যুদ্ধাপরাধীদের জন্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমার সুযোগ না রাখার চিন্তা

anisul_swadeshnews24আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী মামলায় সাজা পাওয়া অপরাধীরা যাতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার সুযোগ নিতে না পারে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

আজ রোববার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ক্লাইমেট ফান্ড আয়োজিত ‘জুডিশিয়াল মেডিয়েশন স্কিল ট্রেনিং ফর অ্যাকটিভ জাজেস’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী। খবর বাসসের।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক হবে যদি কোনো রাষ্ট্রপতি ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ক্ষমা করেন। তবে আমার ব্যক্তিগত মত, এ ব্যাপারে একটা পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে ভবিষ্যতে কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধী সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৯-এর দোহাই দিয়ে পার পেয়ে না যায়।’

আনিসুল হক বলেন, ‘এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাংলাদেশের কোনো রাষ্ট্রপতি একজন মানবতাবিরোধী অপরাধীকে ক্ষমা করে দেবেন আর আমরা তা দেখে যাব, এটা সম্ভব নয়। তবে বাস্তব প্রেক্ষিত এ দেশে নিজামী ও মুজাহিদের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধীও মন্ত্রী হয়েছেন। তাদের গাড়িতেও দেশের পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা উচিত। যাতে তা সংবিধান বিরোধী না হয়, বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দল বা সংস্থার বিচারের বিষয়ে সংশোধিত ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট’-এর খসড়া অনুমোদনের জন্য নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিপরিষদ সভায় ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আনিসুল হক বলেন, দেশে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মিলিয়ে প্রায় ২৭ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বিধিমালা প্রয়োগ করার মাধ্যমে মামলার জট কমিয়ে আনা সম্ভব।
আনিসুল হক বলেন, মামলার জট কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বিধিমালা ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই এই বিধিমালা অনুমোদন দেওয়া হবে। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বিধিমালা প্রয়োগের মাধ্যমে বিচারকেরা আদালতের বাইরেও মামলা নিষ্পত্তির এখতিয়ার পাবেন। এতে দেশের বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন মামলার যে জট রয়েছে তা অনেকাংশে কমে আসবে।
মন্ত্রী বলেন, আদালতের বাইরে মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা আদালতের প্রচলিত বিচারব্যবস্থার সরাসরি বিকল্প নয়। তবে এই ব্যবস্থা মামলার ব্যয়, অহেতুক কালক্ষেপণ এবং আইনি জটিলতাকে কমিয়ে বিচার ব্যবস্থার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব আবু আহমেদ জমাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বক্তব্য দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *