বাংলাদেশের পাট রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চায় ভারত ও পাকিস্তান। বিশেষ করে ভারতে কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ নিয়ে বুধবার বাংলাদেশের উপ হাই কমিশনার জকি আহাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ভারতের পাট শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা। এতে নেতৃত্ব দেন ইন্ডিয়ান জুট মিলস এসোসিয়েশনের (আইজেএমএ) চেয়ারম্যান মানিশ পোদ্দার। ওদিকে পাকিস্তানে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পাট রপ্তানি বন্ধ রাখার বাংলাদেশী সিদ্ধান্তে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে পাকিস্তান জুট মিলস এসোসিয়েশনে (পিজেএমএ)। এই অচলাবস্থা কাটাতে পাকিস্তান সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছে পিজেএমএ। একই সঙ্গে তারা বলেছে, এরই মধ্যে স্থানীয় মিলগুলোর জন্য পরিশোধ করা চালানের পাটগুলো অন্তত যেতে দেয়া হোক। এ বিষয়ে পিজেএমএ একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পাটের সবচেয়ে বড় আমদানিকারকদের মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম। এ খবর দিয়েছে ভারতের পত্রিকা দ্য হিন্দু ও পাকিস্তানের পত্রিকা দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল। ভারতের আইজেএমএ বলেছে, ২রা ডিসেম্বর এক আদেশে পাট রপ্তানি বন্ধ করেছে বাংলাদেশ। বন্ধুপ্রতীম এ দু’ প্রতিবেশী, যারা সার্কের সদস্যও, তাদের মধ্যে বাণিজ্যিক স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। তারা আরও বলেছে, সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞার এক মাস আগে কাঁচা পাট রপ্তানি নিয়ে ভারতীয় ও বাংলাদেশী ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে তাও বন্ধ হয়ে রয়েছে। এ চুক্তির আওতায় রয়েছে ৫০ হাজার কাঁচা পাট। এ বিষয়ে পাকিস্তানের মতো ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছে আইজেএমএ। তারা এ জন্য কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে তাদের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রতিনিধির মাধ্যমে অনুরোধ করেছে। এ বিষয়টি নয়া দিল্লিতে এক বৈঠকেও উত্থাপিত হয়েছে। তাতে পাট শিল্পের সঙ্কট ফুটিয়ে তেলা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, কৃত্রিমভাবে পাট মজুদ করার কারণে স্বর্ণালী এই আঁশের দাম শতকরা ৩০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে সেখানকার জুট কমিশন কোথায় কোথায় মজুদ আছে তা দেখছে এবং পাটের মজুদ একটি সীমিত পর্যায়ের মধ্যে রাখার নিয়ম করছে। নয়া দিল্লির বৈঠকে গত সপ্তায় নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রী সন্তোশ গাঙ্গোয়ার। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাংলাদেশকে কাঁচা পাট রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যেন পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এমন অনুরোধ জানানো হবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমান সঙ্কটের কারণে পশ্চিমবঙ্গে শতকরা ২০ ভাগেরও বেশি পাটকল বন্ধ রয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ৫০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক। এ বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে মঙ্গলবারের বৈঠকে তোলার কথা। তবে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা তা জানা যায় নি। ওদিকে পাকিস্তানের পিজেএমএ বলেছে, এ সঙ্কটে তাদের পাটশিল্পও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এক্ষেত্রে পাট সরবরাহে যেকোন বাধা এলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে থমকে দাঁড়াবে এবং হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। পাটের ওপর নির্ভরশীল সব খাত, এমনকি প্রাদেশিক খাদ্য বিভাগগুলো ছালা সঙ্কটে পড়েছে।