লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে ৪-০ গোলে জয় পেয়েছে স্পেন। স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে আগের ম্যাচেই ২-১ গোলে হারার পর এই জয় ভিসেন্তে দেল বস্ককে স্বস্তি দিচ্ছেই। কিন্তু স্পেনের জয়ের খবর ছাপিয়ে যা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তা হলো এই ম্যাচে গোল পেয়েছেন ডিয়েগো কস্তা। ব্রাজিল ছেড়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে স্পেনকে আবাসভূমি বানিয়ে স্প্যানিশ জাতীয় দলে নাম লেখানোর পর থেকেই গোল-খরায় ভুগছিলেন চেলসির এই স্ট্রাইকার। আড়াল-আবডাল থেকে ছুটে আসা কটু-কাটব্যও হজম করতে হচ্ছিল মুখ বুজেই। অবশেষে আরাধ্য গোলটি তাঁকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে, সন্দেহ নেই। স্বস্তির চেয়েও বড় ব্যাপার, স্পেনের জার্সি গায়ে তিনি যে গোল করতে পারেন, সেই সত্যটাকে কাল অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেন এই স্ট্রাইকার।
স্পেনের হয়ে প্রথম গোলটি কস্তাকে কী পরিমাণ স্বস্তি দিয়েছে, তা জানা গেল ম্যাচ শেষেই। গোল করতে না পেরে ভেতরে ভেতরে যে পুড়ছিলেন, সেটা অকপটেই স্বীকার করেছেন কস্তা, ‘ব্যাপারটা সত্যিই আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। আমাকে ভেতরে ভেতরে পোড়াচ্ছিল। গোল করতে পারছি না, এর পাশাপাশি আমাকে পোড়াচ্ছিল স্পেনের জয়হীন মুহূর্তগুলো।’
এত কিছুর পরও কস্তায় ভরসা রেখে যাচ্ছিলেন কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক। কোচের কাছে কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই কস্তার, ‘আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই কোচ দেল বস্ককে। তিনি আমার ওপর ভরসা রেখে যাচ্ছেন। প্রতিটি ব্যর্থতার পরেই তিনি আমার পিঠে হাত বুলিয়ে আমাকে আরও একবার করে সুযোগ দিয়েছেন।’
লুক্সেমবার্গ ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন স্পেনের জন্য কোনো কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল না। মাঠে নামার পরেও তা মনে হয়নি। দেল বস্ক কোচ হিসেবে তাঁর সময়কালে সবচেয়ে তরুণ দলটিকেই কাল মাঠে নামিয়েছিলেন। গোলে ইকার ক্যাসিয়াসের জায়গায় ছিলেন ডেভিড ডি গিয়া। কিন্তু স্পেন প্রথম গোল পায় একজন অভিজ্ঞ সেনানীর মাধ্যমেই। ২৭ মিনিটে তাঁর হেডের গোলেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। প্রথমার্ধে শেষ দিকে (৪২ মিনিটে) পাসো আলকাসেরের দলকে এগিয়ে নেন ২-০ গোলে। ৬৯ মিনিটে ডিয়েগো কস্তা অবসান ঘটান তাঁর গোল খরার। খেলার ৮৮ মিনিটে হুয়ান বার্নোর গোলে আত্মবিশ্বাস ফেরানিয়া জয়টি তুলে নেয় সাম্প্রতিক কালে মাঠে ভয়াবহ সময় কাটানো সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
কোচ দেল বস্কের কণ্ঠেও খেলা শেষে ঝরেছে কস্তা-স্তুতি। দলের জয় ছাপিয়েও কস্তার গোল পাওয়াটাই যেন তাঁর কাছে মুখ্য হয়ে উঠেছে, ‘অবশেষে গোল পেল কস্তা। আমরা সবাই মনে-প্রাণেই চাচ্ছিলাম বেচারা একটা গোল পাক। আজও বিরতির সময় ওকে বলেছি শান্ত থাকতে, মাথা ঠান্ডা রাখতে। ওকে ওই সময় খুবই বিচলিত, চিন্তিত ও অসুখী দেখাচ্ছিল। ভালো লাগছে যে সে শেষ পর্যন্ত খারাপ সময়টা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে।