শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪, যিশু খ্রিস্টের জন্মতিথি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষেরা আনন্দঘন ও উৎসবমূখর পরিবেশে বড়দিন উদযাপন করছে। নানা রঙের পোশাকে সেজে গির্জা বা ধর্মীয় উপাসনালগুলোতে বাইবেল পাঠসহ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন, আনন্দ মিছিল ও কেক কাটা ছাড়াও নাচ-গানের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করছে বলে সংবাদদাতাগণ জানান।
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের সাধু পলের গীর্জা ও সিরাজ-উদ দৌলা সড়কে অবস্থিত ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রার্থনার মাধ্যমে বড়দিন উৎসব শুরু হয়। দু’স্থান থেকেই খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর চাষাঢ়া হয়ে আবার গীর্জা ও চার্চে ফিরে যায়। পরে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয় এবং সান্তা ক্লজ বাচ্চাদের উপহার দেন। এ সময় নেচে গেয়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা বড়দিন উদযাপন করেন। আজকের এ উৎসবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সিদ্দিকুর রহমান। এ উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে নারায়ণগঞ্জের সাধু পলের গীর্জা ও ব্যাপ্টিস্ট চার্চ।
খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা জানান, জেলার শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে নানা আয়োজনে শুভ বড়দিন উদযাপিত হচ্ছে। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা নিজ বাড়িতে নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি বিভিন্ন গির্জায় গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেক কেটে বড়দিনের উৎসব পালন করেছেন।
জেলার শতাধিক স্থানে এবারও বড়দিন উৎসব পালন করা হচ্ছে। এরমধ্যে ব্যাপ্টিস্ট ও ক্যাথলিকরাই বেশি। শহরের খাগড়াপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ও আপার পেরাছড়া ক্যাথলিক চার্চে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে বড়দিনের কার্যক্রমের সূচনা হয়। জেলার সকল গির্জাগুলোকে সাজানো হয়েছে নানা রঙের সাজে। এখানকার ৮ উপজেলার ব্যাপটিস্ট, ক্যাথলিক, সেভেন ডে এ্যাডভেন্টিস্ট, প্রেসবেটেরিয়ান এবং গসফেল ফর এশিয়াসহ বিভিন্ন খ্রিস্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দিনটি উপলক্ষে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করছে।
ধর্ম প্রচারক সমীর চাকমা বলেন, প্রভূ যিশু মানুষকে পাপ থেকে মুক্ত করতেই এদিনে পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন। তাই ধর্মপ্রাণ খ্রিস্টানরা খুবই উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদযাপন করছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার শেখ মো: মিজানুর রহমান জানান, বড়দিন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে সব ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এখানেও বড়দিন উদযাপন করা হচ্ছে। শহরের খ্রিস্টান মিশনে অবস্থিত চার্চে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় গীর্জায় বড়দিনের বিশেষ উপাশনা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা, গান ও বাইবেল থেকে আলোচনা হয়। শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বাংলাদেশ থিওলজিক্যাল সেমিনারি ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ড. জন সরকার। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, হবিগঞ্জ-৩ (হবিগঞ্জ সদর-লাখাই) আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মো: আবু জাহির। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক দিলীপ কুমার বণিক, বিশিষ্ট সাংবাদিক এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি এডভোকেট অহিন্দ্র দত্ত, ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম ও সাংবাদিক আব্দুল বারী লস্কর।
বড়দিন উপলক্ষে শিশুদের খেলাধুলা ছাড়াও মিশনারীতে ব্যাপক আলোকসজ্জা করা হয়। এছাড়া হবিগঞ্জ সদর উপজেলার কলিমনগর, বাহুবল উপজেলার খাসিয়াপুঞ্জি, মাধবপুর উপজেলার সুরমা, তেলিয়াপাড়া ও নয়াপাড়া বাগানেও বড় দিনের কর্মসূচি পালন করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকজন।
দিনাজপুর সংবাদদাতা জানান, আনন্দঘন ও উৎসবমূখর পরিবেশে এ জেলায়ও বড়দিন উদযাপিত হচ্ছে। গির্জায় গির্জায় আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ প্রার্থনা সভার। শহরের গনেশতলা, কসবা, সুইহারী, মির্জাপুর, মাতাসাগরসহ জেলার বীরগঞ্জ, বিরল, পার্বতীপুর, বিরামপুর, ফুলবাড়ী, নবাবগঞ্জ এবং ঘোড়াঘাট উপজেলার বিভিন্ন খ্রিস্টান পল্লীতে দিনটি উদযাপনে নানা আয়োজনের পাশাপাশি শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হয় উপহার সামগ্রী। গির্জা ও বিভিন্ন স্থাপনায় আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়।