দেশের ৮৭ ভাগ যানবাহন বাড়তি ভাড়া আদায় করছে বলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বরাতে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলা। ১৭০ টি রাস্তায় পর্যবেক্ষনের বরাতে এই তথ্য দিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বিবিসির ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, সোমবার রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে এক গণশুনানির আয়োজন করেছে সমিতি। সংগঠনটির মহাসচিব মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী বিবিসিকে বলেন, ‘জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে গণপরিবহনের ভাড়া ইচ্ছেমতো বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় যাত্রীদের সেবার বদলে নানা হয়রানির শিকার হতে হয়।’ মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী মতে, ‘ঢাকায় যে গণপরিবহন চলছে এগুলোর সেবার মান অত্যন্ত নিম্নমুখী। এই গণপরিবহনে যাত্রাদের যাতায়াত করার ন্যূনতম পরিবেশ নেই। প্রতিবার সরকার যে পরিমাণ ভাড়া বাড়ায় তার তুলনায় চালক ও মালিকেরা বেশ কয়েকগুণ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। এতে যাত্রীদের অবস্থা অসহনীয় হয়ে পড়ছে। যাত্রীদের কষ্টগুলো, তাদের অভিযোগগুলো সরকারের কাছে তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরী আর তাই এই গণশুনানি’। এদিকে, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে কয়েকটি বাসের চালককে জরিমানা ও সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে গতকাল সারাদিন অবরোধ পালন করেছে পরিবহন শ্রমিকেরা। এ প্রসঙ্গে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে চলমান গণপরিবহনগুলো আইনকানুন কিছুই তোয়াক্কা করেনা। আর এখানে মালিকদের এমন একটা শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে যারা সরকারের কোননা কোন রাজনৈতিক আশ্রয়ে দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে’। তিনি আরও বলেন, ‘এখানে আইনের সম্পূর্ণ শিথিলতা রয়েছে। আর আইনের প্রয়োগ যখন হঠাৎ করে করা হয় তখন এ ধরনের অবরোধ বা ধর্মঘটের ঘটনা আমরা প্রায়ই দেখি’। তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে পরিবহন মালিকরা যেমন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে, তেমনি সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে তখনও তার প্রতিক্রিয়ায় বাস বন্ধ করে সাধারণ যাত্রীদের হয়রানির মধ্যে ফেলে তারা তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়। এখানেও সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি’। অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাবার পর থেকেই এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ১৭০ টি রাস্তায় এক পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখেছে ঢাকা শহরের প্রায় ৮৭ ভাগ যানবাহন যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।