টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা। দলীয় ২ রানের সময় লিটন কুমার দাস ও ৩০ রানের সময় মাহমুদল্লাহ রিয়াদকে আউট করে অধিনায়কের সিদ্ধান্ত যথার্থতা প্রমাণ করে জিম্বাবুয়ের বোলাররা। কিন্তু তামিম ইকবাল ও মুশফিক দলের হাল ধরলে বদলে যেতে শুরু করে পরিস্থিতি। বিশেষ করে সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে। মুশফিকের চতুর্থ সেঞ্চুরি আর সাব্বির রহমানের ফিফটিতে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় স্বাগতিকরা। শেষদিকে সানি, মাশরাফির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে যোগ হয় ২৭৩ রান। এটি জিম্বাবুুয়ের বিপক্ষে টাইগারদের ৫ম সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এ সংগ্রহেই ১৪৫ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। ১০৭ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হন মুশফিক। বিশ্বকাপটা দারুণ গেছে মুশফিকের। ভালো গেছে বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটাও। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি থেকে হুট করেই পথ হারালেন। উইকেটের সামনে-পেছনে দুই জায়গাতেই যেন অনুপস্থিত সেই মুশফিকুর রহিম। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে অবশ্য ৬৫ রান করেছিলেন, কিন্তু তার আগের ১৪টি ইনিংসে কোন ফিফটি নই। নিজেকে ফিরে পেতেই বিসিবি একাদশের হয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছেন সাবেক এই ওয়ানডে অধিনায়ক। ফতুল্লার ওই ম্যাচে ৮১ রানের অপরাজিত এক ইনিংসই টনিক হিসেবে কাজ করেছে মুশফিকের। এরপর গতকাল আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নামলেন। সাদা বদলে রঙিন পোশাকে মুশফিক যেন আরও ঝলমলে। এবার সেঞ্চুরি! মুশফিকের ১০৭, সাব্বিরের ৫৭, ও তামিম ইকবালের ৪০ রানে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সংগ্রহটা দাঁড়িয়েছে ৯ উইকেটে ২৭৩। মুশফিক যখন উইকেটে এসেছিলেন তখন ৩০ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ বেশ বিপাকেই। লিটন দাস ও
মাহমুদউল্লাহ দ্রুতই ফিরে গেছেন, স্কোরবোর্ডেও তেমন রান নেই। তামিমের সঙ্গে দলের ইনিংসটা মেরামতের কাজ করলেন মুশফিক। ২৪ ওভারেই দলের রানটাও ১০০ পার করিয়ে নিলেন তারা। জুটিটাও হলো মোটামুটি ভালোই ৭০ রানের। মাত্র ২৭ বল আর ২৩ রানের মধ্যে আরও দু’টি ধাক্কা। তামিমের পর অল্প রানেই ফিরে গেলেন সাকিব আল হাসান। এরপর গোটা দলের দায়িত্বটা যেন নিজের কাঁধেই তুলে নিলেন। যোগ্য সঙ্গ দিলেন অবশ্য সাব্বির রহমান। মুশফিক-সাব্বিরের জুটি থেকে এলো ১১৯ রান। এই দু’জনের দারুণ ব্যাটিং স্বপ্ন দেখাচ্ছিল আরও বড় কিছুরই। কিন্তু ৫৮ বলে ৫৭ রান করে সাব্বির রানআউট হয়ে গেলেন। নিজের চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরিটি পূরণ করে ১০৭ রানে ফিরলেন মুশফিকও। ওয়ানডেতে এটি মুশফিকের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। চলতি বছর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সেঞ্চুরি পেলেন তিনি। এর আগে গত এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০৬ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। শুধু তাই নয় তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরিটি এসেছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই। সাব্বির মুশফিকের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি চলতি বছর খুব একটা ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পাওয়া নাসির হোসেন। এগিয়ে এসে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে মুজারাবানির বলে চামু চিবাবার হাতে ধরা পড়েন তিনি। মাত্র ৫ বলের মধ্যে এই দু’জনের সঙ্গে নাসিরও ফিরে গেলেন। বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখতে থাকা দল যেন আবারও পথ হারানো পথিক। কিন্তু শেষ দিকে আরাফাত সানি ও মাশরাফি হাত চালিয়ে দলের সংগ্রহ ২৭০ পার করালেন। সানির ব্যাট থেকে আসে ১৫। মাশরাফি করেন ১৪। জিম্বাবুয়ের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সিকান্দার রাজা ও তুরাই মুজারাবানি। পানিয়াঙ্গারা ও ডঙ্গুয়ে ঝুলিতে গেছে একটি করে।