নতুন স্বপ্ন নিয়ে মাঠে আকরাম-দুর্জয়রা

29757_s1১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জয়ের নায়ক ছিলেন আকরাম খান। ওই আসর শেষে বদলে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেট। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তি। বাংলাদেশের প্রথম টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নাইমুর রহমান দুর্জয়। তার হাত ধরেই শুরু টেস্টে বাঘদের স্বপ্নের যাত্রা। দীর্ঘ একটা সময় ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে  স্বপ্নের জাল বুনেছেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, খালেদ মাহমুদ সুজন, হাবিবুল বাশার সুমন, খালেদ মাসুদ পাইলটরা। তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেট  স্বপ্নময় হয়েছে। ধীরে ধীরে তারা মাঠ ছেড়েছেন। তাদের স্বপ্নের মশাল এখন মাশরাফি-সাকিব-তামিমদের হাতে। তাই বলে কি নতুন করে স্বপ্ন দেখতে পারেন না সেই ক্রিকেটাররা! পারেন। ‘মাস্টার্স ক্রিকেট কার্নিভাল (এসসিসি) ব্যানারে আকরাম-দূর্জয়রা মাঠে নামছেন ব্যাট-বল হাতে। তবে এবার ক্রিকেটকে একতাবদ্ধ কারার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সোনালি দিনের তারকারা। ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেশের যেকোনো দুর্যোগে ভূমিকা রাখার অঙ্গীকার নিয়ে আজ থেকে কক্সবাজার মাঠে গড়াচ্ছে সাবেকদের ক্রিকেট উৎসব। ৬টি দলে ভাগ হয়ে মাঠ মাতাবেন তারা। আকরাম খান বলেন, ‘আসলে আগেও যেমন মাঠে নামার জন্য উদগ্রীব থাকতাম। এখনও আছি। তখন স্বপ্ন একরকম ছিল আর এখন অন্যরকম। আমাদের উদ্দেশ্য হলো এই কার্নিভালের মাধ্যমে সব ক্রিকেটারকে এক প্লাটফর্মে আনা।’
গতকাল ঢাকা থেকে ৬টি দলে মোট ৯০ জন সাবেক ক্রিকেটার সাগরকন্যা কক্সবাজারে এসেছেন। কিন্তু এসেই পড়েছেন বৃষ্টির কবলে। গতকাল বিকালে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ৬ দলের অধিনায়ক এসে বৃষ্টি দেখে একটুও ঘাবড়ে যাননি। তাদের উৎসবের রংকে কোনো ভাবেই ফিকে করে দিতে পারবে না বৃষ্টি- এমনটাই জানান আকরাম খান। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি আমাদের থামিয়ে দিতে পারবে না। কারণ বৃষ্টি হয় তাহলে ২৫ ওভারের পরিবর্তে ১২ ওভার খেলবো, তা না পারলে ৬ ওভার খেলবো। আর তাও যদি না পারি তাহলে সবাই মিলে ফুটবল খেলবো।’ এছাড়াও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক নাইমুর রহমান দুর্জয় ক্রিকেট মাঠে দর্শকদের আসারও আহ্বান জানালেন। কারণ তাদের সময় যে পরিমাণ দর্শক হতো তা এখন আর হয় না। তিনি বলেন, ‘জানি না এখন আমাদের খেলা দেখতে মাঠে দর্শকরা আসবেন কিনা। একটা সময় ছিল যখন আকরাম ভাই, নান্নু ভাই আমরা খেলেছি মাঠে দর্শক আসতেন। বিশেষ করে আকরাম ভাইদের নামের কারণেই মাঠে অনেক দর্শক আসতেন। এই কার্নিভালের যে উদ্দেশ্য সব ক্রিকেটারকে একত্রিত করা সেই প্রাথমিক কাজটা শুরু করতে পারছি  সেটাই আমাদের বড় পাওয়া।’ এই কার্নিভালের মাধ্যমে সাবেক ক্রিকেটারদের একত্রিত করার মাধ্যমে একতাবদ্ধ হওয়ার বার্তা জানালেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটও। তিনি বলেন, ‘আগে আমরা যারা একসঙ্গে ক্রিকেট খেলেছি। এখন কর্মব্যস্ততার কারণে আমাদের বছরের পর বছর দেখা হয় না। আমি মনে করি এই কার্নিভালের মাধ্যমে সবাই আবার একতাবদ্ধ হবো। এতে আমরা হয়তো ক্রিকেটের উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রাখতে পারবো।’
অন্যদিকে খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করিয়ে দিলেন এই কার্নিভালে তাদের মহৎ একটি স্বপ্নের কথাও। তিনি বলেন, ‘কার্নিভালে যে আয় হবে তা আমরা ব্যবহার করতে চাই সেই ক্রিকেটারদের জন্য যারা টাকার জন্য চিকিৎসা করতে পারেন না। আর আজ আমরা এই কার্নিভাল করছি। কাল হয়তো থাকবো না। কিন্তু এই কার্নিভালটাকে রাখতে চাই সব সময়ের জন্য। যেন আমাদের পর যারা আছেন সাকিব-তামিম-মাশরাফি তারা এই মহৎ উদ্যোগ নিয়ে কার্নিভালটা এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’ এছাড়াও সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনও জানালেন ফের ব্যাট-বল নিয়ে মাঠে নামার উদ্দেশ্য শুধু ক্রিকেটের কল্যাণে তাদের ভূমিকা রাখার কথা।
আজ দুপুর ২টায় কক্সবাজার শেখ কামাল স্টেডিয়ামের ১ নম্বর মাঠে খালেদ মাসুদ পাইলটের নেতৃত্বে রেনেসাঁ রাজশাহীর মুখোমুখি খালেদ মাহমুদ সুজনের কনফিডেন্স ঢাকা মেট্রো। একইভাবে আকরাম খানের নেতৃত্বে ইসপাহানী চিটাগাংয়ের মুখোমুখি হবে নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের জেবি ঢাকা ডিভিশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *