সাভারে একটি ডায়িং কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য শোধনাগারের হাউজ থেকে পরিছন্নকর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। গতকাল বিকালে সাভারের মজিদপুরে অবস্থিত পাকিজা গ্রুপের ‘পাকিজা ডায়িং অ্যান্ড প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ কারখানার হাউজ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত পরিচ্ছন্ন কর্মী ইসমাইল হোসেন (৫৫) জামালপুর জেলার সদর থানার কেউধোলা এলাকার মৃত লেহাজ উদ্দিনের পুত্র। তিনি সপরিবারে সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনি মহল্লায় বসবাস করতেন। সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কবীর হোসেন বলেন, পাকিজার পরিচ্ছন্ন কর্মী ইসমাইল হোসেন বেলা আনুমানিক ১০টার দিকে কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য শোধনাগারে (ইটিপি প্ল্যান্ট) পরিচ্ছন্নতার কাজ করার সময় ৩০ ফুট গভীর হাউজটিতে পড়ে কেমিক্যাল মিশ্রিত পানিতে তলিয়ে যায়। এসময় সহকর্মীরা তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান না পেলে সাভার ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে ডুবুরি দলকে ডাকলে ঢাকা থেকে ডুবুরি দল এসে বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে সাভার থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে মৃতের সুরতহাল করা হয়। সাভার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, যে কোন ইটিপি প্ল্যান্টে কাজ করতে গেলে পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদি থাকা দরকার। এক্ষেত্রে তার কোন লক্ষণ দেখা যায়নি, যার ফলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, বিশাল এ হাউজটিতে কোন সেফটি গার্ড (রেলিং) নেই। ফলে কেউ বর্জ্যের এ পানিতে পড়ে গেলে কারও সহযোগিতা ছাড়া উঠতে পারবে না। এদিকে লাশ উদ্ধারের পর ইসমাইল হোসেনের পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এর আগে ইসমাইল হোসেন বর্জ্যের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবরে তার পরিবারের সদস্যরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে তারা কারখানায় ঢুকতে না পেরে গেইট ভাঙার চেষ্টা করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। নিহতের বড় ভাই আব্দুস সালাম অভিযোগ করে বলেন, তাৎক্ষণিক কর্তৃপক্ষ উদ্ধারের চেষ্টা করলে ভাইকে বাঁচানো যেত।
আমরা খবর পেয়ে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও আমাদের ভিতরে ঢুকতে দেয়নি কারখানার নিরাপত্তা কর্মীরা। পাকিজা ডায়িং অ্যান্ড প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক ফারুক খান চিশতি জানান, প্রায় ৬ বছর যাবৎ ইসমাইল কারখানার পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করছে। হাউজ পরিচ্ছন্নতার কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে সে তলিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা এসে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে।
তিনি দাবি করেন, বর্জ্য শোধনাগারের হাউজে পর্যাপ্ত ‘সেফটির’ ব্যবস্থা রয়েছে।