সমুদ্রপথে মানবপাচারের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ অভিযানে কক্সবাজারে ৪ দিনে ১৩ জন মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ সোমবার সকালেও টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বড় ডেইল এলাকা থেকে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করে পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা হলেন- বড় ডেইল এলাকার আলী হোসেনের পুত্র খাইর হোসেন (৪৫), হাজি আবদুল কাদেরের পুত্র আবদুর রহমান (৩৫) ও আলী আহমদের পুত্র আলী হোসেন (৩০)। এর আগে গতকাল রবিবার মহেশখালীর বহুল আলোচিত মানব পাচারকারী মমতাজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের মৃত করিম সিকদারের পুত্র।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদ জানান, মানব পাচারকারি ও তাদের দালালদের আটক করতে শুক্রবার থেকে জেলাব্যাপী বিশেষ অভিযান চলছে। এ পর্যন্ত জেলায় ১৩ জন শীর্ষ মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, গত শুক্রবার এবং রবিবার অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের সাথে মানব পাচারকারীদের দুই দফা বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে ৪ শীর্ষ মানবপাচারকারী নিহত হয়েছে। অন্যদিকে আহত হয়েছে পুলিশের ৭ সদস্য।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদ জানান, নিহত ব্যক্তিরা স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মানবপাচারকারী। তারা মানব পাচার করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তাদের রয়েছে বিশাল নেটওয়ার্ক। এই শীর্ষ পাচারকারীদের ছত্রছায়ায় হাজার হাজার মানুষ থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পাচার হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ জানান, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক মানবপাচারকারী ও তাদের দালালরা সমুদ্র পথে মানব পাচারে সক্রিয় রয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চিহ্নিত এসব পাচারকারীদের গ্রেপ্তারে জেলাব্যাপী বিশেষ অভিযান শুরু করেছে। তিনি আরো জানান, পুলিশের ৮টি বিশেষ দল জেলাব্যাপী অভিযান পরিচালনা করছে। এছাড়া র্যাব ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা এই ব্যাপারে কাজ করছে।
তিনি বলেন, জেলায় মানব পাচারের সাথে জড়িতদের তালিকা তৈরি করে তাদের গ্রেফতার করার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
এদিকে গতকাল রবিবার কক্সবাজার জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির অনুষ্ঠিত সভায় মানব পাচার রোধে টাস্ক ফোর্স গঠনের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন বলেন, মানবপাচারের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নেবে। মানবপাচার দেশের প্রধান সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। এতে আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই মানবপাচার রোধে আইন প্রয়োগকারি সংস্থাকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।