1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
বাঙালির রক্ত ও নৈতিকতা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ প্রসঙ্গে - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ করবেন আব্দুল কুদ্দুস ‘ব্যাড গার্লস’ ওয়েব সিরিজে অনুরূপ আইচের লেখা গানে রাকা জারা ‘ফিল্মের মানুষ কোনো দিন আপন হয় না’ ওমরাহ পালনে সস্ত্রীক সৌদি যাচ্ছেন মির্জা ফখরুল ৭৬ বছরের ইতিহাসে প্রথম, সারা দেশে টানা তাপপ্রবাহের রেকর্ড দেশে নয়, বিদেশে নির্জন দ্বীপে বসছে শাকিব খানের বিয়ের আসর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের উপ-অপ্যায়ন সম্পাদক হলেন সোহেল চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যপদ ফিরে পাচ্ছেন জায়েদ খান শাকিবের তৃতীয় বিয়ে, মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা সোনার দাম আরও কমল রাজধানীতে পানি, স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির জায়েদ খানের এফডিসিতে ফেরা হবে কিনা, জানালেন ডিপজল কক্সবাজার জেলায় কত রোহিঙ্গা ভোটার, তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট সিনেমা হলে দেওয়া হচ্ছে টিকিটের সঙ্গে ফ্রি বিরিয়ানি

বাঙালির রক্ত ও নৈতিকতা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ প্রসঙ্গে

  • Update Time : বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৪
  • ৩৫৬ Time View

মূলত নৈতিকতা ও সততা এই দুইটি বিষয় পারস্পারিক। বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে এই দুইটি বিষয় আমি যখন খুঁজি তখন প্রায় সমাজের সবাই আমাকে এড়িয়ে চলে। আমার এই প্রবন্ধটি লেখা ও প্রকাশের অনেক পূর্বে নৈতিকতা ও সততা বিহীন সমাজিক ব্যবস্থার কারণে সংগঠিত আমার জীবনের কিছু ধ্বংসাত্মক ঘটনা যা আমাকে বিশেষভাবে এই প্রবন্ধটি লিখতে অনুপ্রাণিত করেছিল ।

দুর্নীতি শব্দের আভিধানিক অর্থ হ’ল কুনীতি। বাংলা একাডেমীর সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান অনুসারে দুর্নীতি হচেছ যা নীতি বিরুদ্ধ, কুনীতি বা অসদাচরন। দুর্নীতির ইংরেজী প্রতিশব্দ হচেছ Corruption. Cambridge International Dictionary of English অনুসারে Corruption হচেছ “Dishonestly using one`s position or power to one’s advantages esp. for money” অপরদিকে, The New Oxford Dictionary of English অনুসারে Corruption হচেছ “Dishonest or fraudulent conduct by those in power, typically involving bribery”. মূলতঃ দুর্নীতি হচ্ছে চরম নৈতিক অবক্ষয়ের পরাকাষ্ঠা যা আমাদের সকল প্রকার মানবিকতার দ্বারকে রূদ্ধ করে আমাদের নিক্ষেপ করে অন্ধকারের অতলান্ত মহাসাগরে।

২.
নৈতিকতা আলোকের ঝর্নাধারা : নৈতিকতা হচেছ নীতি ঘটিত বা নীতি সংক্রান্ত বিষয় যা সুনীতি, সৎনীতি বা উৎকৃষ্ট নীতিকে ধারন করে। নৈতিকতার ইংরেজী প্রতিশব্দ হচেছ Morality. Cambridge International Dictionary of English অনুসারে Morality হচেছ A quality relating to the standards of good or bad behavior, fairness, honesty etc, which each person believes in rather than to laws or other standards” অপরদিকে, The New Oxford Dictionary of English অনুসারে Morality হচেছ “Principles concerning the distinction between right and wrong behavior and the goodness or badness of human character”. দুর্নীতির অমানিশার অন্ধকারের বিপরীতে নৈতিকতা হচ্ছে একটি উজ্জ্বল বাতিঘর যা আমাদের সুস্থ, সুন্দর, উৎকৃষ্ট ও মানবিকতাপূর্ন পথের সন্ধান দিতে পারে।

