সরকারী হিসেব মোতাবেক ৫দিন আগেই শেষ হয়েছে ইলিশ প্রজনন মৌসুম। ৫ থেকে ১৫ অক্টোবর এ ১১ দিন অবরোধে মৎস্য আইনে পটুয়াখালী জেলায় ভ্রাম্যমান আদালত ও কোষ্টগার্ড, পুলিশ জেলে ও ট্রলার মালিকদের বিরুদ্ধে জেল, জরিমানাসহ বিভিন্ন প্রকারের নিষিদ্ধ জাল পোড়ানো হয়েছিল। এতকিছুর পরেও মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞার শতভাগ প্রতিফলন ঘটেনি বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এখনও উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর বাউফলের তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ ধরা পড়ছে। যার পেট ভর্তি ডিম। তেতুলিয়া নদী পাড়ের উপজেলা বাউফলের মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেদের অনেকেই মনে করছেন ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য সরকার ঘোষিত যে সময় নির্ধারন করা হয় তা যথেষ্ট নয়, সময় আরও বাড়িয়ে দেয়া উচিতবলে মনে করেন তারা। কারণ পূর্নিমা তিথির উপর নির্ভর করে ইলিশের প্রজনন শুরু ও শেষ হয়।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, সরকার ২০১৩ সালে ৫ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ শিকারের উপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, চলতি বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালেও একই তারিখে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। বিগত বছরে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও প্রায় এক সপ্তাহ জেলেদের জালে মা ইলশ ধরা পরে। যার পেট ভর্তি ছিল শুধুই ডিম। ফলে ওই বছর আশংকাজনক ভাবে ইলিশের উৎপাদন কমে যায়। এ বছর অক্টোবর মাসে পূর্নিমা তিথি সময় পরিবর্তন হওয়ায় ইলিশের নিরাপদ প্রজননের সময়ও পরিবর্তন হয়েছে। সে হিসাব অনুযায়ি ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিৎ ছিল।
বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রবীন জেলে বাদশা মাঝি বলেন, এ বছর তারিখ আরও এগিয়ে ১০ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেওয়া উচিত ছিল। কালাইয়া বন্দরের ভাই ভাই মাছের আড়তের মালিক অমর দাস বলেন, বর্তমানে ইলিশের আমদানি অনেক বেশি। যে সব ইলিশ বর্তমানে জেলেরা শিকার করে নিয়ে আসছেন তার অধিকাংশ মাছের পেট ভর্তি ডিম। উজ্জল দাস নামে এক মৎস ব্যাবসায়ী বলেন, নিশেধাজ্ঞার পরে যে ইলিশ গুলো জেলেরা শিকার করেছে তার শতকারা আশি ভাগ মাছের পেট ভর্তি ডিম। তিনি মনে করেন সরকারের উচিত নিষেধাজ্ঞার সময় কমপক্ষে ২১-৩০ দিন করা।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, আমাদের হিসাব মতে ৬০ থেকে ৭০ ভাগ মাছ নিরাপদে ডিম ছেড়েছে। তবে সময় নির্ধারন, পরিবর্তন ও সময় বাড়ানো এ সবই নির্ভর করে মন্ত্রনালয়ের সিদ্বান্তের উপর।