মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাবার মৃতদেহের পাশে দাঁড়িয়ে ‘আমাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়ে আসছিল প্রতিবেশী জসিম। জসিম আগেও তিনটি বিয়ে করেছে। তাই আমার বাবা বিয়েতে রাজি হননি। এ কারণে জসিমই আমার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। আমি ওই লম্পটটার বিচার চাই।’ অভিযোগ করেন সেলিনা আক্তার। গত সোমবার গভীর রাতে রাজধানীর খিলক্ষেতে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে দগ্ধ হন সেলিনার বাবা গণি মিয়া (৬৫)। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
নিহত গণি মিয়ার মেয়ে সেলিনা আক্তার অভিযোগ করছেন, বিয়েতে রাজি না হওয়ায় জসিম ও তার তৃতীয় স্ত্রী দুধনা বেগম পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তার বৃদ্ধ বাবাকে।
গণি মিয়ার স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান, খিলক্ষেত পাতিরা টেম্পুস্ট্যান্ড এলাকায় তাদের বাড়ি। তাদের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। ছোট মেয়ে সেলিনাকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে আসছিল জসিম, একপর্যায়ে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় সে হুমকি দিয়ে আসছিল। গত সোমবার দুপুরে এলাকাবাসীর সামনে জসিমের তৃতীয় স্ত্রী দুধনা বেগম তাদের বাড়িতে এসে হুমকি দেন। এ সময় আয়েশার সঙ্গে দুধনা বেগমের ঝগড়া হয়।
এরপর সোমবার রাত ২টার দিকে গণি মিয়া বাসার বারান্দায় ঘুমন্ত অবস্থায় চিৎকার দিয়ে উঠেন। স্বজনরা গিয়ে দেখেন তার শরীরে আগুন জ্বলছে। এরপর তাকে দগ্ধ অবস্থায় ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক গণি মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
আয়েশা বেগম বলেন, ‘জসিম ও তার স্ত্রী দুধনা বেগম পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি তার বিচার দাবি জানাই। আমরা থানায় মামলা করবো।’
এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আগুনে দগ্ধ নিহত বৃদ্ধ গণি মিয়ার লাশ ময়নাতদন্তের আগে বলা যাচ্ছে না তাকে হত্যা করা হয়েছে কি না। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- ওই বৃদ্ধ মশারির আগুনে পুড়েছেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যর মামলা হয়েছে। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’