কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) থেকে সুবল চন্দ্র দাস ঃ অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে গোটা হাওর অঞ্চলে চলছে ভাটার টান। ফলে হাওরে পানি কমতে শুরু করেছে এখন। পানি নেমে ভাঙছে হাওর। ভাঙছে হাওরের পাড়া, মহল্লা, জনপদ। বিশেষ করে কিশোরগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওর এলাকার পানি নেমে যাওয়ায় বর্তমানে গ্রামগুলোতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ বছর পাহাড়ি ঢল ও বন্যার কারণে অন্য যে কোনো বছরের তুলনায় এবার হাওর পানিতে টইটম্বুর ছিল। সেই পানি এখন প্রতিদিনই একটু একটু করে কমছে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে বাঁশ ও জলজ উদ্ভিদ দিয়ে তৈরি প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙছে। সেই সঙ্গে গাইলের ওপর দাঁড়ানো শত শত ঘরবাড়ি ভেঙে যাচ্ছে। ফলে নতুন করে দরিদ্র হাওরবাসী বিপাকে পড়ছে। কিশোরগঞ্জের গভীর হাওর উপজেলার ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন ও নিকলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভরা বর্ষায় তৈরি প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে মাটি সরে যাচ্ছে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছর এমন অবস্থার সৃষ্টি হলেও এ বছর ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ইটনা উপজেলার পশ্চিম শিমুলবাগ-নয়াপাড়া, ইমামপাড়া, নয়া হাজারিবাগ, নয়াবাড়ি, আনন্দপাড়া, জেলেপাড়া, ঋষিপাড়া, মতিরহাটি, বাউলেরপোতা, বাজারহাটি, নন্দীহাটি, মিঠামইন উপজেলার আটপাশা, খাটখাল, হাশিমপুর, সাহেবনগর, হোসেনপুর, বিশুরীকোনা, কার্তিরখলা, চমকপুর, বগাদিয়া, হাতখুবলা, ঘাগড়া, কেওয়ারজোর, গোপদীঘি, ঢাকী, কাঞ্চনপুর, নিকলী উপজেলার ছাতিরচর, শহরমুল ইত্যাদি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে মাটি সরে গিয়ে ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ছে। ইটনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসান জানান, হাওরে ভরা বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সময় অনেকেরই বাড়িঘর ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বছর বন্যার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় এবং হঠাৎ পানি নামতে শুরু করায় গ্রামের প্রতিরক্ষা প্রাচীরে ভাঙন তীব্রতর হয়েছে। এ কারণে প্রায় প্রতিটি গ্রামেই দরিদ্র পরিবারগুলোকে আর্থিক দৈন্যতায় পড়তে হচ্ছে। হাওর গবেষক ও হাওর ভূমিপুত্র হিসেবে খ্যাত প্রকৌশলী নিয়াজ উদ্দিন পাশা জানান, পানি নামার সময় প্রতি বছরই মাটি সরে গিয়ে গ্রামগুলো ছোট হয়ে আসছে। অনেকেই ঘরবাড়ি হারায়। এ বছর ভাঙন অনেক বেশি। তিনি পানি নামার পর শুষ্ক মৌসুমে টিআর কাবিখার আওতায় মাটি ভরাট করে গ্রামগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার দাবি জানান। অন্যথায় ক্রমান্বয়ে একদিন হাওরের গ্রামগুলো ছোট হয়ে পড়বে, সেই সঙ্গে মানুষের সংখ্যাও কমে যাবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
৩ নভেম্বর কিশোরগঞ্জবাসীর বেদনার দিন
কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) থেকে সুবল চন্দ্র দাস ঃ ৩ নভেম্বর গোলাপ ঝড়ে পড়ার দিন। কিশোরগঞ্জবাসীর দুঃসহ বেদনার দিন। যে গোলাপের সৌরভে বাঙালি জাতি তথা কিশোরগঞ্জবাসী মহান মুক্তিযুদ্ধের টালমাটাল দিনগুলোতে আমোদিত হয়েছিল। সাহসে বুক বেঁধে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঝড়ে পড়লেন সেই গোলাপ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় অন্য তিন জাতীয় নেতা তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বীর দামপাড়া গ্রামে গোলাপ মিয়া হিসেবে পরিচিত সৈয়দ নজরুল ইসলামকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ দিনটি উপলক্ষে সৈয়দ নজরুল ইসলামের বীর দামপাড়া গ্রামের বাড়িতে, জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল ও কাঙালিভোজের আয়োজন করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল ইউনিয়নের ছায়া সুনিবিড় নিভৃত পল্লী বীর দামপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯২৫ সালে সৈয়দ নজরুল ইসলামের জন্ম হয়। