বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান বার্নার্ডিনোতে তাশফিন মালিক (২৯) ও তার স্বামী সৈয়দ রিজওয়ান ফারুক (২৮) ভারী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এতে ১৪ জন নিহত হন। পরে পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময়ের সময় তারাও নিহত হয়। একে সন্ত্রাসবাদী হামলা হিসেবেই ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। কী কারণে নিজেদের ৬ মাস বয়সী কন্যা সন্তানকে দাদির কাছে রেখে এ দম্পতি সহকর্মীদের ওপর হামলা চালাতে গেল? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে গোয়েন্দারা। তবে বৃটেনের দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকা তাশফিন মালিক সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন ছেপেছে। শুক্রবার এফবিআই বলেছে, এ হামলার ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা হিসেবে ধরে নিয়েই তদন্ত শুরু করা হচ্ছে। কেননা, নিজের ফেসবুক পাতায় তাশফিন জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস’র প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেছিল। তবে সংস্থাটি স্বীকার করেছে, তার সম্পর্কে খুব কমই জানা আছে তাদের। এটা পরিষ্কার নয় কখন এ নারী চরমপন্থী হয়ে উঠে। কিংবা কে-ই বা তাকে চরমপন্থায় দীক্ষা দিয়েছিল। এফবিআই কর্মকর্তারা অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাশফিন ও তার স্বামী রিজওয়ান ফারুক সম্ভবত নিজেরা নিজেরাই চরমপন্থী হয়ে উঠেছে। হামলার পর পর এ দম্পতির ঘরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, বারুদ, পাইপ-বোমা উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, তারা হয়তো আরও হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল।
খবরে প্রকাশিত হয়েছিল, অল্প বয়সেই পাকিস্তান থেকে নিজের পিতার সঙ্গে সৌদি আরবে পাড়ি জমায় তাশফিন। সেখানেই ২০০৭ সাল পর্যন্ত বসবাস ছিল তার। এরপর পুনরায় পাকিস্তানে গিয়ে বাহাউদ্দিন যাকারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি স্কুলে পড়াশুনা করে সে। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, তাশফিন ছিল ভালো শিক্ষার্থী। তার মধ্যে কোন ধর্মীয় উগ্রবাদী প্রবণতাও ছিল না। তবে পরে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়ে ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজ করেনি সে। ২০১৩ সালে মক্কায় হজ পালন করতে গেলে ফারুকের সঙ্গে তার পরিচয় হয় বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। এর কিছুদিন পরই তারা বিয়ে করে। মার্কিন নাগরিক ফারুকের স্ত্রী হিসেবে কে-১ ভিসায় সে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানান, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে সে আবারও পাকিস্তানে যায়। কিন্তু সেখানে কার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছে, বা কোথায় কোথায় সে গিয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। স্থানীয় মসজিদের নেতারা বলছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে তাশফিনকে কেউ খুব বেশি চেনে না। স্থানীয় পুলিশ বা এফবিআই কেউই তাদের দু’ জনের একজনকেও চিনতো না।