মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জের তাড়াইল থানার রাজাকার কমান্ডার পলাতক সৈয়দ মো. হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর মামলার রায় ঘোষণা শুরু করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মোট ১২৫ পৃষ্ঠার রায় পাঠ করছেন বিচারকরা। আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১টা থেকে রায়ের প্রথম অংশ পাঠ করছেন বিচারক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক। রায়ের দ্বিতীয় অংশ পাঠ করবেন বিচারক প্যানেলের অপর সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। সবশেষে রায়ের চূড়ান্ত অর্থাৎ সাজার অংশ পড়বেন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
এর আগে ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনালে আসেন বিচারকরা। বেলা ১১টা ১১ মিনিটে এজলাসকক্ষে আসন নেন তারা। তাড়াইলের রাজাকারের দারোগা নামে পরিচিত হাসান আলীর বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুট, আটক ও নির্যাতনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩ এর ৩(২)/এ, ৩(২)/সি, ৩(২)/ডি, ৩(২)/জি ও ৩(২)/এইচ এবং ২০(২) ধারা অনুসারে গঠন করা এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ২৪ জনকে হত্যা, ১২ জনকে অপহরণ ও আটক এবং ১২৫টি ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ।
অভিযোগে বলা হয়েছে, পিতা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এবং কিশোরগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোসলেম উদ্দিনের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করে কিশোরগঞ্জ মহকুমার তাড়াইল থানায় রাজাকার কমান্ডার হিসেবে নিয়োজিত হন সৈয়দ হাসান আলী। তার অন্য এক ভাইও রাজাকার ছিলেন। তার নির্দেশেই তাড়াইলে হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে।
রাজাকার কমান্ডার হিসেবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকেও মানবতাবিরোধী অপরাধ কর্মকাণ্ডে সকল প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা করতেন তিনি। হাসান আলীদের মূল বাড়ি ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। মুক্তিযুদ্ধের অনেক আগে থেকেই কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে এসে বসবাস শুরু করেছিলেন তারা। মুক্তিযুদ্ধের পর কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে না থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাছিহাতা গ্রামে বসবাস করতেন হাসান আলী। গত বছরের ৩ এপ্রিল ট্রাইব্যুনাল-১ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর থেকে পালিয়ে আছেন তিনি