৩.
দুর্নীতি ও নৈতিকতা পরস্পর বিপরীত স্রোত: প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতি ও নৈতিকতা দুটি বিপরীতধর্মী বিষয়-বিপরীতমূখী স্রোতধারা। দুর্নীতি ন্যায় ও নৈতিকতার বিরুদ্ধে আচরন। সহজ কথায় বলা যায় আইন বিরোধী কাজসহ সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থি কার্যাবলীই হ’ল দুর্নীতি। যে নীতিগুলো আমাদের সমাজের রীতি-নীতি, মূল্যবোধ ও সামাজিক কাঠামোকে সুদৃঢ় করার জন্য প্রচলিত আছে সেগুলো অমান্য করা, লংঘন করা বা পদদলিত করাই হ’ল দুর্নীতি।

সমাজতত্ত্ববিদদের মতে, দুর্নীতি একদিকে যেমন মানব আচরনকে নির্দেশ করে তেমনি তা আবার বিশেষ কাজকে নির্দেশ করে। মানুষ আর্থ-সামাজিক চাপে পড়ে কিংবা স্বীয় হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সহজলভ্য এমন কিছু পেতে চায় বা করতে চায়-যার পেছনে আইনানুগ কোন সমর্থন নেই এবং সমাজের প্রচলিত রীতি-নীতি আদর্শ কোন ভাবেই ধারন করে না। তাই আমরা বলতে পারি রাষ্ট্রীয় আইন বা প্রচলিত সামাজিক রীতি-নীতি ও আদর্শের তোয়াক্কা না করে বৃহত্তর জনস্বার্থের প্রতিকুলে ব্যক্তিগত লাভের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করাকে দুর্নীতি বোঝায়।

৪.
দুর্নীতির প্রকারভেদ : প্রখ্যাত বাঙালী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন এর মতে, দুনীতি মূলত: দুই প্রকার।
প্রথমত: টেবিলের নীচে হাত রেখে নজরানা গ্রহণ। এটা হচেছ গৌন দুর্নীতি। এ ধরনের দুর্নীতি অনভিপ্রেত এবং মাত্রায় বেশী হলেও ভয়াবহতার দিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর দুর্নীতি। এটা সহজেই প্রতিরোধযোগ্য।

দ্বিতীয়ত: টেবিলের উপর হাত রেখে ক্ষমতাবানদের ভাগবাটোয়ারা। এটা হচেছ মুখ্য দুর্নীতি। এ ধরনের দুর্নীতি মুষ্টিমেয় সংখ্যক লোক করলেও ভয়াবহতার দিক থেকে প্রথম শ্রেণীর দুর্নীতি থেকে অনেক অনেক বেশী মাত্রাযুক্ত। এ ধরনের দুর্নীতি সহজে দমন করা যায় না।
অপরদিকে দুর্নীতিকে (ক) আর্থিক দুর্নীতি, (খ) ক্ষমতার অপব্যবহারজনিত দুর্নীতি ও (গ) নৈতিক স্খলনজনিত দুর্নীতি এভাবেও ভাগ করা যায়। আবার কেহ কেহ দুর্নীতিকে (ক) চাহিদাঘটিত দুর্র্নতি(Corruption due to Need) ও (খ) লোভজনিত দুর্নীতি (Corruption due to Greed) হিসেবেও শ্রেনীবিভাগ করেন।

