আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের সাকোয়া ব্রিজের উত্তর-পশ্চিম পাশে শান্তিপাড়া গ্রামে আনন্দ মেলা’র নামে চলছে রাতভর হাউজি ও ৬ গুটির ডাব্বু জুয়া খেলার আসর।
প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে রাতভর চলে হাউজি ও ৬ গুটি ডাব্বু জুয়া খেলা। অথচ মেলাস্থলের সামনে শান্তিপাড়া জামে মসজিদ। এলাকার খুশু চৌধুরী ও মমিনুর ইসলাম মমিনের নেতৃত্বে ঢোলভাঙ্গার হালিম মিয়া, একই গ্রামের বাসিন্দা নবাব আলীসহ একটি জুয়াড়ী চক্র এই মেলার আয়োজন করে। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, গত ১২ অক্টোবর থেকে মেলা চলছে। মাঝখানে বেতকাপা ইউপি সদস্য হাবিব মেম্বারের সঙ্গে ৬ গুটির ডাব্বু জুয়া বসানোকে কেন্দ্র করে মেলা কমিটির সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। ওই সংঘর্ষের কারণে হাউজি ও জুয়া খেলা ৭ দিন বন্ধ থাকে। গত ৫ নভেম্বর থেকে উক্ত কমিটি শান্তিপাড়া জামে মসজিদের সামনে আবার মেলা বসায়। মেলা উপলক্ষে পলাশবাড়ী, সাদুল্যাপুর ও সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় অটোরিক্রা ও সিএনজি করে সকাল-সন্ধ্যা প্রকাশ্যে মাইক বাজিয়ে প্রচার-প্রচারনা চালানো হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, একটি বড় প্যান্ডেলের ভেতর হাউজি চালানো হয়। প্যান্ডেলের উত্তর পাশে ১০ থেকে ১৫টি ছোট প্যান্ডেলে বৌ খেলা, রিং ঘুরানো, ঘুর্ণিসহ ওপেনে ৪টি স্পটে লক্ষ লক্ষ টাকার ৬ গুটির ডাব্বু জুয়া খেলা চলছে। এদিকে, হাউজি, ৬ গুটির ডাব্বু জুয়া, বৌ খেলা চলার কারণে উপজেলার অনেকে অতিলাভের আশায় রাতভর জুয়া খেলে সর্বস্ব হারাচ্ছেন। এছাড়া হাউজি ও ৬টি গুটির ডাব্বু জুয়ার টাকা যোগাড় করতে অনেকেই জড়িয়ে পড়ছেন বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে। এলাকায় হাউজি ও জুয়া শুরু হওয়ায় শুক্রবার গভীর রাতে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের গড়েয়ার ব্রিজ এলাকায় শাওন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এস আলম গ্রুপের এসআরের নিকট থেকে একটি হিরো ইসপ্লিন্ডার মোটরসাইকেল যোগে পলাশবাড়ী থেকে গাইবান্ধায় যাওয়ার পথে রাত ১ টার সময় ডাকাতের কবলে পড়ে। এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সদরের দক্ষিণবন্দর বগুড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় খায়রুলের দোকানে তালা ভেঙ্গে তার দোকানের মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। ৮ নভেম্বর একই এলাকার হিরো মন্ডলের মুদি দোকানের সামনের দরজা ভেঙ্গে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল চোরদল চুরি করে নিয়ে যায়। এদিকে, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে ঢোলভাঙ্গাসহ উপজেলার গ্রাম অঞ্চলের ছোট-বড় রাস্তা দিয়ে চলাচল করলেই ছিনতাই ও ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে বাড়ী ফিরতে হয় পথচারীদের। এ ছাড়াও আনন্দ মেলার অনুমতি নিয়ে মেলা চলছে, রাতভর হাউজি, ৬ গুটির ডাব্বু জুয়া, মাদক কেনাবেচার মহাৎসব চললেও দেখার যেন কেউ নেই? মেলার নামে হাউজি, ৬ গুটির ডাব্বু জুয়া, বৌ খেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য হালিম জানান, ৪টি স্পটে ৬ গুটির ডাব্বু জুয়া চালাচ্ছি। ৬টি স্পটে বৌ খেলার নামে জুয়া চালাচ্ছি, একটি হাউজি চালাচ্ছি। যত পারেন লেখেন, আমাদের কিছুই করতে পারবেন না-দেখে নিব। পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মজিবুর রহমান জানান, আমার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয় ৬গুটির ডাব্বু জুয়া মেলাটি ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য মহামান্য হাইকোর্টের নিকট একটি নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এখন পর্যন্ত সেই নির্দেশনার জবাব পাওয়া যায়নি। বুঝতেই পারছেন আমার করার কিছুই নেই।