বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনা আমতলী উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের ছুরীকাটা গ্রামে এআরবি ইটভাটায় ড্রাম চিমনির মাধ্যমে দেদারছে কাঠ পুড়িয়ে পরিবেশ দূষন করে ইট তৈরী করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবেশ আইন অমান্য করে অনুমোদনহীন অবৈধ এই ইটভাটায় অবাধে ইট তৈরী করে চলছে রমরমা বানিজ্য। এ ইটভাটায় অবৈধভাবে ইট পোড়ানো হলেও প্রশাসনের তরফ থেকে নেই কোন জোড়ালো নজরদারী। তবে ইটভাটার মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছেননা এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, আমতলী ইউনিয়নের ছুরীকাটা এআরবি ব্রীকস এর মালিক কোন প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ আইনে সম্পূর্ন নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে কাঠ পুড়িয়ে তৈরী করছে ইট। ইট পোড়ানোর জন্য পুরো ভাটার চারপাশ জুড়ে রয়েছে প্রায় কয়েক’শ মন জ্বালানী কাঠ। এই কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরীর কথা জানালেন ভাটায় কর্মরত শ্রমিকরা। কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরীতে এলাকার পরিবেশ দুষন হচ্ছে, এলাকার সবার চোখে পড়লেও প্রশাসনের তা চোখে পড়ছেনা বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক ব্যক্তি বলেন, এ ইটভাটার পার্শ্ববর্তী জমির ফসলই শুধু নষ্ট হচ্ছেনা, এর প্রভাবে আশপাশের বসতবাড়ীর বিভিন্ন প্রজাতির ফল গাছের ফল ঝরে পড়ে গাছ মরে যাচ্ছে। আমরা নিরুপায়, শুধু দেখেই যাচ্ছি, কিছু বলার সাহস পাইনা, কারন ভাটার মালিক প্রভাবশালী। আমরা দরিদ্র কৃষক, তার বিরোধিতা করে এলাকায় থাকতে পারবোনা বলেই নিশ্চুপ হয়ে থাকি। এ ব্যাপারে এআরবি ব্রীকস এর মালিক মামুন তালুকদার ইট তৈরীতে কাঠ পোড়ানোর সত্যতা স্বীকার করে তিনি জানালেন, ড্রাম চিমনি শুধু আমি একা নই, সবাই ব্যবহার করে। এজন্য কিছুদিন আগে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে এসকল ড্রাম চিমনির ইটভাটাগুলোতে ৬০, ৮০ হাজার ১ লাখ টাকা জরিমানা করে গেছে। আমাকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। আমি সে টাকা জমা দিয়ে দিয়েছি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগের পরিচালক সুকুমার চন্দ্র বিশ্বাস জানালেন, কিছুদিন পূর্বে বরগুনা আমতলীর বিভিন্ন ইটভাটাগুলো পরিদর্শন করে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদনহীন ইটভাটাগুলোয় জরিমানা করেছি এবং একই সাথে ড্রাম চিমনি ভেঙ্গে দিয়েছি। আসল ব্যাপার হলো আমরা জরিমানা করে এবং ড্রাম চিমনি ভেঙ্গে দিয়ে চলে আসার কিছুদিন পরেই একই নিয়মে পুনরায় শুরু হয়ে যায় এ সকল অবৈধ ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম। এটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের একধরনের অসৎ প্রবনতা। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক টিম সবসময়ই মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের তরফ থেকে কোন প্রকার ছাড় দিচ্ছিনা।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা দেবেন্দ্র নাথ উরাও জানান, জেলার সমস্ত ইটভাটার নিয়ন্ত্রন জেলা প্রশাসক মহোদয়ের। তাই নিয়ম বহির্ভূত এসকল ইটভাটগুলোর উপর আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা তিনিই রাখেন। তবে জেলা প্রশাসক মহোদয় যদি আমাকে এদের ব্যপারে স্পেশাল মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার নির্দেশ দেন তাহলেই আমি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি।
এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম জানান, আমরা অবিলম্বে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এ সকল অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।