স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে একাই দুই ছেলে মেয়েকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেন বাবা টিপু সুলতান। দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পরও দ্বিতীয় বিয়ে করেননি তিনি। কিন্তু সেই সন্তানকে শেষ রক্ষা করতে পারেননি টিপু সুলতান। ছেলে ওয়াশিকুর রহমান বাবু কে হারিয়ে তিনি এখন সংজ্ঞাহীন।
সোমবার সকালে অফিসে যাওয়ার সময় তিন যুবক রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ি এলাকায় ওয়াশিকুরকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এইদিন সকালেই লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর হাজীপুর গ্রামের বাড়িতে যায় টিপু সুলতান। এরপর মোবাইলের মাধ্যমে তিনি খবরটি জানতে পান। এরপর তিনি বার বার সংজ্ঞা হারান।
ওয়াশিকুরের মৃত্যুর খবর তার নিজ গ্রামে ছড়িয়ে পড়ার পর আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙে পড়েন। চলছে শোকের মাতম।
ওয়াশিকুরের একমাত্র বোন আসরাফী সুলতানা সিমু কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, ২০ বছর আগে আমরা মা হারাই, বাবা আমাদের ভাই-বোন দু’জনকে কোলেপিঠে অনেক কষ্টে মানুষ করেছেন। ছোটবেলা থেকে ভাইয়া (ওয়াশিকুর) খুব মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের ছিল। সে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল না।
তিনি আরো জানান, তিনি শুনছেন ব্লগে একটু লেখালেখি করত ওয়াশিকুর। এজন্য জঙ্গি সংগঠনের কেউ এ হত্যা করতে পারে। এ ছাড়া আমার ভাইয়ের কোনো শত্রু ছিল না।
ওয়াশিকুরের বোন আরো জানান, ওয়াশিকুর রহমান ২০০৪ সালে রামগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর চন্ডিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে থেকে এসএসসি পাশ করেন। এরপর তিনি বাবা কাছে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকার তেজগাঁও কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন।
গত একবছর ধরে ঢাকাস্থ মতিঝিল ফারইস্ট ট্রাভেলস অ্যাভিয়েশনে কর্মরত ছিলেন। তার আচরণ খুব ভালো ছিল, তার সাথে কখন ও কারো মতনৈক্য হয়নি। এ রকম ছেলেকে মেরে ফেলা মেনে নেয়া কষ্টকর।