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুর রইস এবং মাতার নাম বেগম নুরুন্নাহার খাতুন। তিন ভাইবোনের মধ্যে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন মধ্যম। ছেলেবেলায় তার নাম ছিল গোলাপ। গ্রামের বাড়িতেই তার বাল্য শিক্ষা শুরু হয়। সরকারি চাকুরে তার বাবা আবদুর রইস এলাকাবাসীর কাছে সাহেব বাড়ির রইস মিয়া নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। সৈয়দ নজরুল ইসলাম ময়মনসিংহ জিলা স্কুল এবং আনন্দমোহন কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রবেশিকা ও আইএ পরীক্ষায় পাস করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে প্রথম শ্রেণিতে এমএ এবং ১৯৫৩ সালে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। তার সহধর্মিণীর নাম নাফিসা ইসলাম। ডাক নাম অহিদন। ১৯৪৯ সালে তিনি পাকিস্তান সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে কর বিভাগে অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। দুই বছর পর তিনি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। কিছুদিন পর এ পেশাও ছেড়ে তিনি আইন ব্যবসায় এবং রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন। ১৯৪৩-১৯৪৭ সালে সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদের ভিপিও ছিলেন তিনি। ভাষা আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ১৯৬৪ সালে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত এ পদে সমাসীন ছিলেন। বাঙালির মুক্তি সনদ ছয় দফা প্রণীত হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমানকে বার বার কারারুদ্ধ করে রাখা হয়। ওই সংকটময় সময়ে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে (১৯৬৬-১৯৬৯) গুরুদায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পর সৈয়দ নজরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের উপনেতাও নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে গেলে গোটা জাতি এক ভয়াবহ সংকটে নিপতিত হয়। শুরু হয় গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল কুষ্টিয়ার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলায় গঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি আর সৈয়দ নজরুল ইসলামকে করা হয় ওই সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি।
পাকুন্দিয়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিস দুর্নীতির আখড়া
কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) থেকে সুবল চন্দ্র দাস ঃ পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসটি ঘুষ, দুর্নীতি আর হয়রানির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। অফিসে নানা অজুহাতে সাধারণ শিক্ষকদের জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে সাধারণ শিক্ষক, অভিভাবক ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়, টাইম স্কেল, এরিয়া বিল, উৎসব ভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, ভবিষ্যৎ তহবিল, উচ্চতর ডিগ্রি, বকেয়া বিল উত্তোলন ও চিকিৎসাসহ নানা ধরনের ছুটি, বদলি, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত উন্নয়ন কাজের অর্থ পেতে ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে হয় না। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির মাল ক্রয়, স্লিপ কমিটি প্রাপ্ত বরাদ্দ হতে শিক্ষকদের বেতন ও বিলসহ সব ক্ষেত্র থেকেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী। এসব ক্ষেত্রে ভাগ বসানো যেন তাদের প্রাপ্য হয়ে গেছে। এদিকে শিক্ষকদের অনেকের টাইম স্কেল দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁলিয়ে রেখে হয়রানি করা হচ্ছে। শিক্ষক প্রতি নির্ধারিত উৎকোচ না দিলে নানা অজুহাতে ফাইল বন্দি করে সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নতুন জাতীয়করণকৃত রেজিস্টার্ড ও কমিউনিটি বিদ্যালয়সহ যে কোনো বিদ্যালয়ে বকেয়া বেতনের বিল পাস করতে প্রাপ্ত টাকার ২০ ভাগ অফিসকে দিতে হয়। এছাড়া এসব শিক্ষকের টাইম স্কেলের জন্য ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা, এরিয়া বিলের জন্য ১শ টাকা, উৎসব ভাতার জন্য ৩শ থেকে ৫শ টাকা, মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য ১ হাজার টাকা, ভবিষ্যৎ তহবিলের জন্য ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা, উচ্চতর ডিগ্রির জন্য ১ হাজার টাকা, বদলির জন্য ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, বরাদ্দকৃত উন্নয়ন কাজের অর্থ পেতে ১৫শ টাকা, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির মালামাল ক্রয় করতে ৫শ টাকা, স্লিপ কমিটি প্রাপ্ত বরাদ্দ হতে ১ হাজার থেকে ১৫শ টাকা, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত উন্নীত স্কেল পেতে ৫শ টাকা করে প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ঘুষ নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এহেন অপকর্মের জন্য সাধারণ শিক্ষকরা ভয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে পারছেন না। শিক্ষা অফিস দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন এমন আশংকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে শতাধিক সহকারী শিক্ষক ক্ষুব্ধ কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, আমাদের শিক্ষা অফিসে ঘুষ ছাড়া কিছুই হয় না। সার্ভিস বুক খোলার দিন থেকে ঘুষ নেয়া শুরু হয় এবং চাকরি থেকে অবসর নেয়ার দিন পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। তারা আরও বলেন, লাগামহীনভাবে ঘুষ-বাণিজ্য চলছে আমাদের এ অফিসে। শিক্ষকরা জানান, উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুর রশিদের যোগসাজশে টাকা নিচ্ছেন অফিস সহকারী আবদুল হক। এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুর রশিদ ও অফিস সহকারী আবদুল হকের সঙ্গে সোমবার দুপুরে যোগাযোগ করা হলে তারা আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা শিক্ষকদের ফাইল জিম্মি করে কোনো টাকা নিচ্ছেন না।
মরে যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ
কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) থেকে সুবল চন্দ্র দাস ঃ সময়মতো ড্রেজিং না করায় পলি পড়ে স্থানে স্থানে বিশাল চর জেগে মরে যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদ। এ ব্রহ্মপুত্র নদ কিশোরগঞ্জ তথা বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর ও শেরপুর জেলার নদ-নদীর মধ্যে অন্যতম। এ নদের তীরে তীরে গড়ে উঠেছিল এ পাঁচটি জেলার নগর-বন্দর ও শিল্প সভ্যতা। এ নদের বুকে প্রতিদিন সওদাগরদের নৌকার পাশাপাশি ভাসত যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা রক্ষায় নিয়োজিত হাজার-হাজার নৌকা, কার্গো ও লঞ্চ। এ নদের কারণে এ অঞ্চলটিতে শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই তেজোদ্দীপ্ত স্রোতধারা ব্রহ্মপুত্রের সেইদিন এখন আর নেই। বৈরী প্রকৃতি ও মানুষের বৈরী আচরণে এখন তার অবস্থা মুমূর্ষু। এক সময়ের আশীর্বাদ ব্রহ্মপুত্র নদ এখন এ অঞ্চলের মানুষের দুঃখ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পরিবেশবিদদের মতে, আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করে উজানে ভারত ফারাক্কা বাঁধ দেয়ার কারণে ভয়াবহ প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের নদ-নদীতে। এ ভয়াবহ প্রভাবে একের পর এক মরে যাচ্ছে এদেশের প্রমত্তা সব নদ-নদী। মানুষের বৈরী আচরণের শিকার হয়ে হাজারও নদীর দেশ বাংলাদেশে চলছে এখন মরুপ্রক্রিয়া। সূত্রমতে, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এক সময় ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। দেশের উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ প্রান্তর এখনই মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। একই কারণে সেই প্রমত্তা ব্রহ্মপুত্র তার যৌবন হারিয়ে এখনও কোনক্রমে বয়ে চলেছে। এর বুকে জেগে উঠেছে এখন বিশাল বিশাল চর। এক শ্রেণির অপরিণামদর্শী লোকজন ব্রহ্মপুত্র নদ দখল করে গড়ে তুলছে বাণিজ্যিক-আসাবিক স্থাপনা। তৈরি করছে ব্যক্তিগত পুকুর-ফিশারি কিংবা ফসলের জমির ক্ষেত। একদিকে ব্রহ্মপুত্রের পাড় দখলের মহোৎসব এবং অপরদিকে বিশাল-বিশাল চর জেগে ওঠার পরও প্রয়োজনীয় ড্রেজিং ব্যবস্থা না থাকার কারণে বর্ষায় এর পানি দুকূল উপচে বন্যার সৃষ্টি করে। বর্তমানে বিপুল পরিমাণ পলি জমার কারণে কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর ও শেরপুর জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত এ নদের স্থানে স্থানে অসংখ্য চর জেগে উঠেছে। চর জেগে দিনে-দিনে ভরাট হয়ে যাচ্ছে এ নদের গতিপথ। সময়মতো প্রয়োজনীয় ড্রেজিং ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারায় এ নদটি দিনে-দিনে মরে যাচ্ছে। একই কারণে অস্থিত্বহীন হয়ে পড়ছে এ পাঁচটি জেলায় অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নদের অসংখ্য শাখা নদ-নদী। জরুরি ভিত্তিতে উপযুক্ত ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে একদিকে দ্রুত গতিপথ হারিয়ে এ নদটিও অস্থিত্বহীন হয়ে পড়বে।
সুবল চন্দ্র দাস
কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ
তারিখ-৩/১১/১৫ ইং
মোবা ঃ ০১৭১১-১১৮৮৯৬