৫.
আলোকিত মানুষ কোথায়?: দুর্নীতির অন্যতম অনুষঙ্গ হচেছ মানুষ। মানুষের অন্তর্নিহিত লোভ-লালসা তথা পাশবিক প্রবৃত্তি তাকে দুর্নীতি করতে উৎসাহ যোগায়। এর সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক তথা রাষ্ট্রীয় প্রতিকুল পরিস্থিতি দুর্নীতিকে বহুমাত্রিক করে তোলে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাই সংগ্রাম করতে হলে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। এক গবেষণায় পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে চারটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন-1. HE (Honest and Efficient- সৎ ও দক্ষ )১০%2. DE (Dishonest and Efficient অসৎ কিন্তু দক্ষ)১০%3. HI (Honest and Inefficient সৎ কিন্তু অদক্ষ )৫%4. DI (Dishonest and Inefficient অসৎ ও অদক্ষ)-৭৫% উপরের শ্রেণীবিভাগ থেকে আমরা স্পষ্টতই দেখতে পাই যে, পৃথিবীর মানুষকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে/দুর্নীতিকে ন্যুণতম মাত্রায় আনতে হলে নৈতিক শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। মানব স¤পদ উন্নয়ন ছাড়া কোন উন্নয়নই টেকসই হয় না। আর দুর্নীতিমুক্ত মানব স¤পদ না থাকলে কোন দেশের পক্ষে টেকসই উন্নয়ন তথা জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করা যায় না।

৬.
দুর্নীতির কারন বহুবিধ ও বহুমাত্রিক : বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে দুর্নীতি অন্যতম রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সমস্যা হিসাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। বর্তমান সময়ে আমাদের চারিদিকের ঘটনাপ্রবাহের দিকে তাকালে এক ধরনের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির দৃশ্যকল্প আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে-আমাদের দুর্নীতি নামক ভয়াবহ রাক্ষসের সম্মূখীন করে। কম্বল বাছতে গাঁ উজার করার মত প্রতিটি ঘটনাপ্রবাহে আমরা দুর্নীতির কালো থাবা দেখতে পাই। সার্বিক বিচারে আমাদের দেশে দুর্নীতি বহুবিধ কারনে সংগঠিত হয়। রোগব্যাধি নিরাময়ের জন্য যেমন রোগের প্রয়োজনীয় কারন সমূহ চিহ্নিতকরন দরকার তেমনি দুর্নীতি রোধ করতে হলে উহার কারন সমূহও চিহ্নিত করা আবশ্যক।
মোটাদাগে আমাদের দেশের দুর্নীতির কারনসমূহ নিম্নরূপ বলে বিশেষজ্ঞগন মনে করেন:

০১) আর্থিক স্বচছতা/জবাবদিহিতা না থাকা; ০২) রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা; ০৩) ধর্মীয় মূল্য-বোধের অভাব; ০৪) স্বজনপ্রীতি ও ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের অপচেষ্টা; ০৫) পারিপার্শ্বিক পরিবেশের চাপে দ্রুত অর্থ উপার্জনের অসুস্থ প্রতিযোগীতা; ০৬) কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাব/বেকারত্বের উচচহার; ০৭) সরকারী/বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অব্যবস্থাপনা; ০৮) দুর্নীতি সংক্রান্ত আইনের ফাঁক-ফোঁকরগুলো দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্তের যথাযথ বিচার না হওয়া; ০৯) দুর্নীতি পরায়ন নেতৃত্ব; ১০) নৈতিক শিক্ষার অভাব; ১১) মূল্যবোধের অবক্ষয়; ১২) প্রধান প্রধান জাতীয় বিষয়ে তথা দুর্নীতির বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত্যের অভাব; ১৩) দুর্নীতি বিষয়ে জনগণের সচেতনতার অভাব।

৭.
দুর্নীতির কারন একটি ইদুরের (RAT) অনুপস্থিতি : একটি মাত্র ইদুরের (RAT) অনুপস্থিতি আমাদের দেশে দুনীতির বিস্তারের প্রধান কারন বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন। দুর্নীতি প্রতিরোধ তথা অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ের প্রতিবন্ধকতা দুরীকরন ও দীর্ঘমেয়াদী সার্বিক সাফল্য লাভের জন্য আমাদের তাই জরুরী ভিত্তিতে একটি ইদুর (RAT) পুষতে হবে। কিন্তু RAT কী ধরনের হবে? সাদা,কালো নাকি ধুসর? আমাদের বহুল কাংখিত RAT হবে-

R – Right People’s Appointment in the Right Palce in Right Time(সঠিক লোককে সঠিক জাযগায় সঠিক সময়ে পদায়ন),

A – Accountability (তাদের দায়বদ্ধতা/জবাবদিহিতা আনয়ন) এবং

T – Transparency (তাদের কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা).

