সিয়াম মেহরাব এর বুকফাটা আর্তনাদ, “ভাটিখানা থেকে সাইকেলে আসতেছিল আমার বাবা। নিরিবিলি যায়গায় বাবাকে নামিয়ে সাইকেল লাত্থি মেরেছে। মাথায় কোপ দিয়ে মাথার ঘিলু বের করে দিছে, পায়ের রগ কেটে দিছে। বাবা হাত দিয়ে ঠেকাবার অনেক চেস্টা করছিল। বাম হাতের শেষ দুই আঙুল কেটে পরে যায়। ডান হাতের মাঝখান পর্যন্ত শেষ। আমার বাবার ঘাড়ের রগ কেটে দিছে। বাবা যে সামনে এগিয়ে হেল্প চাইবে তার উপায়টুকুও দেয়নাই।অনেক কস্টে বাবা বালির মাঠে গিয়া পৌঁছায়।সেখানে চিৎকার করে। ওইখানে গিয়ে আরো কোপায় আরো বাবাকে। বুকে ঢুকিয়ে দিয়েছে কলিজা পর্যন্ত। কলিজা ছিড়ে ফালাফালা হয়ে গেছে বাবার। কোমড়,হাত, পা, ঘাড় কিছু বাকি রাখেনাই আমার বাবার। এত কস্টে মারল আমার বাবারে। বাঁচার জন্য কত ছটফট করছিল বাবা আমার। ৩-৪ জনে মিলে এভাবে আমার বাবারে শেষ করে দিল।”
নিহতের পরিচয়: নিহতের নাম মো: আবু জাফর (৪০), তিনি বরিশাল নগরীর ২ নং ওয়ার্ড সিলেট ফ্যাক্টরী সংলগ্ন এলাকার মৃত আউয়াল মিয়ার পুত্র।
ঘটনার বিবরন: হত্যাকারী মো: নাছির (২৪), পিতা নুরুজ্জামান নিহত মো: আবু জাফর এর দোকানের কর্মচারী ছিলো। ঘটনার দুইদিন আগে দোকানের হিসাব মিলাতে গিয়ে মো: আবু জাফর হিসাবে প্রায় দুই লক্ষ টাকার গরমিল পেলে কর্মচারী মো: নাছির কে জিজ্ঞাসাবাদ কালে জানতে পারেন যে মো: নাছির সেই টাকা সরিয়েছে। তখন তিনি নাছিরকে একটা চড় মারেন। এরপর মো: নাছির দুইদিন কাজে অনুপস্থিত থেকে গত শুক্রবার ১৬ ই অক্টোবর ২০১৫ ইং তারিখ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নগরীর কাউনিয়া থানাধীন নগরের পুল নামক স্খানে তিনজন সংগী নিয়ে প্রকাশ্যে মো: আবু জাফরকে এলোপাথারী কুপিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে উল্লাস করতে করতে ঘটনাস্থান ত্যাগ করে।
পরে তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করে চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী মুমুর্ষ অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে মো: আবু জাফরকে নিয়ে এ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়া হয়। পরে ঢাকা নেয়ার পথে মাওয়া ফেরি পার হওয়ার পরে ভোর ৫ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পূর্বে তিনি বহু লোকজনের উপস্থিতিতে পুলিশের কাছে উনার উপর হামলাকারী নাম হিসাবে তার দোকানের কর্মচারী মো: নাছির এর নাম নিশ্চিত করেন।
এই হত্যার খবর জানাজানি হলে নগরীর জনতা এবং ব্যাবসায়ী বৃন্দ ক্ষোভে ফেটে পরে। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায় যে, নিহতের পরিবার, নগরবাসী সহ নিহতের পূত্র সিয়াম মেহরাফ এই হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানালে বিষয়টি সিয়াম মেহরাফ এর ফেসবুক বন্ধুরা জানতে পারলে তারা এর প্রতিবাদ জানিয়ে একের পর স্টাটাস দিলে বিষয়টি পুরো দেশের ফেসবুক ব্যাবহারকারীদের মনে দারুণভাবে প্রভাব ফেলে। ইতিমধ্যে কয়েক লক্ষ ফেসবুক ব্যাবহারকারী এর প্রতিবাদ এবং খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন স্টাটাস এবং পোস্ট দিতে থাকে। আশংকা করা হচ্ছে বিষয় টি অনলাইন মিডিয়ায় দারুন প্রভাব বিস্তার করবে।