বগুড়ার শেরপুরে বোমা বিস্ফোরণে নিহত তরিকুল ইসলাম জেএমবির সদস্য। তার গ্রামের বাড়ি শিয়ালকোল ইউনিয়নের জামুয়া গ্রামে। দুদিন আগে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন তিনি। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ওই মৃত্যুসংবাদ তখনও ওই গ্রামে পৌঁছেনি। তরিকুলের বৃদ্ধ পিতার নাম মাওলানা আবু বক্কার সিদ্দিক। তিনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। সাংবাদিক আগমনে প্রথমবারের মতো তরিকুলের মৃত্যুসংবাদ শুনে পিতার পাশাপাশি গ্রামের লোকজনও শোকাহত হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর তরিকুলের বাবা আবু বক্কার সিদ্দিক মানবজমিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মিলিত হন। তিনি ২০০২ সালের পর ছেলের পরিচিত রাজশাহীর বাগমারার মানিকসহ দুজন আমার বাড়িতে জাইগির থাকতে আসে। দুই বছর এখানে থেকে তারা পার্শ¦বর্তী পাইকোশার একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করতো। এ সময়ের মধ্যে মাওলানা শাইখ আবদুর রহমান একাধিকবার এ বাড়িতে এসে তাদের সঙ্গে রাত্রীযাপন করেছে। কিন্তু সে যে জঙ্গি সংগঠনের নেতা বা এর সঙ্গে জড়িত তা জানতাম না। ২০০৫ সালের ১৭ই আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জ আদালত চত্বরে বোমা হামলার ঘটনার পরই ছেলে তরিকুলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ অবস্থায় ৩ মাস আগেও পুলিশ আমাদের পরিবারের সবাইকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে তরিকুল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সর্বশেষ গত সোমবার দুপুরে পুলিশ ৩ ছেলে, ১ মেয়ে, ছেলের বউসহ আমাকে পুলিশ সুপার অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু ছেলে তরিকুল যে মারা গেছে তা আমাদের বলেনি। এমনকি ৩ ছেলে ও ১ মেয়েকে বগুড়ায় নেয়া হলেও কারণ বলেনি পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত তরিকুল ইসলামের লাশ বগুড়া থেকে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেনি। নিহত তরিকুল ইসলামের ৩ ভাই ইসলামী ব্যাংক উল্লাপাড়া শাখার সিনিয়র অফিসার সানাউল্লাহ, স্থানীয় জামুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিয়াকত আলী, কৃষক বরকত উল্লাহ ও বোন শাকেরা খাতুন তরিকুল ইসলামের লাশ শনাক্ত করার পর সেখানেই পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এ বিষয়ে সন্ধ্যা ৭টায় বগুড়া ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, নিহত তরিকুল ইসলামের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। রাতেই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। লাশ শনাক্ত করার জন্য যে চারজনকে আনা হয়েছিল, তাদেরও লাশের সঙ্গেই পাঠিয়ে দেয়া হবে। তরিকুলের সহযোগী অপর নিহত ব্যক্তির পরিচয় না পাওয়ায় তার লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। বোমা বিস্ফোরণে দুজন নিহত, গ্রেনেড ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় শেরপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।