আনোয়ার হোসেন রানা,ধামরাই প্রতিনিধিঃ
এক জন পুলিশ কর্মকর্তার মহৎউদ্দ্যোগেই পালটে গেল সাভারের বেদেপল্লীর অবহেলিত মানুষ গুলোর জীবণ । এই মহৎউদ্দ্যোক্তা ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) হাবিবুর রহমান। সাভারের এই বেদেপল্লীীর গোড়াপত্তন আজ থেকে ২শত বছর আগে, বংশী নদীর পারে পোড়াবাড়ি, আমলপুর ও কাঞ্চনপুর এই তিনটি গ্রাম নিয়ে সাভারের বেদেপল্লী। প্রায় বিশ হাজান মানুষের পল্লীীএটি । বর্তমান প্রজন্ম বাপ-দাদার ভিটা এখানো আকড়ে ধরে আছে। নৌকায় নৌকায় যাযাবর জীবনের এখন অনেকেই ইতি টেনেছে । কালের পরিবর্তনের সাথে সাথে তাদেরর ও জীবনধারায় পরিবর্তন এসেছে। তারাও নিজেদেরকে সক্ত করে বাপ-দাদার ভিটা এখানো আকড়ে ধরে আছে। এখন আর তাদের সাপের খেলা দেখানো, দাঁতের পোকা ফেলা, তাবিজ-কবজ দেওয়া, শিঙা ফুঁকে বাতের ব্যথার নিরাময় করতে হয়না শহরে-বন্দরে, গ্রামেগঞ্জে। ধীরে ধীরে তারাও আধুনিক হতে শুরু করেছে, শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়েছে তাদের মাঝে। তারা যে বেদে, সবার চোখে তাদের ভিন্ন সমাজ, ভিন্ন পল্লী, তারা ভিন্ন জাতের মানুষ। যেন আলাদা গ্রহের জীব তাই জীবন বাঁচাতে শুরু হয় মাদকের ব্যবসা। বেদেপল্লী হয়ে ওঠে মাদকপল্লী জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই পল্লী থেকেই মাদক সরবরাহ হতে শুরু করে। তাইতো শুরু হয় পুলিশের তৎপরতা। কিন্তু পুলিশ বেদেদের ধরে শাস্তি দিয়েও কমাতে পারেনি মাদক ব্যাবসা । তাই এক সময়ে সাভারে বেদেপল্লীতে আসেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) হাবিবুর রহমান। তিনি ভাবেন তাদের জীবণটাকে যদি পাল্টে দেওয়া যায় তবেই বন্ধহতে পারে এই ভয়ানক মাদক ব্যাবসা। তাই তিনি কাউকে শাস্তি না দিয়ে বরং সরদারসহ বেদেদের আমন্ত্রণ জানান এক আলোচনা । বেদেরা আসে, আলোচনায় অংশ নেয়। বেদেরা স্বীকার করে নেয় নিজেদের দোষ। সমাজে মিশে সহজ-স্বাভাবিক পেশা বেছে নিতে পারছে না বলেই এক প্রকার বাধ্যহয়েই মাদক ব্যাবসা করছেন বলে স্বীকার করেন বেদে সরদার। বেদেরা অজ্ঞিকার করে, তারা অন্য মানুষের মতো কাজ পেলে তারাও সুন্দর জীবনে ফিরে যেতে পরবে ফলে মাদক ব্যাবসা ছেড়ে দিবে। এসপি হাবিবুর রহমানে নিজ উদ্দ্যোগে শুরু হয় তার বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ বেদেদের স্বাভাবিক পেশায় নিয়ে যেতে।। তার আহবানে এগিয়ে আসে ব্র্যাক। পুলিশের সহায়তায় ব্র্যাক বেদে সম্প্রদায়কে ভিন্ন পেশার প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করে। বেদে তরুণ দের বিনা মূল্যে গাড়ি চালনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ১২ জন, তবে পরবর্তী সময়ে আগ্রহী সকল যুবক প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। বেদে নারীদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন এক পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠানের মালিক নানজিবা নাজনিন। তিনি বেদে সম্প্রদায়ের ১০৫ জন নারীকে সেলাই মেশিন কিনে দিয়ে সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন তিনি। বেদেপল্লীর কাছেই স্থাপন করেন তার তৈরি পোশাকশিল্প কারখানার একটি শাখা। সেখানে কাজ করেন প্রায় ২শ নারী কথা হয় সালমা ও অকলিমা বেগমের সঙ্গে। বেদে সম্প্রদায়ের এই দুই নারী আগে সাপখেলা দেখাতেন। এখন আয় বেড়েছে, শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নতুন জীবনে তারা বেশ আনন্দিত। এখন তাদের আয় বেরেছে প্রত্যেকে তিন থেকে চার শ টাকা থাকছে। যোগাযোগ করেছিলাম এসপি হাবিবুর রহমানের সাথে কেমন লাগছে এমন মহৎকাজ করে তিনি বলেন মহৎকাজ কিনা যানিনা, তবে তাদের জন্য কিছুযে করতে পারছি এটা আমাকে ভিষণ অনন্দদেয়।