সাদিয়া আফরোজ ,স্বদেশনিউজ২৪ঃ
যদিও সেখানে তরমুজ থাকার কোন সম্ভাবনা নেই তথাপি এই বরফের নাম দেওয়া হয়েছে ওয়াটারমেলন স্নো। আর এই গোলাপি বরফ নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ বরফ কী করে এমন গোলাপি হয়ে উঠল? বিজ্ঞানীরা বলছেন আসলে বরফ রঙ পাল্টায়নি৷ বরফের উপর জন্ম নেওয়া লালাভ রঙের এক অ্যালগির কারণেই এই রঙ বদল৷ বিশেষ ধরনের এই শৈবাল হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রাতেও জন্ম নিতে পারে৷ সূর্যরশ্মি শোষণের পরই স্বাভাবিক সবুজ এই শৈবাল থেকেই এক ধরনের প্রাকৃতিক ‘সানস্ক্রিন’-এর তৈরি হয়, যা গোলাপি আভায় আছন্ন করে রেখেছে৷
কেন এই শৈবালের কারণে চিন্তিত বিজ্ঞানীরা? বিজ্ঞানের খুব সহজ সূত্র বলছে, এর ফলে বরফ গলার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে অনেক গুণ৷ ধরা যাক, গ্রীষ্মে সাদা জামার পরিবর্তে কেউ কালো জামা পরেছেন, তাতে তাঁর গরম বেশি লাগে, কেননা কালো জামা তাপ শোষণ ক্ষমতা বেশি৷ ঠিক একইভাবে এখানেও, গোলাপি শৈবালের তাপ শোষণের ফলে বরফ গলার সম্ভাবনা বাড়ছে৷
বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে বরফ গলা এমনিতেই বিজ্ঞানীদের মাথাব্যথার কারণ, তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এই শৈবাল৷ যত বরফ গলবে তত বংশবিস্তার করবে এই শৈবাল৷ ফলে গুণিতক হারে বরফ গলতেই থাকবে৷ মেরুপ্রদেশ থেকে অন্যান্য বরফ ঢাকা অঞ্চলে এখন অল্প পরিমাণেই দেখা গিয়েছে এই ‘ওয়াটারমেলন স্নো’৷ তবে ছোট্ট কারণ যে বড় বিপর্যয় হয়ে দেখা দিতে পারে তা আঁচ করেই চিন্তিত বিজ্ঞানীরা৷
ইতিমধ্যেই এ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন জার্মান রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানী স্টিফেন লুতজ৷ শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যোসেফ কুকও নমুনা সংগ্রহ করে পুরো বিষয় খতিয়ে দেখছেন৷ গোলাপি বরফ আখেরে যে হিমবাহগুলোকেও দ্রুত গলিয়ে দিতে পারে পারে সে সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা৷ আর তাই এর আগ্রাসন রুখতে কী করা যায় তারই সন্ধানে আছেন তারা৷