প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম গোপন কথা বলে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিকল্পধারার সভাপতি প্রফেসর একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। বলেছেন, ইমাম সাহেব নিশ্চয় উনাদেরও ইমাম। গোপন কথা বলে দিলেন। গোপন কথা গোপন রাখিতে চাহিলাম, গোপন রইল না। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে উপলক্ষে জিয়া পরিষদ আয়োজিত ‘৭ই নভেম্বর চেতনা: আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদের কঠোর সমালোচনা করে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, যদি চিড়িয়াখানায় যান কি দেখবেন? ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতি। সরকারের মন্ত্রিপরিষদেও চিড়িয়াখানা দেখি। মানুষ এটাকে চিড়িয়াখানা বললে কি বলবেন? বি. চৌধুরী বলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপারে কেউ কিছু বললে বা লিখলে তার শাস্তি হয়, সেখানে আল্লাহ-রাসূল সম্পর্কে বলেও তাকে (লতিফ সিদ্দিকী) শাস্তি দেবেন না? সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে আরেকজন তো আছেন নিদ্রামন্ত্রী। তিনি মিটিংয়ে কিভাবে ঘুমান? এভাবে যদি রাষ্ট্রের কর্তারা ঘুমায় তবে রাষ্ট্রের কি অবস্থা হবে? রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক সম্পর্কে তিনি বলেন, একজন মন্ত্রী ৬৭ বছর বয়সে বিয়ে করলেন, আমি এর বিরুদ্ধে নই। এ জন্য এত পাবলিসিটি কেন? এই গায়ে হলুদ, এই বিয়ের অনুষ্ঠান, একটি ছবিও নাকি বানানো হবে! অর্থমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেক শিক্ষিত, উচ্চশিক্ষিত অর্থমন্ত্রী। কি বললেন? ঘুষ দিলে অপরাধ হয় না। এ বছরের নিকৃষ্ট উক্তি। ঘুষ নেয়া দোষের নয় তিনি এ ধরনের মন্তব্য করে জঘন্য অন্যায় করেছেন। কিছুদিন পর দেখা যাবে তিনি বার্ষিক বাজেট পাসের সময় ঘুষের বাজেটও পেশ করবেন। প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে সম্পর্কে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে চৌধুরী বলেন, আপনারা কেউ জয়কে নিয়ে কোন মন্তব্য করবেন না। সে বাইরে ছিল। এখন লার্নিং প্রসেসে আছে। সময় দেন। ‘বিশ দল বিষফোঁড়া’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বি. চৌধুরী বলেন, আপনি জেনে না জেনে ২০ দলকে ভয় করছেন। নয়তো এত কথা বলছেন কেন। হয়তো তারা সত্য কথা বলছে নয় তো নিশ্চয়ই জনগণের সমর্থন রয়েছে। যার কারণে আপনার এত ভয়। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ অনেক মন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন বি. চৌধুরী। জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে বি. চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ভেতর দিয়ে যে রাজনীতি শুরু হয়েছে- তার চেয়ে বড় রাজনীতিক আর কেউ হতে পারে না। তিনি জিয়াউর রহমান। তার মূল দর্শন হারিয়ে গেছে। অগণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় যা হওয়ার তাই হচ্ছে। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে মুক্ত বুদ্ধির রাজনীতির সূচনা করেছিলেন। তার কল্যাণেই দেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রাণ ফিরে পেয়েছিল। এমনকি আওয়ামী লীগেরও পুর্নজন্ম হয়েছিল। ৭ই নভেম্বরের বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ রুদ্ধদশা থেকে মুক্ত হয়েছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতার জন্য আসেন নাই। তিনি দেশের নেতৃত্বশূন্যতা পূরণে দেশের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। তিনি দেশের হাল ধরেছিলেন। সেই জন্যই জিয়াউর রহমান বাঁচতে পারলেন না। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেন, যে এইচ টি ইমাম খোন্দকার মোশ্তাকের মন্ত্রিপরিষদের শপথ পড়িয়েছেন, তিনি বর্তমান সরকারেও আছেন।