঘটনার ভিডিও দেখুন