নিরাপত্তার শঙ্কা উড়িয়ে গতকালই জিম্বাবুয়ে জাতীয় ক্রিকেট দল চলে এসেছে বাংলাদেশে। ৭ই নভেম্বর টাইগারদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে মাঠে নামবে জিম্বাবুয়ে। এই সিরিজে বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বড় দলের মতো প্রভাব বিস্তার করেই খেলতে চায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেই সঙ্গে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের মধ্য দিয়ে বছরটিও বেশ ভালোভাবে শেষ করতে চান তিনি। গতকাল অনুশীলন শেষে সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশে ফিরে মাত্র ২ দিন দলের সঙ্গে অনুশীলন করতে পারিনি। আজ শুরু করলাম। বেশ ভালো লাগছে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের লক্ষ্যের কথা যদি বলেন তাহলে বলবো ডমিনেট করে খেলা। কারণ, আমরা এখন দেশের মাটিতে খেলছি। একটা সময় শুধু জয়ের লক্ষ্য থাকতো। এখন যেহেতু ওদের বিপক্ষে আমরা নিয়মিত জিতছি, তাই চ্যালেঞ্জ এবং লক্ষ্য পরিবর্তন হয়েছে। এখন আমরা বড় দলগুলো যেমন ডমিনেট করে খেলা, তেমননি ওদের বিপক্ষেই আমরা ডমিনেট করেই খেলতে চাই।’ এ মাসেই শেষের দিকে কন্যাসন্তানের পিতা হতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। নিরাপত্তার কারণে অস্ট্রেলিয়া না আসায় তিনি চলে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরের কাছে। কিন্তু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে তিনি আবারও ফিরে এসেছেন দেশে। পিতা হওয়ার আনন্দ ও উত্তেজনার পাশাপাশি এই সিরিজ নিয়েও বেশ উত্তেজনা বোধ করছেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘বাবা হওয়া নিয়ে যেমন একটা উত্তেজনা কাজ করছে তেমনি সামনে যেহেতু সিরিজ, তা নিয়েও বেশ উত্তেজনা কাজ করছে।’
দেশে ফিরতে সাহস যুগিয়েছে শিশির
সাকিব আল হাসানের প্রথম সন্তান পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখবে হয়তো আর ২০ দিনের মধ্যেই। কিন্তু তাকে জিম্বাবুয়ে সিরিজ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে হবে আরও ১৫টি দিন। এ অবস্থায় স্ত্রী শিশিরকে যুক্তরাষ্ট্রে রেখে দেশে চলে আসা অনেক সাহসিকতার বিষয়। না আসার সুযোগটাও ছিল সাকিব আল হাসানের সামনে। কিন্তু স্ত্রী শিশিরই তাকে সাহস দিয়েছেন অনুপ্রেরণা দিয়েছেন দেশে এসে সিরিজ খেলার। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘আমার দেশে আসার সিদ্ধান্তের পিছনে ওর (শিশির) ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে বড়। ওই বলেছে এখন যাও। হাতে সময় আছে, যদি সব ভালো থাকে, সিরিজটা শেষ করে এসেই আমাকে সময় দিতে পারবে।’ শুধু তাই নয়, সাকিব আল হাসানের জন্য শুধু অনাগত সন্তানই নয়, দেশের ক্রিকেটও যে অনেক বড় সেটিও অনুধাবন করতে পেরেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার পত্নী। সাকিব বলেন, ‘ও বলেছে দেশে সিরিজ হবে, তুমি এখনে বসে খেলা দেখবে, তখন তোমার মুখের যে অবস্থা হবে তা আমি দেখতে পারবো না। তারচেয়ে ভালো তুমি দেশে গিয়ে খেলে এসো। আশা করি সবকিছু ভালোভাবেই হবে।’ তবে সাকিব আল হাসান পুরো সিরিজ খেলে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছেন যথেষ্ট সন্দেহ। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘ওর সঙ্গে নিয়মিত কথা হচ্ছে। আল্লাহর রহমতে বেশ ভালো আছে। আমি এখনও চিন্তার কিছুই দেখছি না। তবে সবকিছুই পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। চেষ্টা থাকবে সিরিজের সব ম্যাচ খেলার। আর শেষ পর্যন্ত যদি তা না হয় তাহলে আমার হয়তো ২/১টা ম্যাচ খেলা নাও হতে পারে। তবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
‘এই দেশে ক্রিকেটে নিরাপত্তার কোন শঙ্কা নেই’
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আসেনি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। অক্টোবরেই তাদের বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। সফর স্থগিত হওয়ায় বিসিবিও নড়েচড়ে বসে। আমন্ত্রণ জানায় জিম্বাবুয়েকে। সেই আমন্ত্রণে গতকালই বাংলাদেশে চলে এসেছে জিম্বাবুয়ে। এ বিষয়ে সাকিব বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের আসা আমাদের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক দিক। আমি জিম্বাবুয়েকে ধন্যবাদ জানাই ওরা এভাবে আমাদের সাহায্য করেছে। আমি কোনদিনও মনে করি না বাংলাদেশের ক্রিকেটে নিরাপত্তা নিয়ে কোন ধরনের শঙ্কা আছে বা ছিল।’ জিম্বাবুয়ে এলেও এখন পর্যন্ত অনেক দেশেরই বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ শঙ্কা আছে। এ বিষয়ে ক্রিকেট বিশ্বকে একটি বার্তাও দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তিনি বলেন, ‘এটি সত্যি যে বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পূর্ণ নিরাপদ। আমি মনে করি না এই দেশের ক্রিকেটে এমন কোন ঘটনা ঘটতে পারে বা ঘটবে।’