আমরা যদি সঠিক লোককে সঠিক জাযগায় সঠিক সময়ে পদায়ন/প্রতিষ্ঠিত করতে পারি ও তাদের দায়বদ্ধতা/জবাবদিহিতা আনয়ন করতে পারি এবং সকল কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পারি-আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস এর ফলে আমাদের Resource এর অভাব হবে না; Image ইতিবাচক হবে; Information জনগনের দোরগড়ায় যাবে; Infrastructure উন্নত হবে; Implementation Capacity বাড়বে; Inefficiency কমে efficiency বৃদ্বি পাবে; Corruption সহনীয় মাত্রায় চলে আসবে এবং Energy/Agricultureসহ সব ক্ষেত্রে সাফল্য আমরা পাবো।

৮.
দুর্নীতি প্রতিরোধ কঠিন কিন্তু অসাধ্য নয় : বাংলাদেশের সমাজ জীবনে দুর্নীতি ভাইরাসের মত বিস্তৃতি লাভ করেছে। দুর্নীতি এক সর্বগ্রাসী ভয়াল রূপ নিয়ে বর্তমান সমাজকে আঁকড়ে ধরেছে। দুর্নীতি ক্যান্সারের রুপ পরিগ্রহ করে এর ভয়াল থাবায় সমাজের জীবনী শক্তি নিঃশেষ করে চলেছে।

বর্তমানে দুর্নীতি আমাদের দেশের একটি অন্যতম সামাজিক ও অর্থনৈতিক জাতীয় সমস্যা। দুর্নীতির ভয়াবহ পরিনতিতে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি তথা জাতীয় প্রবৃদ্ধি যেমন তরান্বিত হচেছ না তেমনি সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা।
দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ ও মানবতার কল্যানে স্থিতিশীল আর্থ-সামাজিক পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য আমাদের সমাজের সর্বক্ষেত্র থেকে দুর্নীতির মূল উৎপাটন করতে দুর্নীতি বিস্তার লাভের উলি¬খিত প্রধান প্রধান কারনগুলির বিরুদ্ধে সমাজের সকল স্তরের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক প্রতিরোধ ছাড়া দুর্নীতি নামক ভয়াল দানবকে রোধ করা সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞগনের মতে দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য নি¤œলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারেঃ

০১) দুর্নীতি সংক্রান্ত আইনের কঠোর ও যথাযথ প্রয়োগ ;
০২) ধর্মীয় শিক্ষার সাথে নৈতিক শিক্ষার প্রসার ;
০৩) প্রশাসনিক স্বচছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ;
০৪) দুর্নীতির কুফল ও ভয়াবহতা স¤পর্কে ব্যাপক প্রচার ও সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলা ;
০৫) স্কুল/কলেজের পাঠ্য-পুস্তকে দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভূক্তকরণ ; ০৬) রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনায়ন ;
০৭) খাজনা-ট্র্যাক্স ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন-কানুনের আমুল পরিবর্তন সাধন করতে হবে। আতংক সৃষ্টি না করে জন কল্যাণে ও জাতীয় স্বার্থে নতুন আইন-কানুন প্রবর্তন করতে হবে;
০৮) কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেতন কাঠামোর বৈষম্য দুর করতে হবে। নানা ধরনের ভাতার ব্যবস্থা/যুক্তিযুক্ত হারে বেতন বাড়াতে হবে;
০৯) প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে জনকল্যাণে ও জাতীয় স্বার্থে সংস্কার করতে হবে ;
১০) সব ধরনের সম্পত্তির মালিকানা উত্তরাধিকার ক্রয়-বিক্রয় ও হস্তান্তর সংক্রান্ত আইন-কানুন সংস্কার করতে হবে ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে একে জনবান্ধব করতে হবে। ;
১১) অবৈধ লেনদেন রোধের ব্যাপারে আইন প্রবর্তন করতে হবে ;
১২) কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বেকার সমস্যা দুরীকরণ ;
১৩) বাজারে ক্রেতার অধিকার নির্ণয় ও নিশ্চিত করতে হবে।
১৪) প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সেবা দাতা ও গ্রহীতার পারস্পরিক সেবা গ্রহন ডিজিটালি ভাবে প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

