এতটা উদ্বেলিত, আনন্দিত, উচ্ছ্বসিত কোনোদিনই দেখা যায় নি কার্লোস তেভেজকে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দু’বার, ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে একবার এবং ইতালিয়ান সিরি আ’য় জুভেন্টাসের হয়ে দু’বার দেশটির লীগ শিরোপা জিতেছেন। কিন্তু এত বড় লীগের শিরোপার চেয়ে আর্জেন্টিনার লীগ শিরোপাই তাকে সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চিত করলো। রোববার তার বাল্যকালের ক্লাব বোকা জুনিয়র্স আর্জেন্টিনার লীগে নিজেদের ৩১ তম শিরোপা নিশ্চিত করেছে। এই শিরোপা জয়ে অবদান রাখতে পেরে কার্লোস তেভেজ যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন তাকে পাগলামিও বলা যায়। টাইগারের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে যেন পাগল হয়ে গেলেন অর্জেন্টিনার এ ফুটবলারর। পুরো মাঠ দৌড়ে দর্শকদের ভালবাসার জবাব দিলেন। মাঠের মধ্যে নিজের সন্তানকে নিয়ে দৌড়ান। আর লীগের শিরোপা হাতে নেয়ার পর তার উচ্ছ্বাস ছিল বাঁধভাঙ্গা। লাফালে লাফাতে শিরোপা নিয়ে উঠে যান গোলবারের ওপরে। ক্রসবারে ওপর ওপর বসে জালের ওপর পা রেখে শিরোপা উঁচু করে ধরে নাচানাচি করেন অনেক্ষণ। তার উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছিল, ক্যারিয়ারে প্রথম কোনো শিরোপা জিতলেন। তবে তার এ উচ্ছ্বাসের কারণে বুঝা গেল তার কথায়। স্মৃতিকাতর তেভেজ চিৎকার করে বলতে থাকেন’ আমি ফিরে এসেছি, আমি ফিরে এসেছি। আমি ফিরতে পেরে খুশি, আমি আনন্দিত। খুশিতে আমি কথা বলতে পারছি না।’ ৩১ বছর বয়সী তেভেজের এত উচ্ছ্বাস আসলে আবেগের। পেশাদার ক্লাব ফুটবল তিনি শুরু করেছিলেন আর্জেন্টিনার এ ক্লাবটির হয়ে। ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বোকা জুনিয়র্সেই খেলেন তিনি। ২০০৩ সালে ক্লাবটিকে আর্জেন্টিনার লীগ শিরোপা জেতান। এরপর ব্রাজিলের ক্লাব করিন্থিয়ান্স, ইংলিশ ক্লাব ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি ও ইতালির ক্লাব জুভেন্টাস ঘুরে এক দশক পর তিনি তার সেই বাল্যকালের ক্লাবে ফেরেন এ মওসুমের শুরুতে। আর বাল্যকালের ক্লাবে ফিরেই দলের নেতৃত্ব পান তিনি। ইউরোপের চেয়ে আর্জেন্টিনার লীগ বেশ আগে শুরু হয়। ৩০ দলের লীগে আর মাত্র একটি করে খেলা বাকি আছে। কিন্তু এক ম্যাচ হাতে রেখেই এবারের শিরোপা নিশ্চিত করেছে কার্লোস তেভেজের বোকা জুনিয়র্স। ২৯তম ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হারিয়েছে টাইগারকে। দলের হয়ে এদিন একমাত্র গোলটি করেন ফ্যাবিয়ান মনজোন ৪৩ মিনিটে। আর্জেন্টিনার লীগে নিজেদের ৩১তম শিরোপা জিততে ওই একটি গোলই যথেষ্ঠ হয়ে যায়। আর্জেন্টিনা লীগে অবশ্য সবচেয়ে সফল দল রিভার প্লেট। তারা সর্বোচ্চ ৩৬ শিরোপা জিতেছে। শিরোপার তালিকায় তাদের পরেই আছে বোকা জুনিয়র্স। তারা সর্বশেষ ২০১১ সালে শিরোপা জিতেছিল। সেবারের পর এবারও তারা রীগের এক ম্যাচ হাতে রেখে শিরোপা নিশ্চিত করেছে। গত তিন মওসুমে লীগের শেষ ম্যাচে শিরোপা নিশ্চিত হয়। এবার ২৯ ম্যাচে ২০ জয়, ৪ ড্র ও ৫ হারে ৬৪ পয়েন্টি নিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেছে বোকা জুনিয়র্স। সমান ম্যাচে ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সান লরেঞ্জো। আর গত বারের চ্যাম্পিয়ন রিভার প্লেট এবার পয়েন্ট টেবিলের সপ্তম স্থানে আছে।