ফ্রান্সে গত সপ্তাহে পর পর কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদার করতে নজিরবিহীন এক পদক্ষেপ নিয়েছে দেশেটির সরকার। ‘ঝুঁকিপূর্ণ ও স্পর্শকাতর’ জায়গাগুলোতে মোতায়েন করা হবে সেনা ও পুলিশ বাহিনীর প্রায় ১৫ হাজার সদস্য। দেশটিতে সাম্প্রতিক সময়ে একসঙ্গে এত সেনা বা পুলিশ মোতায়েনের নজির নেই। খবর এএফপি ও বিবিসির।
ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে ব্যঙ্গ করে বিশ্বব্যাপী সমালোচিত হওয়া শার্লি এবদোর প্যারিসের কার্যালয়ে গত বুধবার বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত হন পত্রিকাটির প্রধান সম্পাদকসহ আট সাংবাদিক, দুই পুলিশ সদস্য ও অন্য দুজন। পরের দুই দিন বৃহস্পতি ও শুক্রবার আরও দুটি সন্ত্রাসবাদী হামলায় নিহত হন আরও পাঁচজন। এরপর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংহতি জানিয়ে গত রোববার দেশজুড়ে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ শোভযাত্রা করে।
ফরাসি প্রতিরক্ষামন্ত্রী জ্যঁ-ইভ লি দ্রিয়ঁ গতকাল সোমবার নিরাপত্তাবিষয়ক একটি জরুরি বৈঠকের পর বলেন, ‘আমরা আগামীকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থানগুলোর সুরক্ষা দিতে ১০ হাজার লোক নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের মাটিতে এই প্রথম এত বড় পরিসরে আমাদের সেনাসদস্যদের নিযুক্ত করা হচ্ছে।’ ‘নিরাপত্তা হুমকি এখনো বর্তমান’ থাকায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে দেশজুড়ে ইহুদি বিদ্যালয় ও প্রার্থনালয়গুলোর নিরাপত্তায় পুলিশ বাহিনীর অন্তত পাঁচ হাজার সদস্য মোতায়েনের ঘোষণা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল থেকেই তাঁদের মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁরা দেশজুড়ে কমবেশি ৭১৭টি বিদ্যালয় এবং বিভিন্ন ইহুদি স্থাপনার নিরাপত্তা দেবেন।
ফরাসি প্রধানমন্ত্রী মানুয়েল ভাল গতকাল বলেন, হামলাকারীদের একজন আমেদি কোলিবালি, যিনি গুলি করে প্যারিসে একজন নারী পুলিশ সদস্য ও একটি সুপার মার্কেটে চার ইহুদি ক্রেতাকে হত্যা করেছিলেন, তিনি অন্যদের কাছ থেকে সহায়তা পেয়েছিলেন। তিনি ফরাসি বেতারকে বলেন, ‘আমি এর বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে এসব বর্বর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আমরা মনে করছি, এসব দুষ্কর্মের সহায়তাকারীরা রয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।