অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের দায়ে এক বাসের চালকের সাজার জেরে রাজধানী বাসী রোববার দিনভর গণপরিবহন সংকটে ভুগেছে। দিনভর অসহনীয় এই ভোগান্তিতে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন অনেকেই। মিরপুরে এক বাস চালককে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিলে বাস চালানো বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। কোন ঘোষণা ছাড়াই এই ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়ে রাজধানী। বিকেলে শ্রমিকদের সঙ্গে কয়েকদফা বৈঠকের পর এই ধর্মঘট তুলে নেয় শ্রমিকরা। জ্বালানী বিশেষজ্ঞ কল্লোল মুস্তোফা এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে লেখেন, ‘বাসে বেশি ভাড়া নেয়ার দায়তো বাস মালিকের।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘তাহলে মিরপুর রোডে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বাসমালিককে জরিমানা বা কারাদণ্ড না দিয়ে শ্রমিক ও হেলপারদের কারাদণ্ড দেয়ার উদ্দেশ্য কি? শ্রমিকদের ক্ষেপিয়ে ধর্মঘট ডাকিয়ে এইটা দেখানো যে, সরকার চেষ্টা করেছে, কিন্তু শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারনে ভাড়া নিয়ন্ত্রন করা গেল না! অথচ বাসের বাড়তি ভাড়া নেয়ার জন্য মালিকদের জরিমানা, কারাদণ্ড বা লাইসেন্স বাতিল করা হলে মালিকরা বাধ্য হতো ঠিকঠাক ভাড়া অাদায় নিশ্চিত করতে। কিন্তু মালিক শ্রেণীর সরকার সে পথে যাবে কেন!’ এদিকে ঢাকার নাগরিকদের অ্যাক্টিভিজম প্লাটফর্ম আমরা ঢাকা তাদের ফেসবুক পাতায় সকলের মতামত চেয়েছেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের নির্বাচনী প্রচারণা চালানো এই পেজটিতে বলা হয়, ‘আমাদের গণপরিবহন ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে।’ ফেসবুকে এ বিষয়ে পাঠকের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়। তাতে পাঠকের নানা মন্তব্য থেকে কয়েকটি প্রকাশ করে আমার ঢাকা। নাজনীন সুলতানা লিখেছেন, ‘চাকরিজীবীদের জন্য সকালে অফিসে আসা একটা বিরাট ঝক্কির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বাস ভাড়া বাড়ানোর পর। সব বাসই কেবল গেটলক করে অল্প যাত্রী নিয়ে আগে থেকেই ঠেসে থাকে, দরজা বন্ধ থাকে, মাঝপথ থেকে ওঠাই যায় না। প্রায় ঘন্টামত দাঁড়িয়ে থেকে কোন বাসে উঠতে না পেরে সিএনজিও খুঁজে পাই না। অবশেষে রিকশায় করে ঘণ্টাখানেক সময় লাগিয়ে অফিসে এসে দেরীতে পৌঁছাই। এই হয়েছে আজ কয়দিনের রুটিন। এই কঠিন অবস্থা কেবল আমারই নয়, অনেককেই পোহাতে হচ্ছে এই দুর্ভোগ। বিশেষ করে অফিসে যাওয়া বা অফিস ছুটির পর বাড়ির ফেরার টাইমটাতে অসহনীয় অপেক্ষা বাসের জন্যে। রাস্তায় শ’য়ে শ’য়ে মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে। যথাযথ কর্তৃপক্ষ কি একটু দয়ার নজর দেবেন আমাদের ভুক্তভোগীদের দিকে?’ সর্দার আমিন লিখেছেন, ‘অযৌক্তিক বাস ভাড়া আদায় করবে আর যাত্রীরা প্রতিবাদ করলেই বাস ষ্ট্রাইক। জনগণ জিম্মি। সরকার সর্বদাই জনগণের বিপক্ষে। কোন একশন নেই।’ ছবি: আল আমিন মেহেদী (ফেসবুক) আল আমিন মেহেদী একটি ছবি পোস্ট করে তার ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘এই হচ্ছে ঢাকার বিখ্যাত ৬নং বাস। ফার্মগেট থেকে নেয়া ছবি। …বলুন দেখি কত পার্সেন্ট যাত্রী উঠতে পারবে? যে মহিলারা দাঁড়িয়ে আছে তারা কি উঠতে পারবে? যারা উঠতে পারবে তাদের কি অবস্থা হবে? এর হিসেব দেখতে হলে ফার্মগেট চলে আসুন।’