৯.
সমাজ অসুস্থ-এক সুস্থ করতে হবে : দুর্নীতি আমাদের সমাজের একটি দুষ্ট ক্ষত। দুর্নীতিকে দমন করতে না পারলে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন যেমন সুদুরপরাত হতে হবে তেমনি সামাজিক ও জাতীয় ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে পড়বো। বর্তমানে আমরা এমন একটা অসুস্থ সামাজিক ও রাজনৈতিক আবহমণ্ডলে বসবাস করছি যেখানে বিরাজ করছে মহাত্মা গান্ধীর বহুল কথিত ৭টি অপরাধ/পাপ-
1. Wealth without work (কর্মছাড়া সম্পদ অর্জন)
2. Pleasure without conscience (বিবেক ছাড়া আনন্দ উদযাপন)
3. Knowledge without character (চরিত্র গঠন ছাড়া জ্ঞানার্জন)
4. Commerce without morality (নৈতিকতা ছাড়া ব্যবসা বানিজ্য)
5. Science without humanity (মানবতা ছাড়া বিজ্ঞান চর্চা)6. Religion without sacrifice (ত্যাগের আদর্শ ছাড়া ধর্মাচরন)
7. Politics without principle (নীতিহীন রাজনীতি)

বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে এ দুঃসহ অবস্থার অবসান করতে হলে আমাদেরকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষনা করতে হবে। আমাদের এমন এক পারিবারিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাষ্ট্রীয় অবস্থান সৃষ্টি করতে হবে যেখানে-
১. রাজনীতির ভিতর নীতি থাকবে ;
২. প্রশাসনের ভিতর শাসন থাকবে ;
৩. অর্থনীতির ভিতর অর্থ থাকবে ;
৪. সংস্কৃতির ভিতর কৃতিত্ব থাকবে ;
৫. পৌরনীতির ভিতর পৌরজনের কথা থাকবে;
৬. সমাজনীতির ভিতর সমাজের কথা থাকবে;
৭. শিক্ষানীতির ভিতর শিক্ষার নির্যাস থাকবে;
৮. সর্বোপরি আমাদের কর্মকৌশলে গতিময় গতিহীনতা থাকবে না।

১০.
আসুন অভিমানী ‘‘সুনীতি’’কে ফিরিয়ে আনি : ‘‘দুর্নীতি’’ নামক ‘‘দুয়োরানী’’র বিষবাস্পে আজ চারিদিক কুলষিত-বিষাক্ত। মারাত্মক বিষের নীল ছোবলে ‘‘সুনীতি’’ নামের ‘‘সুয়োরানী’’ আজ জর্জরিত-দমবন্ধ হয়ে মারা যাবার উপক্রম। ‘‘সুনীতি’’ নামের ‘‘সুয়োরানী’’ তাই অভিমানে আজ দেশছাড়া-কোনঠাসা হয়ে অনাদরে অবহেলায় পরবাসী-নির্বাসিত। ‘‘সুনীতি’’ নামের ‘‘সুয়োরানী’’র অনুপস্থিতি আজ আমাদের ধ্বংসের সামনে এনে দাড় করিয়েছে। ‘‘সুনীতি’’ নামের ‘‘সুয়োরানী’’ আমাদের মাঝে নাই তাই আমাদের সঙ্গীন অবস্থা। সুনীতির হাহাকারে আজ আকাশ বাতাস বিদীর্ন-বিমর্ষ-মলিন-কালিমাযুক্ত। সুনীতি আমাদের মাঝে নাই, তাই কবি মতিউর রহমানের ভাষায়-
‘‘তুমি নাই এ শহরে-তাই সব ফলে নষ্ট মেডিসিনতুমি নাই এ শহরে-তাই পেট্রোলে কেরোসিন।তুমি নাই এ শহরে-তাই মিনারেল জলে পোঁকাতুমি নাই এ শহরে-তাই প্রুতিশ্রুতি মানে ধোঁকা।

ফিরে এসো- হে সুনীতি!! প্রিয় বান্ধবী আমারছুতারের ঠুকঠাক এক ঘা মারো হে কামার!!

