নিরাপত্তার শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে কাল থেকে শুরু হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের মাঠের লড়াই। প্রথম দিনই চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা দল। একই দিন চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড মুখোমুখি হবে ফিজির। অস্ট্রেলিয়া দল নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বিশ্বকাপ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিন্তু আইসিসি বাংলাদেশের নিরাপত্তায় আস্থা রেখেছে। তাই অস্ট্রেলিয়ার পরিবর্তে খেলবে আয়ারল্যান্ড যুবদল। এরই মধ্যে আইসিসি বাংলাদেশের কাছ থেকে সবকটি ভেন্যু বুঝে নিয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, ও নারায়ণগঞ্জের ৭টি ম্যাচে ১৯ দিনের এ টুর্নামেন্টে ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ১৪ই ফেব্রুয়ারি। ভেন্যু ও নিরাপত্তা নিয়ে বিসিবির পরিচালক ও গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান হানিফ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকটি ভেন্যু এখন প্রস্তুত। ভেন্যুগুলোতে খেলার সব ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করার পর আমরা তা আইসিসির কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। আর নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও বিসিবির পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তাই করা হয়েছে। আমি বলতে পারি আমরা কাল থেকে অনুষ্ঠেয় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ আয়োজনের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। আমি মনে করি না, এই আয়োজন আমাদের জন্য নতুন। তাই বিশ্বাস করি, বিসিবি ভালোভাবেই আসর সম্পন্ন করতে পারবে।’
এর আগে ২০০৪ সালে বাংলাদেশ প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল। এবার দ্বিতীয় বারের মতো এই বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এবার মোট ১৬টি দল অংশ নিচ্ছে। এরই মধ্যে সবগুলো দলই চলে এসেছে। শুরু করেছে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলাও। বাংলাদেশ দল মেহেদি হাসান মিরাজের নেতৃত্বে এরই মধ্যে জিম্বাবুয়ে ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বড় জয় তুলে নিয়েছে। গত দেড় বছর ধরে বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে যুব টাইগাররা। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের পর প্রথম শ্রীলঙ্কাকে ৫ ম্যাচের সিরিজে ৩-২ ম্যাচে হারায় বাংলাদেশের যুবারা। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দেশের মাটিতে ৬-১ ও তাদের মাটিতে ৫-২ ম্যাচে জয় তুলে নেয়। এ ছাড়াও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪-০ এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজ যুব দলের বিপক্ষেও ৩-০তে জয় পায় টাইগার যুবারা। সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় চান দলের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশ দল ৩১শে জানুয়ারি কক্সবাজার শেখ কামাল স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্কটল্যান্ডের ও ২রা ফেব্রুয়ারি একই মাঠে নামিবিয়ার মুখোমুখি হবে। তবে গ্রুপপর্বে সবগুলোই ম্যাচ জিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেতে হবে টাইগারদের। তাই প্রতিটি ম্যাচেই জয়ের বিকল্প ভাবা কঠিন।
১৯৯৮ সালের পর থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা অর্জন ২০০৬ সালে। সেই আসরে বাংলাদেশ ৫ম হয়েছিল। এরপর ২০০৮ এবং ২০১২ বিশ্বকাপে প্রথম পর্বের বাধা পেরিয়ে খেলেছে কাপ পর্বে (সুপার লীগ)। ১৯৯৮, ২০০৪ এবং ২০১০’র পর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরে (২০১৪) প্লেটের ট্রফি জিতে ফিরেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ আসরের কষ্টটা ভুলে যেতে করণীয় উপায় নির্ধারণ করেছেন মিরাজ- ‘গত বিশ্বকাপে একটা ম্যাচ হেরে যাওয়ায় অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। আমরা কাপে যেতে পারিনি। গত বিশ্বকাপে আমরা যে ভুল করেছি, দেশের মাটিতে আমরা সেই একই ভুল যেন না করি।’
ঢাকা মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম, নারায়ণগঞ্জ খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ ও এম এ আজিজ স্টেডিয়াম, কক্সবাজার শেখ কামাল স্টেডিয়াম ও সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও জেলা স্টেডিয়ামে খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে। খেলাগুলো শুরু হবে সকাল ৯টায়।
আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের গ্রুপ
গ্রুপ- ‘এ’ বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়া।
গ্রুপ- ‘বি’ শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও কানাডা।
গ্রুপ- ‘সি’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও ফিজি।
গ্রুপ- ‘ডি’ অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও নেপাল।
গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের ম্যাচের সূচি
২৭শে জানুয়ারি ২০১৬ বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা চট্টগ্রাম
৩১শে জানুয়ারি ২০১৬ বাংলাদেশ-স্কটল্যান্ড কক্সবাজার
২রা ফেব্রুয়ারি ২০১৬ বাংলাদেশ-নামিবিয়া কক্সবাজার