বিপিএল স্পট ফিক্সিং তদন্তের সময়ই গুঞ্জন ছিল, মোহাম্মদ আশরাফুল জড়িত ছিলেন শ্রীলঙ্কার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লিগের (এসএলপিএল) ম্যাচ ফিক্সিংয়েও। অবশেষে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) সপক্ষে সুনির্দিষ্ট প্রমাণও নাকি পেয়েছে আইসিসির কাছ থেকে। এসএলসির একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এটি জানিয়েছে শ্রীলঙ্কান দৈনিক ডেইলি মিরর।
২০১৩ সালের ২৩ মে আশরাফুলের দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তা বিভাগ নিশ্চিত করেছে, ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট হওয়া রুহুনু রয়্যালস ও ওয়াইয়াম্বা ইউনাইটেডের মধ্যকার ম্যাচটি পাতানোয় জড়িত ছিলেন তিনিও। কিন্তু আশরাফুলের একার পক্ষে তো আর ম্যাচ পাতানো সম্ভব নয়! এর সঙ্গে নিশ্চয়ই শ্রীলঙ্কার স্থানীয় ক্রিকেটাররাও জড়িত ছিলেন। তারা কারা, সেটা খুঁজে বের করার প্রশ্নেই এখন ঝড় বইছে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে। কারণ গত বছরের নভেম্বরে আইসিসির বোর্ড সভায় নাকি এসএলসির সভাপতি জয়ন্থা ধর্মদাসা আইসিসির সঙ্গে একটি বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন। সে অনুযায়ী আশরাফুলের দেওয়া তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এসএলসির ম্যাচ পাতানো নিয়ে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। এসএলসিরই একটি সূত্র মিররকে বলেছে, ‘আশরাফুলের একার পক্ষে ম্যাচ পাতানো সম্ভব নয়। সেখানে নিশ্চয়ই আরও কেউ ছিল, সম্ভবত স্থানীয় খেলোয়াড়েরাই। কিন্তু এসএলসি যদি ওই চুক্তিতে সই করে, তারা এসব তথ্যপ্রমাণের ওপর নির্ভর করে আর কোনো তদন্ত করতে পারবে না।’
বিষয়টা নিয়ে এসএলসিকে অন্ধকারে রাখায় গত পরশু শ্রীলঙ্কার বোর্ড সভায় কড়া সমালোচনা হয়েছে ধর্মদাসার। যদিও ধর্মদাসা বলেছেন, বোর্ড সদস্যদের সবকিছু জানানোর আগে তিনি আইসিসির সভার কার্যবিবরণী পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। তা ছাড়া তিনি নাকি চুক্তিতে সই করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতির অনুরোধে। এ বিষয়ে জানতে কাল বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এসএলসির নির্বাহী কমিটির সদস্যরা চুক্তিতে সই না করার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছে মিরর। তাঁরা আইসিসির কাছে আশরাফুলের জবানবন্দির পূর্ণাঙ্গ কপি এবং ম্যাচ পাতানো সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্যপ্রমাণ চাওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিপিএলে ফিক্সিংয়ের অভিযোগে আশরাফুলকে প্রথমে আট বছরের জন্য বহিষ্কার করা হলেও পরে সেটি কমিয়ে করা হয় দুই বছরের স্থগিতাদেশসহ হয় পাঁচ বছরের। আকসুকে দেওয়া জবানবন্দিতে আশরাফুল বলেছিলেন, ভারতীয় এক বাজিকরের মাধ্যমেই ভারতীয় নাগরিক গৌরব রাওয়াতের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর, যিনি একই সঙ্গে বিপিএলের দল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস এবং এসএলপিএলের দল রুহুনা রয়্যালসের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১২ সালে গৌরবের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পরই এসএলপিএলে খেলার সুযোগ পান আশরাফুল।