চট্টগ্রাম ব্যুরো
নির্দিষ্ট জায়গায় এসে থামার কথা থাকলেও গতকাল বুধবার ‘মহানগর প্রভাতী’ রেললাইন ছেড়ে উঠে পড়ে প্লাটফর্মে। ভোরে এই দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটি স্টেশনের জন্য নির্ধারিত ১৬ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি গতিতে চলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে কেউ হতাহত না হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ট্রেনের ইঞ্জিন, একটি বগি, প্লাটফরমের মেঝ, ভবন ও কাচের কাঠামো। চালক তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকায় ট্রেনটি নির্ধারিত স্থানে না দাঁড়িয়ে প্লাটফরমে উঠে যায় বলে জানান রেল কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তারা হলেন সান্টিং ইঞ্জিনের চালক একেএম জহুরুল হক, সহকারী লোকো মাস্টার ইমরান হোসেন ও পয়েন্টসম্যান মো. জাহাঙ্গীর। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) মুরাদ হোসেন বলেন, চালক তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি। ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেসের চালক একেএম জহুরুল হক বলেন, আমি তখন তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলাম। এ অবস্থায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। পর-পর দুই রাতে আমি নাইট ডিউটি করেছি। এ কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল মহানগর প্রভাতীর। এ জন্য রেলস্টেশন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে দেওয়ানহাটের মার্শালিং ইয়ার্ড থেকে ট্রেনটি স্টেশনে আসছিল। স্টেশনের নির্ধারিত স্থানে দাঁড়ানোর কথা থাকলেও ইঞ্জিনের গতি বেশি থাকায় সেটি নির্দিষ্ট স্থানে না দাঁড়িয়ে রেললাইন থেকে কয়েক ফুট উঁচু ইটের মেঝে অতিক্রম করে প্লাটফরমে ঢুকে পড়ে। প্লাটফরমের ভবনে ধাক্কা খেয়ে সেটি দাঁড়িয়ে যায়।
ইঞ্জিনটি প্লাটফরমে আটকে থাকায় আরেকটি ইঞ্জিন যুক্ত করে পরে মহানগর প্রভাতী চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে। এ ছাড়া অন্য সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যায় বলে জানান স্টেশন ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, রেলস্টেশনে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন করতে দুটি কমিটি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
স্টেশন ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ জানান, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) ফিরোজ ইফতেখারকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া সদর দপ্তর থেকে অতিরিক্ত প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা রাশেদা সুলতানা গণি, অতিরিক্ত প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী আহামেদ মাহবুব চৌধুরী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংকেত ও টেলিকমিউনিকেশন) মো. মাঈনুল ইসলাম ও অতিরিক্ত প্রধান প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কোনো সময়সীমা দেওয়া হয়নি।