১১.
দুর্নীতি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী : বাঙালির হাজার বছরের মুক্তিসংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগ করেছেন ৩০ লক্ষ বীর শহীদ-লাঞ্ছিত হয়েছেন ২ লক্ষ মা ও বোন। আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছেন বাংলার প্রায় প্রতিটি পরিবারের প্রতিটি সদস্য। এদের সকলের সম্মিলিত ত্যাগ ও তিতিক্ষায় আমরা পেয়েছি আমাদের স্বাধীন আবাসভূমি বাংলাদেশ। সুমহান আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমাদের ইতিহাসের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের উপহার দিয়েছেন একটি পবিত্র আবাসভূমি Bangladesh এবং তাঁরা তাঁদের বুকের লাল রক্তের আঁখরে সেই Bangladesh কে সংজ্ঞায়িত করেছেন। লাল রক্তের আঁখরে সংজ্ঞায়িত বাংলাদেশের ‘‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল রক্ত লাল। লক্ষ প্রানের বিনিময়ে এক মহাসমুদ্র রক্তের হোলিখেলায় অর্জিত আমাদের এ Bangladesh একটি গনতান্ত্রিক দেশ হবে-অপশাসন ও শোষণ মুক্ত-দুর্নীতিমুক্ত দেশ হবে-সকল নাগরিকের জন একটি পবিত্র আবাসভূমি হবে-এ স্বপ্নই তো আমাদের সূর্যসন্তানেরা দেখেছিলেন । দুর্নীতি আমাদের স্বাধীনতার অনির্বাণ চেতনায় জারিত দেশে একান্তবাবেই বেমানান কারন আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের চেতনায় আলোকিত ও আলোড়িত অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্বাদের সংজ্ঞায়িত Bangladesh হচ্ছে-
B_ Blood রক্তে
A_ Achieved অর্জিত
N_ National জাতীয়
G_Golden সোনালী
L _Land ভূমি
A_ Applauded প্রশংসিত
D _Democratic গণতান্ত্রিক
E _Evergreen চিরসবুজS Sanctity পবিত্র
H_ Habitation আবাস।

১২.
আসুন যুদ্ধ করি দুর্নীতির বিরুদ্ধে : ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা.) কোন দেশের বা জাতির ধ্বংস বিষয়ে বলেছিলেন- (১) দেশের বিদ্বান ব্যক্তিগণ লোভী হলে কে দেশের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করবে? (২) দেশের নেতৃবৃন্দ ঐশ্বর্য্যরে পিছনে ছুটিলে সাধারন মানুষ কাকে অনুসরণ করবে? (৩) দেশের ব্যবসায়ীগণ অসাধু হলে মানুষ কাকে বিশ্বাস করিবে? (৪) দেশের সৈন্যদল দেখবার শোভা হলে কে দেশরক্ষা করিবে? (৫) দেশের প্রশাসন বিভাগীয় রাজকর্মচারীগণ এবং ন্যায়দন্ডধারী বিচারকমন্ডলী দায়িত্বহীন হলে কে নিপীড়িত জনগণকে রক্ষা করবে?
আল্লাহ্ কসম এই পাঁচ কারণেই কোন দেশ বা জাতির ধ্বংস অনিবার্য।

পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের ভাই জারমেইন জ্যাকসন (আব্দুল আজিজ) বলেছেন ‘‘ আমরা সমাজের সকলে যদি যার যার নিজ অবস্থান থেকে সমাজের জন্য ইতিবাচক কাজ করতাম, তবে আমাদের সমাজে কোন দুঃখ-দারিদ্র ও দুর্নীতি থাকতো না। ’আসুন সেই কাংখিত সমাজ ও বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে আমরা যার যার অবস্থান থেকে কাজ করি-দুর্নীতিকে না বলি। আমাদের ছেলেমেয়েদের সঠিক ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করি-তাদের সচেতন করি-নিজেরা সচেতন হই আর সম্মিলিতভাবে যুদ্ধ ঘোষনা করি দুর্নীতি নামক ঘৃণ্য দানবের বিরুদ্ধে। পরিবারই হোক আমাদের শিশুদের নৈতিক সুশিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। আসুন ব্যক্তিগতভাবে, পারিবারিকভাবে ও সামাজিকভাবে দুর্নীতিকে ‘‘না’’ বলি। তাহলেই আমরা গড়ে তুলতে পারবো আমাদের কাংখিত দুর্নীতিমুক্ত পরিবার ,দেশ ও সমাজ। আমাদের সকলের দৃঢ় অঙ্গীকার হোক-
‘‘দুর্নীতি আমরা করবো না-কলংকিত হবো না।দুর্নীতি আমরা সইবো না-নষ্ট সমাজ গড়বো না।’’

১৩.
আসুন পরিশুদ্ধ হই সুনীতির আলোয়: সেই অনেক দিন আগে আমাদের জন্য -আমাদের ভালবেসে-একটি সুন্দর দেশ গড়ার জন্য-আমাদেরই পূর্বপুরুষরা রক্ত দিয়েছিলো-সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছিলো অবলীলায় হেসে-একটি উন্নত ও সূখী সমাজে আমাদের অধিষ্ঠিত করার জন্য।

ঐতিহাসিক মুক্তিসংগ্রামের আদর্শ ও চেতনায় আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি ১৯৭১ সালে-শোষণ দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে চেয়েছি। সে যুদ্ধে আমাদের জীবন দিতে হয়েছে। কিন্তু আজ ভয়াল শত্রু ‘দুর্নীতির’ বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের রক্ত দিতে হবে না-জীবন দিতে হবে না-সর্বোচ্চ ত্যাগও স্বীকার করতে হবে না; সংগ্রাম করতে হবে না; শুধু স্বাধীনতার আদর্শ ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি প্রতিজ্ঞা করতে হবে- ‘‘নতুন দিনের স্বাধীনতা যুদ্ধেআমরা সবাই থাকবো ন্যায় ও সত্যের পথে;দুর্নীতিকে না বলে শুরু করি যুদ্ধ;দেশ বাঁচবে আমরা বাঁচবো হবো পরিশুদ্ধ।

তাই আসুন দেশকে ভালবেসে নিজেকে ভালবাসি কারন দেশ না বাঁচলে আমার আপনার কোন নিশানাই থাকবে না। আর দেশকে ভালবাসলেই আমরা গর্বিত হতে পারবোা এবং আমাদের মা-আমাদের মাটি- আমাদের মানুষজন সুখের হাসি হাসবে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশে কারন-
‘‘মানুষ বাঁচে আশায়;দেশ বাঁচে ভালবাসায়।’’

এই আশা ও ভালবাসা বাংলাদেশের সকল মানুষের অন্তরে বিরাজ করলে ‘দুর্নীতি’ নামক ঘৃণ্য দানব দেশ থেকে পালানোর পথ খুজে পাবে না। তাই আসুন-
‘‘ মনের জানালা খুলে দিয়ে-চেতনা ঢোকাই কক্ষে;দুর্নীতিকে ‘না’ বলি- দেশপ্রেম নিয়ে বক্ষে।’

**আমার লেখা প্রবন্ধটি সামাজিক সচেতনতা মূলক। প্রবন্ধটিতে অপমানজনক ও দুঃখদায়ক কিছু লেখা হলে দয়া করে ক্ষমা করবেন। এই বিষয়ে আপনার কোনো জিজ্ঞাসা, মতামত অথবা পরামর্শ থাকলে দয়া করে মন্তব্য করুণ**

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com