এক অন্যরকম পয়লা বৈশাখ উদযাপন করলো দেশের উত্তরের সবশেষ জেলা পঞ্চগড় এবং সীমান্তের ওপারের কয়েক হাজার বাঙালি। মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে সকালে কাটাতারের বেড়া মাঝখানে রেখে দুই বাংলা মানুষেরা আনন্দ ভাগাভাগি করেন।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা সীমান্তে বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনে মিলিত হন দুই বাংলার মানুষেরা। মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত চলে এই মিলন মেলা। কাঁটাতারের বেড়ার এপারে কয়েক হাজার বাংলাদেশি। ওপারে কয়েক হাজার ভারতীয় বাঙালি। কেউ কাঁটাতারের ওপর দিয়ে বিস্কুট, চানাচুর, ঠাণ্ডা পানীয়র বোতল, ফলমূল ছুঁড়ে দিচ্ছেন একে অপরকে। স্বজন আর পরিচিতদের দেখে অনেকে কেঁদেও ফেলেন। এ কান্না বিরহের নয়, মধুর মিলনের।
সীমান্ত এলাকার মানুষেরা জানিয়েছেন, ভোর থেকেই দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষেরা এসে জড়ো হন এই সীমান্তে। দীর্ঘদিন বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা মানুষেরা এক অপরের সঙ্গে মিলিত হবার এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না কেউই। স্বজনদের এই মিলনমেলা এখানে এক বিরল দৃশ্যের জন্ম দেয়। ভারতের শিলিগুড়ি, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এমনকি আসাম এলাকা থেকেও অনেকে ছুটে আসেন এখানে। জানালেন, পাসপোর্ট ভিসা করতে পারেন না বলে বছরে এই একটি দিনে সীমান্তে এসে দেখা করেন আত্বীয়স্বজনের সাথে।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৪৭ সালে দেশ বিভক্তির পর তাদের এদেশের অনেক আত্মীয়-স্বজন ভারতীয় অংশে পড়ে। ফলে অনেকেরই যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়।
ভারতের খালাপাড়া ক্যাম্পের (কোম্পানী কমান্ডার) হাবিলদার বি যাদব বলেন, আমরা স্থানীয় মানুষের অনুরোধে বিডিআরের সঙ্গে আলোচনা করে এ উদ্যোগ নিয়েছি।
পঞ্চগড় ১৮বিজিবি ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তা এটিএম নাজমুল হুদা জানান, স্থানীয় মানুষের অনুরোধে এবং বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করে কাঁটাতারের বেড়ার পাশে জিরো লাইনে স্বল্প সময়ের জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।