যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা এমআইটির বিজ্ঞানীরা এমন একটি রোবট মাছ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন যা সমুদ্রের গভীরতম তলদেশ থেকে নানারকম তথ্য পাঠাবে ভূতলে। যুক্তরাজ্যের প্রকৌশলবিদ পাবলো এলভারাডো জানিয়েছেন এই মাছ গভীর সমুদ্রের এমন সব জায়গায় বিচরণে সক্ষম যেখানে আগের মাছগুলি প্রবেশই করতে পারত না। তিনি আরো জানিয়েছেন এই মাছ বানানোর খরচ বেশ কম। প্রকল্পে অর্থযোগানদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন কাজে এটি ব্যবহারের কথা ভাবছেন। স্পন্সররা মনে করেন কয়েকশ মাছ কোনো কোনো বড় সাগরে ছেড়ে দেওয়া হবে।
মাছগুলি প্রতিনিয়ত খবর পাঠাবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। এতে সমুদ্র তলদেশের অনেক অজানা তথ্যই পাওয়া যাবে যেগুলির জন্য মানুষ শত শত বছর ধরে অপেক্ষা করছেন। মাছগুলি যেমন স্বাভাবিক মাছের মতোই চলাফেরা করতে পারবে তেমনি এগুলিকে পরিচালনাও করা যাবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে। সমুদ্রে বিচরণ করা মাছ জাতীয় প্রাণি এগুলির সঙ্গে স্বাভাবিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করবে। তৈরি এসব মাছও প্রাকৃতিক মাছের সঙ্গে ভাব বিনিময়সহ ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারবে।
১৯৯৪ সালে এমআইটির বিজ্ঞানীরা প্রথম রোবটিক মাছ তৈরি করেন। এর নাম দেওয়া হয়েছিল রোবটুনা। তবে রোবটুনার পরিণতি হয়েছিল ডায়নোসরের মতো। একটা সময় পর এগুলি অস্তিত্ব সংকটে পড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। এগুলির সহন ক্ষমতাও ছিল কম। কিন্তু এবারের মাছগুলি তেমন হবে না। এসব মাছ তৈরিতে মাত্র কয়েকশ ডলার খরচ হবে। কালিফোর্নিয়া উপকুলে এসব মাছের প্রাথমিক মহড়াও সম্পন্ন হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন এই মাছগুলির আকার হবে নিম্নে ৫ ইঞ্চি থেকে উর্ধ্বে ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত। একটি পলিমার কাভারের মধ্যে এর যন্ত্রাংশগুলি ঢাকা থাকবে। ফলে এগুলি ওয়াটারপ্রুফ থাকবে সবসময়। একেবারে স্বাভাবিক মাছের মতোই। যে কোনো পানিতে এগুলি কার্যকরভাবে ভেসে বেড়াতে পারবে আবার তলদেশেও ডুব দিতে পারবে।
প্রকল্পের অন্যতম গবেষক কামাল ইউসেফ টওমি বলেন, গবেষণাকালে এই মাছগুলিকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। ঝরণার পানিতে এগুলোকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে ডুবে থাকতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মাছগুলিকে অবমুক্ত করার প্রস্তুতি চলছে বলে টওমি জানিয়েছেন।
এমআইটির সফল এই প্রকল্পের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী খুবই আগ্রহী বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তারা এই মাছ দিয়ে সমুদ্রের তলদেশের তথ্য সংগ্রহ ছাড়াও যুদ্ধাস্ত্রের গতিবিধি জানতে আগ্রহী। তারা প্রকল্পের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছেন।
Posted by Emon