নিজের শারিরীক অক্ষমতার কারণে স্ত্রী, এমন কি শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের কাছ থেকেও প্রতিনিয়ত অপমান আর কটূ কথা শুনতে হতো চট্টগ্রামের তরুণ প্রকৌশলী সৌরভ পালকে (৩৫)। দিনের পর দিন চলা এই অপমানের বোঝা সইতে না পেরে নিজের স্ত্রীর সামনেই চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনা চট্টগ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
জানা গেছে, মাত্র ১৬ মাস আগে বিয়ে করে সুন্দরী স্ত্রী ঘরে তুলেছিলেন চট্টগ্রামের তরুণ প্রকৌশলী সৌরভ পাল (৩৫)। অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চ বেতনে চাকরি করে অল্প বয়সেই নিজ এলাকায় ধনাঢ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত পেয়েছিলেন। বিয়ের পর থেকেই নিজের শারীরিক অক্ষমতার কারণে ২৬ বছর বয়সী স্ত্রী উপমার সঙ্গে মনোমালিন্য হয় সৌরভের। এর কারণে প্রতিদিন তাকে অপমানিত হতে হতো। অপমান থেকে রক্ষা পেতে এই তরুণ প্রকৌশলী আত্মহত্যা করেছেন বলে দুই পরিবারের ঘনিষ্ট আত্মীয়রা জানিয়েছেন।
সৌরভের স্ত্রী উপমার নিকটাত্মীয় পিযুষ কান্তি দত্ত জানান, অস্ট্রেলিয়ায় ভালো বেতনে চাকরি করা সৌরভের সঙ্গে উপমার বিয়ে হয় বর্ণাঢ্য আয়োজনে। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে অক্ষম ছিলেন সৌরভ। এই বিষয়টি বিয়ের আগে উপমার পরিবারের কাছে গোপন রাখেন সৌরভ। বিয়ের পর সৌরভের শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ও দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়। সৌরভ স্ত্রীকে নিজের বশে রাখতে একাধিকবার ইউরোপ ভ্রমণে নিয়ে যান এবং মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে শ্বশুরকে ব্যবসায় সহায়তা করেন। কিন্তু এতো কিছুর পরও প্রতিদিন থাকে স্ত্রীর অপমান সহ্য করতে হতো। সবশেষ বৃহস্পতিবার সকালে সৌরভ তার স্ত্রীকে নিয়ে কৈবল্যধাম মন্দিরে গিয়েছিলেন সৃষ্টিকর্তার কাছে দাম্পত্য সম্পর্কের সুখ ফিরে পাওয়ার প্রার্থনা করতে। মন্দির থেকে রেললাইন ধরে ফেরার পথে দ্রুতগামী একটি ট্রেন আসার মুহূর্তে স্ত্রীর সামনেই ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন সৌরভ। মুহূর্তের মধ্যেই সৌরভের একটি হাত ও একটি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ক্ষত বিক্ষত হয় সারা শরীর। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।