অনিয়মের শীর্ষে অবস্থান করছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির বড় অনিয়ম হলমার্ক কেলেঙ্কারি। উদ্ঘাটিত হয় ২০১২ সালে। প্রায় চার হাজার কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ে। এরপর সুড়ঙ্গ কেলেঙ্কারি। এখানেও বড় অংকের মার খায়। প্রায় ২৬ কোটি টাকা। তার কিছু দিন পর অনলাইন হ্যাকিং। প্রায় এক কোটি টাকা। সব শেষে চেক চুরি। অর্ধশতাধিক চেক। প্রায় কয়েক কোটি টাকা খোয়া যায়। সে থেকে ব্যাংকটি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। নিয়েছে সরকার থেকে টাকাও ধার। অবশ্য কম চেষ্টা করেনি হারিয়ে যাওয়া অর্থনৈতিক সূচক ফিরিয়ে আনতে। পারেনি। যদিও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দাবি অর্থনৈতিক সূচক স্বাভাবিক। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা সাক্ষ্য দেয় না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূচকে দেখা যাচ্ছে, সোনালী ব্যাংক ২০১২ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অপরিশোধিত বিল সংক্রান্ত অভিযোগের শীর্ষে রয়েছে। এ সময় গ্রাহকের ৮০৩টি অভিযোগ পেয়ে ব্যাংকটি দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগের শীর্ষে অবস্থান করছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন এও দাবি করেছে, ব্যাংকটির অভিযোগের বেশির ভাগই নিষ্পত্তি হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মানবজমিনকে জানান, সোনালী ব্যাংকে একের পর এক অঘটন ব্যাংকটিকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছে। এর থেকে উত্তরণ বেশ কঠিন বলে মনে করেন তিনি। তবে আগের থেকে বর্তমানে ব্যাংকটি সচেতন হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। হিসাবে দেখা যায়, ৮০৩টি অভিযোগের মধ্যে ৭৯৭টি অভিযোগই নিষ্পন্ন হয়েছে। যা ৯৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। অভিযোগের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। ব্যাংকটি ৪৭৪টি অভিযোগের মধ্যে নিষ্পন্ন হয়েছে ৪৭০টি অভিযোগ। যা ৯৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। অপরিশোধিত বিল সংক্রান্ত অভিযোগে ৬ শীর্ষ ব্যাংকের তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ব্যাংকটির ৪৭১টি অভিযোগের মধ্যে ৪৬৩টি অভিযোগ নিষ্পন্ন হয়েছে। যা ৯৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী রাষ্ট্রায়ত্তের শেষ ও অভিযোগে চতুর্থ স্থান অধিকারী ব্যাংক হচ্ছে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির ২৩৬টির অভিযোগের মধ্যে নিষ্পন্ন হয়েছে ২৩৩টি অভিযোগ। যা ৯৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এছাড়া বাকি দুইটি হচ্ছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড। এর মধ্যে অভিযোগের পঞ্চম স্থানে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটির বিরুদ্ধে গ্রাহকরা ১৯৮টি অভিযোগ করেছে। এর মধ্যে নিষ্পন্ন হয়েছে ১৯৬টি অভিযোগ। যা ৯৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগ ওঠে ১৭৪টি। তন্মধ্যে নিষ্পন্ন হয়েছে ১৭২টি অভিযোগ। যা ৯৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ।