বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট ডিসেম্বরের মাঝামাঝি আন্দোলনে যেতে চায়। এবার স্বল্পমেয়াদি অথচ ‘কার্যকর’ আন্দোলনের পরিকল্পনা করছে দলটি। এ জন্য ৫ জানুয়ারি ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিকে সামনে রেখে আন্দোলনে নামতে চায় তারা। তবে সফলতা নিয়ে এবারও দল ও জোটের ভেতরে সন্দেহ আছে।
আগামী ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের এক বছর পূর্ণ হবে। বিএনপির একটি সূত্র জানায়, ওই দিনটি সামনে রেখে বড় ধরনের কর্মসূচিতে থাকতে চায় বিএনপি। তবে সেই কর্মসূচি কী হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এর আগে ইস্যুভিত্তিক হরতাল, বিক্ষোভ-সমাবেশ হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি আন্দোলনেই আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে আন্দোলনের একটি চূড়ান্ত রূপ দেখা যেতে পারে। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির যে নির্বাচন হয়েছে তা দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সবার জন্য মঙ্গলজনক।
বিএনপি ও জোটের সূত্র জানায়, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর পর মাঠে নামতে চায় বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট এবং পর্যায়ক্রমে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আন্দোলন তীব্র করতে চায়। এ ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত গ্যাসের দাম বাড়ানোর সরকারি উদ্যোগকে ইস্যু হিসেবে মাথায় রেখেছেন বিএনপির নেতারা। বিএনপি মনে করছে, এটি জনসম্পৃক্ত একটি ইস্যু। এ ইস্যুতে মাঠে নামলে জনসমর্থন পাওয়া যাবে। আবার কর্মসূচিতে বাধা দিলে তা সরকারের বিপক্ষে যাবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গতকাল শনিবার জোটের বৈঠকে এ ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ডিসেম্বরে গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, সমাবেশ করা আর নতুন দাম কার্যকরের সিদ্ধান্ত হলে হরতালের মতো কর্মসূচি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকে দুজন নেতা বলেছেন, সরকার যত সময় পাবে, তত শক্ত হবে। খালেদা জিয়াও বলেন, দ্রুত আন্দোলন শুরু করা হবে। জীবন দেওয়ার ডাক এলেও প্রস্তুত থাকতে হবে।
আলাপকালে ২০-দলীয় জোটের শরিক একটি দলের সভাপতি প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন সুনির্দিষ্টভাবে কিছু না বললেও আলোচনায় মনে হয়েছে, এবার তিনি শেষ করার জন্য শুরু করতে চান। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যেই শেষ করতে চান।
একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, উপদেষ্টা ও জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এবার তিনি কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির বৈঠক এবং গত রাতে জোটের বৈঠকেও তিনি বলেছেন, কেউ না থাকলে তিনি একাই রাজপথে নামবেন। বিএনপির মধ্যে এ আলোচনাও আছে, রাজধানীতে দল এখনো সাংগঠনিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত নয়, গতিশীলতার অভাব আছে। তবে দলটির একটি অংশ আবার এও মনে করে যে, আন্দোলন শুরু হলে দ্বন্দ্ব থাকবে না। দলে গতিশীলতা ফিরে আসবে।